স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৭ জুলাই : বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে রথযাত্রা উৎসব ঘিরে মাতল গোটা আগরতলা শহর। প্রতিবছরের মত এবারও সকলের নজরে কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল আগরতলা শহরের প্রধান দুটি রথ জগন্নাথ মন্দিরের রথযাত্রা উৎসব এবং ইসকন মন্দিরের রথযাত্রা উৎসবের দিকে। সে অনুযায়ী সকাল থেকে ভক্তরা জগন্নাথ এবং ইসকন মন্দির মুখী হতে শুরু করে। ব্যাপক জাকজমক ভাবে শুরু হয় জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব।
কিন্তু বিকাল চারটার নাগাদ আচমকা বজ্রবিদ্যুৎ সহ নামে মুষলধারে বৃষ্টি। শুরু হয় রাস্তায় ছোটাছুটি। কিন্তু এক আবেগ মুহূর্ত যেন সাক্ষী হতে পেরে কেউ কেউ নিজেকে সামলে রাখতে পারেনি। রথের দড়ি টেনে রথের সাথে রওনা হয়। এই মুহূর্তে যেন ভক্তরা আর নিজেকে বৃষ্টির জন্য রুখতে পারেনি। মুখে গান, সাথে নাচ – এক অভূতপূর্ব মুহূর্তের সাক্ষী হল আগরতলা। যা দেখে হয়তো বোঝা যায়, মোবাইল যুগে মানুষ নিজেকে পাল্টে ফেললেও, ধর্মীয় ভাবাবেগের সাথে জড়িয়ে রয়েছে তাদের আবেগ, বিশ্বাস এবং ভালোবাসা। এদিন ইসকন মন্দিরের রথ শুরু হয় রাজধানীর পূর্বাশা প্রাঙ্গন থেকে। মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা ফিতা কেটে রথের উদ্বোধন করেন। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী টিংকু রায়, সমাজসেবী রাজীব ভট্টাচার্য সহ অন্যান্যরা। এদিন মুখ্যমন্ত্রী সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি জগন্নাথের রথযাত্রা প্রসঙ্গে বলেন, লড অফ ওয়ার্ল্ড। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশ্ব দেবতা জগন্নাথের কাছে তিনি আরাধনা করেছেন। এদিকে রাজধানীর জগন্নাথ মন্দির থেকে শুরু হয় প্রাচীন রথযাত্রা। ঐতিহ্যবাহী এই রথ শুরু হয় রাজধানীর জগন্নাথ মন্দির থেকে। প্রাচীনকাল থেকে এই রথযাত্রা ভক্তদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাজার হাজার ভক্ত সকাল থেকে জগন্নাথ মন্দিরে এসে হাজির হয়।
ভগবানের দরবারে এই দিন মঙ্গল কামনা করে ভক্তরা রথের দড়িতে দেয় টান। শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে লক্ষীনারায়ণ মন্দিরে গিয়ে শেষ হয় জগন্নাথ বাড়ির রথ। এক পুরোহিত জানান, ভগবান জগন্নাথের জ্বর হয়েছিল। গতকাল তিনি নব যৌবন লাভ করেছেন। তারপর তিনি বলছেন মাসির বাড়ি যাবেন। তারপর বৃন্দাবন গুন্ডিচা মাসির বাড়িতে তিনি রওয়ানা হয়েছেন। সঙ্গে ভক্তদের নিয়ে তিনি নৃত্য করতে করতে যাবেন। এদিকে রাজধানীর আশ্রম চৌমুহনী থেকে হরে কৃষ্ণ মন্দিরের রথযাত্রা শুরু হয়। এর উদ্বোধন করেন প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য। আগরতলা শহরে প্রধান দুটি রথ ঘিরে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছে। শহরে বিভিন্ন জায়গা বসে মেলা।