Wednesday, May 28, 2025
বাড়িরাজ্যআন্দোলনের ঘোষণা দিলেন ত্রিপুরা তপশিলি জাতি সমন্বয় সমিতি

আন্দোলনের ঘোষণা দিলেন ত্রিপুরা তপশিলি জাতি সমন্বয় সমিতি

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৭ জুলাই : মানুষের মৌলিক অধিকার সহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে নামতে চলেছে ত্রিপুরা তপশিলি জাতি সমন্বয় সমিতি। রবিবার মেলারমাঠ স্থিত ডঃ বি আর আম্বেদকর ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই কথা জানান সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুধন দাস। তিনি বলেন, রবিবার ত্রিপুরা তপশিলি জাতি সমন্বয় সমিতির রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় ত্রিপুরা তপশিলি জাতি সমন্বয় সমিতির অন্তর্ভুক্ত ত্রিপুরা রাজ্য মৎস্যজীবী ইউনিয়ন, ত্রিপুরা চর্ম শিল্পী সমিতি, ত্রিপুরা হরিজন উন্নয়ন সমিতি, ত্রিপুরা সভা সুন্দর উন্নয়ন সমিতির নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন।

এদিনের সভা থেকে সম্মিলিতভাবে ত্রিপুরা তপশিলি অংশের মানুষের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এর জন্য ৫ দফা দাবি চিহ্নিত করা হয়েছে। অবিলম্বে সমস্ত সরকারি দপ্তরে সমস্ত শূন্য পদ বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে পূরণ করা, এর সাথে সংরক্ষণের নিয়ম অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ লক্ষ্য করা গেছে গত ছয় বছর যাবত বিভিন্ন দপ্তর গুলিতে শূন্যপদ পূরণ হচ্ছে না। বিশেষ করে নিয়োগ করার উদ্যোগ নেওয়া হলো পরবর্তী সময়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেওয়া হয়। যেমন টেট উত্তীর্ণ যুবক যুবতীদের নিয়োগ করা হচ্ছে না। এছাড়াও রাজ্য পুলিশে, ফায়ার সার্ভিসে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করে রাখা হয়েছে। ফলে যুবক যুবতীরা চরম হতাশাগ্রস্ত। তাদের নিয়ে প্রতারণা করছে সরকার। অপরদিকে টুয়েপ ও রেগার কাজ রাজ্যের শহর ও গ্রামগঞ্জে বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা। ফলে মানুষ আর্থিক অভাব অনটনে ভুগছে। তাই সরকারের উদ্দেশ্যে দাবী জানানো হবে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৩৪০ টাকা রেগা মজুরি করা এবং ১০০ দিনের কাজের ব্যবস্থা করার। কারণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে কাজের অভাবে মানুষের আর্থিক অভাব অনটন বেড়েছে।

 এতে মানুষের খাদ্যের অভাবে না খেয়ে মরার মত অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। দ্বিতীয়ত স্কুল বন্ধ করে দেওয়া সিদ্ধান্ত অবিলম্বে সরকারকে প্রত্যাহার করতে হবে। পূর্বের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ৯৬১ টি স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। বর্তমানে আবার জেলা ভিত্তিক স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার জন্য চেষ্টা চলছে। এতে গরিব শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মধ্যে পড়বে। তাই এর প্রতিবাদ জানিয়ে সরকারকে বাধ্য করা হবে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার জন্য। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে রাজ্যের ছেলে মেয়েদের জন্য পড়াশোনা করার সুযোগ করে দিতে স্কুলের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছিল। যার ফলে সাক্ষরতার হার রাজ্যে বেড়েছিল। এবং বিদ্যা জ্যোতি স্কুলগুলিতে পড়াশোনা করার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। যার কারণে তারা স্থানীয় স্কুল ছেড়ে প্রায় ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে স্কুলে গিয়ে ভর্তি হতে বাধ্য হচ্ছে। এতে ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবার প্রতিদিন গাড়ি ভাড়া জোগাড় করে দিতে পারছে না। এই সংকটের পরে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই স্কুল বন্ধ না করে এবং বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের নাম করে অর্থ আদায় বন্ধ করে শিক্ষার সুযোগ করে দিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগ করার জন্য। তৃতীয় দাবিটি হল স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পরিষেবার মান উন্নত করতে সরকার যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মী নিয়োগ করে। এছাড়াও পানীয় জল, রাস্তার ঘাট এবং বিভিন্ন সমস্যা নিয়েও দাবি জানানো হবে সরকারের উদ্দেশ্যে। আগামী ১২ জুলাই থেকে হবে এই আন্দোলন। এদিন সকাল ১১ টার সময় আগরতলা শহরে একটি মিছিল সংঘটিত করা হবে। তারপর সারা রাজ্যে এই আন্দোলন অনুষ্ঠিত হবে। এই আন্দোলনে সকলকে শামিল হতে আহ্বান জানান সুধন দাশ। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এদিন সংগঠনের অন্যান্য নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য

error: <b>Alert: </b>Content selection is disabled!!