Tuesday, July 15, 2025
বাড়িরাজ্যচাইল্ড লাইনের  প্রচেষ্ঠায় ভেস্তে গেল এক নাবালিকার বিয়ে

চাইল্ড লাইনের  প্রচেষ্ঠায় ভেস্তে গেল এক নাবালিকার বিয়ে

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৮ এপ্রিল : প্রশাসকে ঘুমে রেখে নাবালিকা মেয়ে বিয়ের ব্যাপক জাঁকজমক ভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিল পরিবারের লোকজন। আগরতলা থেকে বর শানাই বাজিয়ে বিয়ে করতে তেলিয়ামুড়ার মহড়ছড়ায় যাওয়ার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছিল। কন্যা পক্ষের বাড়িতে অতিথিদের আনাগোনা। বিয়ে বাড়ির শোভা বর্ধনের জন্য সমস্ত ধরনের আসবাবপত্রই সংরক্ষিত। জ্বলছে উনুন। গরম তেলে অর্ধেক মাছ ভাজি হয়ে গেছে। আর অর্ধেক মাছ ভাজার বাকি। এতোটুকু পর্যন্ত প্রায় ঠিক ঠাকই ছিল। আচমকাই আনন্দের মাঝে যেন বেজে উঠল বিষাদের সুর। গোপন খবরের ভিত্তিতে বিয়ে বাড়িতে গিয়ে উঠে পুলিশ। সামনে দাঁড়িয়ে তেলিয়ামুড়া মহকুমার ডিসিএম।

তখন বাড়ির সবাই গায়েব। বাড়ির কর্তা ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলতে তিনি খুঁজছেন মোবাইল ফোন। কিন্তু কারোর কাছে মোবাইল ফোন পেলেন না তিনি। সত্যিই কি ভাগ্য, ডিজিটাল এর যুগে কারোর কাছে মোবাইল ফোন নেই। এই ডি সি এম  সৌরভ দাসের কন্ঠেই জানা গেল বিয়ে বাড়ির আসল ঘটনা। নবম শ্রেণীতে পড়ুয়াকে কনে সাজিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ডিসিএম সৌরভ দাস জানিয়েছেন খোয়াই চাইল্ড লাইনের কাছে গোপন সূত্রে খবর আসে তেলিয়ামুড়া মহকুমার মোহরছড়া এলাকার নন্দলাল দাস নামের এক ব্যাক্তির নাবালিকা কন্যাকে জোরপূর্বক আগরতলার এক যুবকের সঙ্গে হিন্দু সামাজিক রীতিনীতি মেনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কথা ছিল, যদি ও সম্পূর্ণটাই ছিল বেআইনি।

 এই অভিযোগ পেয়ে খোয়াই চাইল্ড লাইনের প্রচেষ্ঠায় তেলিয়ামুড়া মহকুমা প্রশাসন এবং তেলিয়ামুড়া থানার পুলিশ সম্মিলিতভাবে অভিযান চালায়। পুলিশ, মহাকুমা প্রশাসন এবং চাইল্ড লাইনের উপস্থিতির টের পেয়ে নাবালিকার পরিবারের লোকজন গা ঢাকা দেয়। সেই সঙ্গে নাবালিকার পরিবারের লোকজন পুলিশ, মহকুমা প্রশাসন এবং চাইল্ড লাইন’কে কোন প্রকারের সহায়তা করেনি বলেও অভিযোগ। যদিও আপাতত মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ডি.সি.এম সৌরভ দাস  ডেকোরেটরের জেনারেটর  সহ বিবাহ আনুষাঙ্গিক কিছু জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে যায়। তবে স্বাভাবিকভাবেই বলা যায় যে,  আধুনিকতার যুগেও নাবালিকা বিবাহের মতো কিছু প্রথা বর্তমান যুগেও রয়ে গেছে। সেগুলো থেকে বের হয়ে আসতে পারছে না মানুষ। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে খেসারত দিতে হচ্ছে নাবালিকা কন্যাকে। প্রশাসন কিংবা অন্যান্য এনজিওর তরফে যতই সচেতনতা মূলক কর্মসূচির আয়োজন করা হোক না কেন, পরিবারের লোকজনেরা যদি সচেতন না হয় তাহলে নাবালিকা বিয়ের মত সামাজিক অবক্ষয়ের অবলুপ্তি ঘটানো কোনভাবেই সম্ভব নয়।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য

error: <b>Alert: </b>Content selection is disabled!!