Monday, February 10, 2025
বাড়িরাজ্যজাতীয় সংহতি শক্তিশালী হয় সংস্কৃতির মাধ্যমে : মুখ্যমন্ত্রী

জাতীয় সংহতি শক্তিশালী হয় সংস্কৃতির মাধ্যমে : মুখ্যমন্ত্রী

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৫ মার্চ : শনিবার উত্তর জেলা সফরে যান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। এদিন দুপুরে পৃথক দুটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করেন। পানিসাগর মহকুমার উপতাখালি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নতুন দালান বাড়ির শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। মূলত উপতাখালি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির দালান বাড়িটি বর্তমানে একপ্রকার ভগ্নদশায় পরিণত। তাই বর্তমান সরকার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একটি সুবিশাল ও অত্যাধুনিক দালান বাড়ি নির্মাণের লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী হাত ধরে শিলান্যাস করা হয়।

 প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দালান বাড়ি তৈরি হলে পানিসাগর মহাকুমার পদ্মবিল, দুগঙ্গা, নোয়াগাং, উপ্তাখালি, উওর পদ্মবিল,দক্ষিন পদ্মবিল,লাল ছড়া,ডুপিরবন্ধ,উওর দেওছড়ার আংশিক অংশ, জৈথাং, ইন্দুরাইল, লাতুগাউ, বাগবাসা এলাকার লোকজন পর্যাপ্ত পরিমাণ স্বাস্থ্য পরিষেবা পাবেন। উপতাখালি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শিলান্যাসের পর বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব চলে যান ধর্মনগর মহাকুমাধীন যুবরাজ নগর বিধানসভা কেন্দ্রের রাজনগর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র উদ্বোধনে। সেখানে ফিতা কেটে ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে নব নির্মিত চল্লিশ বেডের প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দালান বাড়ি উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্হানীয় রোগীদের স্বার্থে নতুন একটি এম্বুলেন্সেরও আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই এলাকায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র সহ এম্বুলেন্স পরিষেবা চালু হওয়াতে বালিদুম,মধুবন, হাফলং, রাজনগর , মঙ্গলা কালী ও যুবরাজ নগর এলাকার প্রায় দশ থেকে বারো হাজার মানুষ স্বাস্থ্য পরিসেবার ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হবে।  তাছাড়া স্হানীয় জনগণ বর্তমান সরকারকে সাধুবাদ সহ ধন্যবাদও জানান।

সবশেষে মুখ্যমন্ত্রী ধর্মনগরের বি বি আই মাঠে  উত্তর জেলা ভিত্তিক বইমেলার উদ্বোধন করেন। এই বই মেলার ভাবনা আমার ত্রিপুরা , আমার গর্ব। আগামী ৫ দিন চলবে এই বই মেলা। ৩০ টি স্টল রয়েছে এই বই মেলায়। বর্তমান সরকার আসার পর বই মেলা ও সংস্কৃতির  সঙ্গে জুরে থাকা অনেক কাজ  শুরু করা হয়েছে। আগরতলায় কেন্দ্রীয়  ভাবে কালচার্যারল হাভ তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর  জন্য ১০০ কোটি টাকার  প্রকল্প কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। এস আর এফ টি আই- পরিচালিত শর্ট টাইম কোর্স করার জন্য একটি সেন্টার স্থাপনের  পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এন এস ডি-র জন্য রানীরবাজারে ২৩৬০ একর জায়গা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ললিতকলা একাডেমির রাজ্য শাখার জন্য নজরুল কলাক্ষেত্রে জায়গা প্রদান করা হয়েছে। হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশের সঙ্গে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগে যারা রাজ্য চালাত তারা এমন ভাব দেখাত তারাই সমস্ত সংস্কৃতি বোঝে। এদের বাইরে অন্যকেউ সংস্কৃতি বোঝে না বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।

ভারতীয় সংস্কৃতি ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে ক্রীড়া ও সংস্কৃতির বিকাশ প্রয়োজন। কেননা ভারতীয় অস্তিত্ব রয়েছে সংস্কৃতির মধ্যে। আর এই সংস্কৃতি ভারতীয়দের জুড়ে রাখে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। পৃথক পৃথক রাজ্যে পৃথক জেলা, ব্লকে আলাদা আলাদা সংস্কৃতি, মানসিকতা থাকলেও সকলকে জুড়ে রাখে সেই সংস্কৃতি। জাতীয় সংহতি শক্তিশালী হয় সংস্কৃতির মাধ্যমে। বর্তমান সরকার সেই দিশায় ধারাবাহিক কাজ করেছে। জীবনমান উন্নয়নের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য , খাদ্য, পরিকাঠামো, সংস্কৃতির প্রয়োজন। এই সরকার এগুলি করে দেখিয়েছে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের বিকাশ ঘটানো হচ্ছে। ৪ কোটি টাকা ব্যয় করে পি এইচ সি সেন্টারের সূচনা করা হয়েছে। অন্যদিকে উপ্তাখালিতে ৬ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পি এইচ সি নির্মাণ করা হবে। সরকারী হাসপাতালে হাটুর অস্ত্রপচার হচ্ছে। বিগত দিনে উদাসীনতার কারণে যে স্বাস্থ্য পরিষেবাকে প্রায়শই অভিযোগের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে। সেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বর্তমান সরকারের যথার্থ ব্যবস্থাপনায়, ওপেন হার্ট সার্জারি, হাঁটু প্রতিস্থাপনমূলক সফল অস্ত্রোপচারের সহ সেবা প্রদানে গুচ্ছ অসাধ্য সাধনমূলক সাফল্যের দৌলতে, একের পর এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় রচিত হচ্ছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। আয়ুষ্মান কার্ডের মাধ্যমে বিনামূল্যে এই অস্ত্রপচার হচ্ছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। অন্যের উপর নির্ভরশীল করে রাখার মানসিকতা নিয়ে পূর্বতন সরকার চলত। কিডনির সমস্যার জন্য নেফ্রোলজির ডাক্তার আনতে বলা হয়েছে। যাতে কিডনি ট্রান্সমিন্টের জন্য ত্রিপুরার বাইরে যেতে না হয় বলে জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী কাজ করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছে। সেই দিশাতে কাজ করছে সরকার। পিছিয়ে পড়া থেকে কিভাবে দ্রুত এগিয়ে আনা যায় সেই লক্ষ্যে কাজ হচ্ছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। ত্রিপুরার মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে আগামী দিনে রাজ্যের সর্বাঙ্গীণ বিকাশে কাজ চলবে বলে জানান তিনি। অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপাধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন, জেলা সভাধিপতি ভবতোষ দেব সহ প্রশাসনিক আধিকারিকেরা।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য