Tuesday, January 14, 2025
বাড়িরাজ্যপূর্ব আগরতলা থানার পুলিশের দুর্বল তদন্ত নিয়ে এবার সরব হলো হরিজন কলোনির...

পূর্ব আগরতলা থানার পুলিশের দুর্বল তদন্ত নিয়ে এবার সরব হলো হরিজন কলোনির মানুষ

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৮ এপ্রিল : গৃহবধূ কিরণ বাসফোর হত্যা মামলায় মূল অভিযুক্ত পিন্টু বাসফোর সহ বাকি তিন অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে ফাঁসির দাবি তুলেছেন ভলকান ক্লাব সংলগ্ন এলাকার হরিজন কলোনিবাসী। ঘটনার পর পুলিশ মৃত গৃহবধুর স্বামীকে গ্রেফতার করলেও বাকি তিন অভিযুক্তকে কোন অজ্ঞাত কারণে জালে তুলছে না। এ বিষয় নিয়ে এবার সরব হয়েছে গোটা এলাকাবাসী। এলাকাবাসী শনিবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান, ১৬ এপ্রিল রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছিল ইন্দ্রনগর হরিজন কলোনির গৃহবধূ কিরণ বাসফোরের।

সেই মৃত্যুর ঘটনার পরই এফআইআর দাখিল করেছিল গৃহবধূর বাপের বাড়ির লোকজন। পুলিশ মামলা নিলেও শুধুমাত্র মৃতার স্বামী পিন্টু বাসফোরকে গ্রেপ্তার করে তদন্ত প্রক্রিয়া চাপা দিয়ে দেয়। পূর্ব মহিলা থানার পুলিশের সেই তদন্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি তুলেছিল মৃতার ভাই বিমল বাসফোর। কিন্তু দীর্ঘ ২৪ ঘন্টা অতিক্রান্ত হতে চললেও পুলিশের কোন হুশ ফিরেনি। তাই এবার এলাকাবাসী রবিবার সরব হয়ে সুষ্ঠু বিচার চায়। এলাকাবাসীর বক্তব্য, ২০০৬ সালে গৃহবধূর বিয়ে হয়েছিল আগরতলা ইন্দ্রনগর হরিজন কলোনির পিন্টু বাসফোরের সাথে। বিয়ের পর থেকেই পণ এবং অন্যান্য বিভিন্ন কারণে গৃহবধু কিরণ বাসফোরের উপর অত্যাচার চালাত তাঁর স্বামী, শাশুড়ি, দেবর এবং ননদ। কিরণ বাসফোরের বাপের বাড়ির লোকেদের সাথে কথাবার্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। খাবার না দিয়ে তালা দিয়ে ফেলে রাখতো। গত কয়েকদিন আগে বিষয়টি আজ করতে পেরে গৃহবধুর ভাই গৌহাটি থেকে বোনের শশুর বাড়িতে আসে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো তখন গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির লোকজন গৃহবধূকে যেতে দেয়নি।

 শেষ পর্যন্ত হতাশ হয়ে গৃহবধুর ভাই এলাকাবাসীকে কিছু না জানিয়ে আবার গৌহাটি চলে যায়। গত কয়েকদিন আগে গৃহবধূর কাছে ৪ লক্ষাধিক টাকা দাবি করে বাপের বাড়ি থেকে আনার জন্য। গৃহবধূ বাপের বাড়ি থেকে সেই টাকা এনে দিতে পারেনি। তারপর থেকে এলাকাবাসী প্রায় একটি দেড় মাস ধরে গৃহবধূ কোন সাড়া শব্দ পায়নি। গত কয়েকদিন আগে জানতে পারে গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। তারপর বাড়িতে ছুটে গিয়ে দেখে হাতির বাচ্চা যেমন পিঁপড়ে হয়ে গেছে। এমনটা দেখে এলাকায় ব্যাপক গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে কিভাবে এমনটা হতে পারে? তারপর তারা জানতে পারে গৃহবধূকে খাবার দেওয়া হতো না। তারপর এলাকাবাসী প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করলে বিভিন্নভাবে হুমকিদের গৃহবধূ শশুর বাড়ির লোকজন। শেষ পর্যন্ত দেখা গেল পুলিশও বিষয়টি নিয়ে ধাপাচাপা দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছে। তদন্ত প্রক্রিয়া যাতে বহুদূর এগিয়ে যেতে না পারে তার জন্য দুর্বল ধারা লাগানো হয়েছে। এরমধ্যে যখন শনিবার গৃহবধুর ভাই সংবাদমাধ্যমের দারস্থ হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে তখন পরিবারের বাকি অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। এলাকাবাসীর দাবি পুলিশ যদি অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে সুষ্ঠু বিচারের ব্যবস্থা না করে তাহলে অভিযুক্তদের এলাকায় থাকতে দেওয়া হবে না। এলাকাবাসীর দাবি সুষ্ঠু বিচার হতে হবে। যদি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হয় তাহলে আগামী দিন এ ধরনের অমানবিক ঘটনা সমাজে ঘটবে না। বিশেষ করে সমাজকে তারা বার্তা দেয় যদি কোন গৃহবধূর শ্বশুরবাড়িতে অশান্তি শিকার হয় তাহলে যাতে গৃহবধূর বাপের বাড়ির লোকজন এলাকাবাসীকে বিষয়টি জানায়। তাহলে বেঁচে যাবে বহু গৃহবধূ।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য