স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২০ মে : কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে রাজ্যেও সিটিজেনশিপ অমেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট অর্থাৎ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকরের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী ২০১৪ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর বা তার আগে, প্রতিবেশী বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে হিন্দু, শিখ, জৈন, খ্রীষ্টান, পার্সি ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীর জনগন যারা ভারতে এসে বসবাস করছেন ও ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে ইচ্ছুক তাদের আবেদন ভিত্তিতে যাচাই করে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। সম্প্রতি এর ঘোষণা হওয়ার পরে সোমবার প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সুর চড়ালেন বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন।
তিনি তিপ্রা মথা দলের সুপ্রিমো প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মণের নাম উল্লেখ না করে বলেন, সি এ এ নিয়ে সরকারে মিশে যাওয়া একটি রাজনৈতিক দলের সুপ্রিমো বর্তমানে সি এ এ -র সমর্থন জানাচ্ছে। তাঁর দল খুব কায়দা করে কেন্দ্র সরকার ও রাজ্য সরকারের সাথে মিশেছে। সুপ্রিমো সামাজিক মাধ্যমে নিজের পেজে পোস্ট দিয়ে বলছেন এডিসি এলাকায় নাকি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর হবে না। কিন্তু জানা নেই উনার গায়ে কোন বাতাস লেগেছে? কারণ এডিসি ত্রিপুরার একটি অংশ। যখন বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে এসে ভারতীয় নাগরিকত্ব পেয়ে যাবে তখন এডিসি এলাকার মানুষেরও চাকুরী সহ ভারতীয় যেসব অধিকার রয়েছে সেসব অধিকারের উপর ভাগ বসাবে সেই সব দেশ থেকে এসে নাগরিকত্ব গ্রহণ করা মানুষ। তাই সেই দলের সুপ্রিমো সি এ এ সমর্থন করা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বর্তমানে সেই দল বিজেপি -র দালালি করে চলেছে। বিভিন্ন সময় জনজাতিদের ওয়ান লাস্ট ফাইট, সাংবিধানিক দাবি সহ বিভিন্ন কথা বলে বিভ্রান্ত করেছে।
কিন্তু এখন তিনি ভুলে গেছেন তার দলের জন্ম এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে জিরানিয়া মাধব বাড়িতে আন্দোলন করে। কিন্তু কংগ্রেস এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কোনভাবেই সমর্থন করে না। ত্রিপুরা রাজ্যে এই আইন কার্যকর হতে দেওয়া যাবে না। আদিবাসী কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্য সচিব জে কে সিনার কাছে যাবে। তারপর গোটা রাজ্যজুড়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে আন্দোলন গড়ে তুলবে। শাসক দল বিজেপি পরিচালিত সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র ভিন দেশের মৌলবাদীদের উৎসাহিত করা। যাতে সেসব দেশে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ হয়। কিন্তু দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণীত ও ভোটে জেতার উপক্রম করলে তার বিরোধিতা করবে কংগ্রেস। এমনটাই সাফ জানিয়ে দেন সুদীপ রায় বর্মন।
এদিকে সম্প্রতি মন্ত্রী রতনলাল নাথের অপমানজনক মন্তব্যের প্রসঙ্গে বলেন, তিনি সাঁকো। তিনি সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চাইবেন সেটা অপ্রত্যাশিত বলে জানান। তাই সাংবাদিকদের আশা না করার জন্য জানান সুদীপ রায় বর্মন। এদিন সাংবাদিক সম্মেলন শেষে বিভিন্ন দল থেকে আগত তিন জনজাতি নেতৃত্ব কংগ্রেস দলে যোগদান করেন। তাদের হাতে দলীয় পতাকা দিয়ে বরণ করে নেন সভাপতি আশিষ কুমার সাহা ও বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন।