স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৭ জুন : ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার আগে ভোট বয়কটের ডাক দিলো গ্রামবাসী। রীতিমতো দুই গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়ে প্রকাশ্যে বৈঠক করে জেলাশাসক এবং মহকুমা শাসককে চিঠি দিয়ে সংবাদ মাধ্যমকে এ বিষয়ে অবগত করেন। ঘটনা কৈলাসহরের গৌরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক নং ওয়ার্ড এলাকায়। অভিযোগ, কৈলাসহরের গৌরনগর ব্লকের অধীনে অবস্থিত এগারো আসন বিশিষ্ট গৌরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক নং ওয়ার্ডের মোট ভোটার সংখ্যা ৪১৭ জন।
৪১৭ জনের মধ্যে সাত জন এস.সি অর্থাৎ তপশিলি জাতি ভোটার রয়েছে। ছয়জন এস.টি অর্থাৎ তপশিলি উপজাতি ভোটার রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে গৌরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক নং ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত পরিমাণে তপশিলি জাতি কিংবা তপশিলি উপজাতি ভোটার না থাকায় এই এক নং ওয়ার্ডটি সাধারণ ক্যটাগরি ভুক্ত রয়েছে। কিন্তু, ত্রিপুরা পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী যেকোনো ওয়ার্ডে মোট ভোটারের দুই থেকে তিন শতাংশ ভোটার যদি তপশিলি জাতি কিংবা তপশিলি উপজাতি ভোটার না থাকে তাহলে এই সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডটি সংরক্ষিত হবে না অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডটি সাধারণ ক্যাটাগরী ভুক্ত থাকবে। সম্প্রতি ঊনকোটি জেলার জেলাশাসক কর্তৃক এক নোটিশে জানানো হয়েছে, কৈলাসহরের গৌরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক নং ওয়ার্ডটি তপশিলি জাতি সংরক্ষিত করা হয়েছে বলে দাবি গ্রামবাসীর।
এই ঘোষণায় গৌরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক নং ওয়ার্ডের সমস্ত ভোটারদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরী হয়েছে। জেলাশাসকের নোটিশ বের হবার পর এলাকার ভোটারের স্বাক্ষর সম্বলিত লিখিত আবেদন পত্র জেলাশাসক এবং মহকুমা শাসকের কাছে প্রায় পনেরো দিন পূর্বে গ্রামবাসীরা দিয়েছিলেন। গ্রামবাসী আরো জানান, এক নং ওয়ার্ডে তপশিলি জাতি কিংবা তপশিলি উপজাতি ভোটার প্রায় নাই বললেই চলে। তাহলে এক নং ওয়ার্ড কি কারনে তপশিলি জাতি সংরক্ষিত করা হয়েছে? অবিলম্বে এক নং ওয়ার্ডটি পুনরায় সাধারণ ক্যাটাগরি করার জন্য জেলাশাসক এবং মহকুমা শাসকের নিকট আবেদন করলেও পনেরো দিন অতিক্রান্ত হয়ে যাবার পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের পদক্ষেপ না নেওয়াতে গ্রামবাসীরা প্রশাসনের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। গ্রামবাসী সোমবার বিকেলে গৌরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক নং ওয়ার্ড এলাকায় অবস্থিত কীর্তনথলী জুনিয়র বেসিক স্কুলে এক বৈঠকে বসেন। বৈঠকে এক নং ওয়ার্ডের স্থানীয় বিজেপি, কংগ্রেস, সি.পি.আই.এম এবং তৃনমুল কংগ্রেস দলের নেতৃত্ব থেকে কর্মী সমর্থক সহ এক নং ওয়ার্ডের অধিকাংশ ভোটাররা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সর্বসম্মতি ক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, আসন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত ভোটের পূর্বে গৌরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক নং ওয়ার্ডটি সাধারণ ক্যাটাগরি ভুক্ত না হলে এক নং ওয়ার্ডের সমস্ত গ্রামবাসীরা ভোট বয়কট করবেন। বৈঠক শেষে গ্রামবাসীরা সংবাদ প্রতিনিধিদের জানিয়ে দেন যে, গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে জেলাশাসক এবং মহকুমা শাসককে লিখিত ভাবে দ্বিতীয় বার ফের জানিয়ে দেওয়া হবে, আসন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনের পূর্বে যদি গৌরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক নং ওয়ার্ডটি সাধারণ ক্যাটাগরি ভুক্ত না করা হয় তাহলে এক নং ওয়ার্ডর ভোটাররা গ্রাম পঞ্চায়েত ভোট বয়কট করবে বলে স্পষ্ট ভাবেই জানিয়ে দেয়।