Monday, February 10, 2025
বাড়িরাজ্যত্রিপুরা দেশের মধ্যে এক নম্বর রাজ্য হবে : অমিত শাহ

ত্রিপুরা দেশের মধ্যে এক নম্বর রাজ্য হবে : অমিত শাহ

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৮ মার্চ : নেশা, অপরাধ এবং রাজনৈতিক হিংসাত্মক ঘটনা যখন কমতে শুরু করে তখন উন্নয়ন এবং বিকাশের দিকে এগিয়ে যায় রাজ্য। ত্রিপুরা গোটা দেশের মধ্যে সেই নতুন দিশা এগিয়ে চলেছে। আগামী দিনে ত্রিপুরা দেশের মধ্যে ১ নম্বর রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলা হবে। প্রত্যেকটি প্রতিশ্রুতি পালন করে পুনরায় ত্রিপুরা রাজ্যের মাটিতে ভোট চাইতে আসবেন। ২০২৩ -এর বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে স্বামী বিবেকানন্দ ময়দান থেকে মঙ্গলবার সরকারের চতুর্থ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বক্তব্য রেখে এমনটাই বললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

 স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষ উদযাপন করছে দেশ। একই সঙ্গে পূর্ণ রাজ্য প্রাপ্তির ৫০ বছর উদযাপন করছে ত্রিপুরা। এই ৫০ বছরের মধ্যে ২৫ বছর ত্রিপুরায় রাজত্ব করেছে কমিউনিস্টরা। ২০১৫ সালে রাজ্যে এসে মানুষের মধ্যে ত্রাহিমাম লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ত্রিপুরায় ছিল না কোন উন্নয়ন। রাজনীতির মধ্যে হিংসা, প্রশাসনের মধ্যে ক্যাডার নিয়ন্ত্রন ছিল। রাজ্যের মধ্যে নেশা ও বন্দুক কারবারীদের দৌরাত্ম্য ছিল। জনজাতি অংশের মানুষ নিজেদের সরকার থেকে বিচ্ছিন্ন হিসাবে অনুভব করতেন। যুবরা পালিয়ে যেতেন। মহিলা ও সংবাদ মাধ্যমকে দাবিয়ে রাখা হয়েছিল। ২৫ বছর গরিবের নামে রাজত্ব করলেও গরিবদের জন্য কিছুই করেনি বলে জানান অমিত শাহ। তিনি আরও বলেন ভারতীয় জনতা পার্টি ও অন্যান্য দলের ৩৯ জন কার্যকর্তাকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই সময় বিজেপি স্থির করে নেয় ত্রিপুরাতে একটা রাজনৈতিক আন্দোলন তৈরি করবে বলে। চলো পাল্টাইয়ের শ্লোগানের সাথে এগুবে। বিজেপি নিশ্চিত ছিল রাজ্যে পরিবর্তন আসবেই। ২০১৮ সালে পূর্ণবহুমতের সরকারে গঠনের সুযোগ এই রাজ্যের মানুষ দিয়েছে। এখন সরকারের চতুর্থ বর্ষ পূর্তিতে রাজ্য আত্ম নির্ভর ও নিজের পায়ে চলার দিশাতে এগুচ্ছে। মুক্ত হয়েছে নেশা কারবারীদের হাতে থেকে। ত্রিপুরায় এখন ব্যবসার হাভ তৈরি হচ্ছে। সড়ক ও রেল পথের ক্ষেত্রে বহু প্রকল্পের বাস্তবায়ন ঘটছে। ত্রিপুরার মানুষের কাছে এখন পৌছে দেওয়া হচ্ছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সমস্ত সুযোগ সুবিধাগুলি। প্রধানমন্ত্রী যে সমস্ত প্রকল্প পাঠাচ্ছে  সেই সমস্ত প্রকল্প গুলি পৌঁছে দিচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। করোনার টিকা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেছে মুখ্যমন্ত্রী। এটা কংগ্রেস ও কমিউনিস্ট সরকার হলে সম্ভবকর হয়ে উঠত না। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মহিলা স্ব শক্তিকরণ প্রকল্পের সূচনা করা হয়েছে। ত্রিপুরা সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের নিয়োগের ক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ মহিলাদের জন্য করা হয়েছে। ২০০ কোটি টাকা ব্যয় করে ফরেন্সিক বিশ্ব বিদ্যালয় নির্মাণ করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্পের সূচনা হবে বলে জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মাণিক্য বাহাদুর ত্রিপুরাকে ভারতের সঙ্গে যুক্ত করতে বড় ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। আর কমিউনিস্টরা রাজার অবদানকে ভুলিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছিল। বিজেপি সরকার আগরতলা বিমান বন্দরের নাম মহারাজার নামে করে একতাঁর বার্তা দিয়েছে বলে জানান তিনি। বর্তমানে উত্তর পূর্বাঞ্চলে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। আগে এখানে সন্ত্রাসবাদ, অনুপ্রবেশ, বাঁধা, নেশা, দুর্নীতি ও জাতীয় সমস্যার চর্চা হত। এখন প্রধানমন্ত্রী উত্তর পূর্বাঞ্চলকে অষ্টলক্ষী বানিয়ে বিকাশ, যোগাযোগ, পরিকাঠামো, ক্রীড়া, বিনিয়োগ, ও জৈবিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের কাজ করেছেন। ত্রিপুরাতে শান্তির জন্য প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। এন এল এফ টি-র সাথে চুক্তি হওয়ার দরুন তারা সন্ত্রাসবাদ ছেড়ে মূল স্রোতে ফিরে এসেছেন। ৩৭ হাজার ব্রু সম্প্রদায়ের মানুষ দীর্ঘ বছর ধরে শরণার্থী হিসাবে ছিলেন। এখন ত্রিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে তাদের ঘড় নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। প্রদান করা হচ্ছে চাল। শিক্ষার বিকাশ ঘটিয়ে তাদের জীবন স্বাভাবিক করা হবে।  এটা করে দেখিয়েছে বিজেপি সরকার। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের যুবদের নেশা থেকে মুক্ত করতে নেশা বিরোধী অভিযান জোর কদমে চালিয়েছে। নেশা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য বড় পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর সব চাইতে বেশী সুফল পাচ্ছে জন জাতি অংশের মানুষ বলে জানান তিনি।

