স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২২ জুন : কৈলাশহর থানার অন্তর্গত জগন্নাথপুর চা বাগান এলাকার পৃথক পৃথক দুটি স্থানে শনিবার সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে বাগানের শ্রমিকরা। বাগান শ্রমিকদের অভিযোগ শুক্রবার গভীর রাতে জগন্নাথপুর চা বাগান এলাকায় ১ নং সেকশন, ৬ নং সেকশন, ১২ নং সেকশন, ও ১৩ নং সেকশনের বেশকিছু চা পাতা গাছ কেটে ফেলে দুষ্কৃতীরা।
পাশাপাশি এই চারটি সেকশনে বড় বড় গর্ত করে দেওয়া হয়। ১২ নং সেকশনের লোহার গেইটটি জেসিবি দিয়ে ভেঙ্গে দেওয়া হয়। এতে চা বাগানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। তাই এইদিন সকাল থেকে বাগান শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় কৈলাশহর থানার পুলিশ। বাগান শ্রমিকদের দাবি যতক্ষণ পর্যন্ত দুষ্কৃতিদের গ্রেপ্তার করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের সড়ক অবরোধ চলবে। পরে সিদ্ধান্ত হয় আগামী সোমবার বাগান কর্তৃপক্ষ এবং বাগান শ্রমিকদের নিয়ে মহকুমা প্রশাসনিক আধিকারিক এক বৈঠকে বসবে। সেই বৈঠকে বিস্তৃত ভাবে আলোচনা করে এই ঘটনার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মহকুমা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত বিকাল সাড়ে চারটা নাগাদ কৈলাসহর থানার ওসি-এর মাধ্যমে কৈলাসহর মহকুমার মহকুমাশাসকের কাছ থেকে এই আশ্বাস পাবার পর অবরোধকারীরা রাস্তা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। এই ঘটনায় বাগানের বিশাল ক্ষতি হয়েছে। এই ঘটনার ফলে আগামী দিনে বাগান পরিচালনার ক্ষেত্রে বিশাল অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে।
তবে একটা জিনিস পরিষ্কার যে, শাসকদলের প্রভাবশালী কোনো ব্যক্তি এই কাজটি করেছেন। ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চাইছেন না। তবে জানা গেছে শাসকদলের প্রভাবশালী এক ব্যক্তি জগন্নাথপুর চা বাগান এলাকায় সরকারিভাবে অনুষ্ঠান করার জন্য বাগান কর্তৃপক্ষের নিকট জায়গা চেয়েছিলেন। বাগান কর্তৃপক্ষ সেই মোতাবেক জগন্নাথপুর চা বাগানের ফটিকরায় যাবার রাস্তায় একটি জায়গা দিয়েছিল। তবে সেই প্রভাবশালী ব্যক্তি তাতে সন্তুষ্ট হননি। তিনি জগন্নাথপুর চা বাগানের বাজার সংলগ্ন জায়গাটিকে পছন্দ করেছিলেন। তবে জানা গেছে বর্তমান টি বোর্ডের চেয়ারম্যান কোনভাবেই চা গাছ তোলে সেই স্থানে অন্য কিছু করার জন্য রাজি নন। যার কারনে বাগান কর্তৃপক্ষ চা গাছ তোলে সেই স্থানটি সেই ব্যক্তিকে দিতে রাজি হননি। জানা গেছে তার ফলেই শুক্রবার রাতের আঁধারে সেই শাসকদলের প্রভাবশালী ব্যক্তির ইন্ধনে চা গাছগুলো উপড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে ও বিভিন্ন জায়গায় বাগানের প্রবেশ পথের রাস্তা কেটে ড্রেন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় বাগান শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা শনিবার সকাল এগারোটা থেকে চা বাগান এলাকার যে চারটি স্থানে বাগানকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে সেই চারটি স্থানে পথ অবরোধে বসেছে।