Sunday, September 8, 2024
বাড়িরাজ্যভুমিহীন ১৫ পরিবারকে রাতের বেলা বলপূর্বক উচ্ছেদ করল বনদপ্তরের কর্মীরা, ঠাঁই নিলো...

ভুমিহীন ১৫ পরিবারকে রাতের বেলা বলপূর্বক উচ্ছেদ করল বনদপ্তরের কর্মীরা, ঠাঁই নিলো জঙ্গলে

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১২ মে : ভোটের তালিকায় নাম আছে, কিন্তু মাথা গোঁজার স্থান নেই। গভীর জঙ্গলে রাত কাটাচ্ছেন অসহায় ভূমিহীন ১৫ টি পরিবার। এ যেন কাটা গায়ে লবণ-লাগানোর মত ঘটনা করলো বন বিভাগের। জানা যায়, কাঞ্চনপুর মহকুমার সুভাষ নগর সহ আশপাশ এলাকায় অস্থায়ীভাবে বসবাস করতেন ভূমিহীন বেশ কিছু পরিবার। নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা, তবুও অনেকেই সেখানে ভাড়া বাড়িতে থাকতে হতো।

ভাড়া মিটিয়ে দিতে না পারায় সেখান থেকেও উচ্ছেদ হতে হয় অসহায় পরিবারগুলোর। নিরুপায় হয়ে ইতিমধ্যে পানিসাগর মহাকুমাধীন জলেবাসা পেকুছড়া এলাকায় এসে বন দপ্তরের আওতাধীন ভূমিতে আশ্রয় নেন ভূমিহীন প্রায় ১৫ টি পরিবার। তাবু লাগিয়ে ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে তারা কোনরকম মাথা গোজার ঠাঁই করেন পেকুছড়া গ্রামে। শনিবার রাত আটটা নাগাদ স্হানীয়  বনদপ্তরের কর্মীরা দলবল নিয়ে উপস্থিত হয় সেখানে। ভূমিহীনদের মাথা গোজার ঠাই টুকু ভেঙ্গে চুরমার করে দেয় বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয় পুরুষ সহ মহিলাদের মারধর করে সেখান থেকে উচ্ছেদ করে দেয় বলে অভিযোগ। তাছাড়া কোন মহিলা কর্মী ছাড়াই এদিন অভিযান সংঘটিত করে বনদপ্তরের কর্মীরা।

 অসহায় উদ্বাস্তু পরিবারের মহিলারা জানান, রাতের অন্ধকারে মহিলা কর্মী ছাড়াই পুরুষ কর্মীরা তাদের গায়ে হাত দিয়ে ধাক্কা করতে থাকে। এতে বাঁধা দিতে গেলে বেধড়ক মারধর করা হয় মহিলা পুরুষ সহ শিশুদেরও। বন দপ্তরের কর্মীরা ফিরে যাওয়ার সময় হুমকি-ধমকি দিয়ে যায় বলেও জানান ভূমিহীন পরিবারগুলো। বলা হয় পরের দিন যাতে ওই এলাকায় কেউ না থাকে। বনদপ্তরের এমন এমন নির্মম অত্যাচারের পর অসহায় ওই পরিবারগুলো গভীর জঙ্গলে খোলা আকাশের নিচে শনিবার রাতভর থাকতে হয়েছে। এদিন রাতেই স্থানীয় সংবাদকর্মীরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে ভূমিহীনদের মধ্যে তারা জানান স্থানীয় পেকুছড়া গ্রামে তাদের আত্মীয়স্বজনদের কথায় কাঞ্চনপুর থেকে তারা সেখানে আসেন। তারা কখনো ভাবতেও পারেননি তাদের সাথে এমন ঘটনা হবে। ভূমিহীন পনেরোটি পরিবারে প্রায় ৫০ জন সদস্যদের মধ্যে অনেকেই ভোট দিয়ে আসছেন দীর্ঘ বছর বছর ধরে। কিন্তু তাদের কপালে আজও জোটেনি মাথা গোজার মতো ভূমি। ভোট আসে ভোট যায় ভূমিহীনরা অসহায় এমন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন তারা।এর মধ্যে অনেকেই কোলের শিশু নিয়ে অসহায়। তাদের দাবি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও খোঁজ রাখেন না তাদের।তাই তারা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে কড়োজুরে আবেদন জানান যে মাথা গোজার মতো সামান্য ভূমি যাতে তাদেরকে দেওয়া হয়। এদিকে স্থানীয় বনদপ্তরের এমন কান্ডে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুমিহীন পরিবারের সদস্যরা। রবিবার সকালে এ বিষয়টি জানাজানি হতেই বন দপ্তরের ভূমিকায় গোটা পানিসাগর মহকুমা জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য