যেখানে যেখানে কমিউনিস্ট সরকার ছিল তারা বিরোধীদের রক্তদিয়ে হোলি খেলত। বিজেপি সরকার গঠনের পর ত্রিপুরা রাজ্যে রাজনৈতিক হত্যার মত ঘটনায় ইতি টানার কাজ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব করেছে। মারাত্মক অপরাধের মত ঘটনাগুলি ৩০ শতাংশ কমাতে সক্ষম হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে চলা সরকার। সাজার হার দশগুন বৃদ্ধি করেছে এই সরকার। প্রধানমন্ত্রী দেশকে সুরক্ষিত রাখার কাজ করেছেন। কংগ্রেস সরকার থাকাকালীন সময়ে প্রত্যেক দিন সন্ত্রাসবাদী আক্রমণ হতো। প্রধানমন্ত্রী সারজিক্যাল ও এয়ার স্ট্রাইক করে সন্ত্রাসবাদীদের যোগ্য জবাব দিয়েছেন। এই চার বছরে ত্রিপুরার বিকাশের কাজ করেছে বর্তমান সরকার।  ৫ বছর পর ফের একবার সুযোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান তিনি। ক্ষমতায় এলে ত্রিপুরাকে দেশের এক  নম্বর রাজ্য হিসাবে গড়ে তোলা হবে। সেখানে রাজনৈতিক সন্ত্রাস,  নেশা, অপরাধ, সন্ত্রাসবাদ থাকে সেখানে উন্নয়ন সম্ভব নয়। এটা কমিউনিস্টদের পক্ষে সম্ভব নয়। বিজেপি- ই এই সমস্ত কিছু সমাপ্ত করতে পারে বলে জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। ২০১৮ –র আগে ত্রিপুরা কি অবস্থায় ছিল তা ভুলে গেলে চলবে না। এখন ত্রিপুরার মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। শান্তি, নিরাপত্তা, আর্থিক ভাবে স্ব নির্ভর হওয়ার দিশা পেয়েছে রাজ্য। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ত্রিপুরা  নতুন  দিশায় চলছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। মুক্তির দাতা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহা। তিনি না থাকলে সিপিএম ও কংগ্রেস মিতালী থেকে রাজ্যের মানুষ মুক্তি পেতনা বলে জানান তিনি। নেশার জাল থেকে ত্রিপুরা মুক্ত হতে শুরু করেছে। নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অস্টালক্ষীকে ইনফ্রাস্ট্রাকচার এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। এক নতুন দিশায় এগিয়ে চলেছে ত্রিপুরা। কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এদিনের সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি-র রাজ্য প্রভারী বিনোদ সোনকর, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, উপ মুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা, প্রদেশ সভাপতি ডাঃ মানিক সাহা সহ মন্ত্রী সভার সদস্য ও বিধায়ক এবং জন প্রতিনিধিরা।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য