স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৯ মার্চ : রাজ্য সফরকালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে প্রকাশ্য সমাবেশের মাধ্যমে রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে সম্বোধন করেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর রাজ্য সফরের আগে ৫ মার্চ রাজ্য মন্ত্রীসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত গুলির বিষয়ে সাংবাদিকদের অবগত করা হলেও দুইটি সিদ্ধান্তের বিষয়ে অবগত করা হয়নি
। সেই দুইটি সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে ঘোষণা করেন। বুধবার মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলন করে সেই দুইটি ঘোষণার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। রাজ্য সরকার এই প্রথম বার ওমেন পলিসির অনুমোদন প্রদান করেছে। এই ওমেন পলিসি মোতাবেক এখন থেকে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ রাখা হবে। তবে যদি দেখা যায় শূন্য পদ পূরণের জন্য মহিলা দাবিদার নেই তাহলে সেই শূন্যপদ পুরুষদের দিয়ে পূরণ করা হবে। এই প্রকল্পে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। ওমেন পলিসির মাধ্যমে মহহিলারা কি কি সুযোগ সুবিধা পাবে তাও তুলে ধরেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী।
তিনি জানান কোন মহিলা উচ্চ শিক্ষার জন্য যদি ঋণ গ্রহণ করে তবে ৩ শতাংশ সুদে রাজ্য সরকার ঋণ প্রদান করবে। মহিলাদের জন্য ১৩ টি হেলথ এন্ড ওয়েলনেস সেন্টার খোলা হবে। এতে ব্যয় হবে ১০ কোটি টাকা। মা ও শিশুদের জন্য ১০০ শয্যা বিশিষ্ট সুপার স্পেসালিটি ইউনিট খোলা হবে। তার জন্য ব্যয় হবে ১৯০ কোটি টাকা। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট দুইটি হাসপাতাল খোলা হবে। যেখানে নেশার কারনে এইডস কিংবা অন্যান্য রোগে আক্রান্ত মহিলাদের চিকিৎসা করা হবে। তার জন্য ব্যয় হবে ৯০ কোটি টাকা। মানসিক রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য ৫০ শয্যা বিশিষ্ট দুইটি হাসপাতাল তৈরি করা হবে। তার জন্য ব্যয় হবে ৪৫ কোটি টাকা। মানসিক রোগে আক্রান্তরা সুস্থ হওয়ার পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলে থাকার জন্য ২৫ শয্যা বিশিষ্ট একটি হোম তৈরি করা হবে। এতে ব্যয় হবে এক কোটি টাকা। তিনটি বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করা হবে। তাতে ব্যয় হবে এক কোটি টাকা। চারটি ওয়ার্কিং ওমেন হোস্টেল তৈরি করা হবে। তার জন্য ব্যয় হবে ১৫ কোটি টাকা। নির্ভয়া ফান্ডের জন্য ৫০ কোটি টাকার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মোট ৪০০ কোটি টাকার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এই ওমেন পলিসিতে।
রাজ্যে ৭ হাজারের অধিক চা শ্রমিকের পরিবার রয়েছে। ৫৪ টি চা বাগান রয়েছে। ২১ টি চা পাতা তৈরির কারখানা রয়েছে। তাই মুখ্যমন্ত্রী চা শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্প ত্রিপুরা-র ঘোষণা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে রাজ্য মন্ত্রীসভা এই প্রকল্পের অনুমোদন প্রদান করেছে। এই প্রকল্পে ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৮৫ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে চা শ্রমিকদের জায়গা প্রদান করা হবে বাড়ি তৈরির জন্য। জীবন জিবিকা নির্বাহের জন্য চা শ্রমিকদের যা যা সুযোগ সুবিধার প্রয়োজন তা প্রদান করবে রাজ্য সরকার। প্রতিটি চা শ্রমিকের পরিবারকে প্রায়োরিটি গ্রুপে রেশন কার্ড প্রদান করা হবে। এছাড়াও চা শ্রমিকরা এই প্রকল্পে আর কি কি সুবিধা পাবে তা তুলে ধরেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নে এবং মহিলাদের স্বশক্তিকরনে রাজ্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। নানান প্রতিকুলতার মধ্যেও বর্তমান রাজ্য সরকার জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী সান্তনা চাকমা। এইদিনের সাংবাদিক সম্মেলন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, মন্ত্রী সান্তনা চাকমা, মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তর এবং শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব।