স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৫ ফেব্রুয়ারি : ২০১৮ সালে নতুন সরকার পরিচালনা করা শুরু করে। সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে জনতা কি চায় এবং ত্রিপুরার ভবিষ্যৎ তৈরি করার জন্য আগামী ২৫ বছর কোন দিশাতে চলবে, কোথায় যাবে, কি করবে তা দিশা নির্দেশিকা পূর্ণ রাজ্য দিবসের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে সরকার রাজ্যবাসীর সামনে রেখেছে। স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে এই রাজ্যে দীর্ঘ দিন যারা ক্ষমতায় ছিল তাদের একটি কর্মসূচী গেছে। সেই কর্মসূচীতে তাদের রাজনৈতিক ব্যবসাধারী মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে।
তাদের কাছে রাজনীতির ব্যবসাই রোজগার। কিন্তু বিজেপি-র কাছে রাজনীতি মানে ব্যবসা নয়। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর সাম্মানিক মেলে। কিন্তু তাঁর আগে ভাতা বা বেতন দিত না দল। বিজেপি-র রাজনীতি পেশা ও ব্যবসা নয়। দীর্ঘ দিন যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের রাজনীতি ছিল ব্যবসার। এটা ত্রিপুরাবাসীর সামনে প্রমানিত হয়েছে। শুক্রবার টি আর টি সি- কমপ্লেক্সে টি আর টি সি-র কর্মচারীদের উদ্যোগে আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির, নতুন দুটি এসি বাস পরিষেবা ও টি আর টি সি এবং টি ইউ টি সি এল-র ওয়েবসাইট ও লোগোর সূচনা অনুষ্ঠানে বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল, মহাত্মাগান্ধী, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর দেশে রাজনীতি ব্যবসা , রাজনীতি করে রোজগার সেটাই পেশা তা স্বামী বিবেকানন্দ ময়দান থেকে প্রমানিত হয়েছে বলে জানান তিনি। এতদিন রাজ্যের মানুষের সঙ্গে মিথ্যাচার করা হয়েছে। সত্যের মুখোমুখি করিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এখন মুখ্যমন্ত্রী সত্যি কথা বলে। মানুষকে বিভ্রান্ত করে না। বঞ্চণা, আন্দোলন, চাঁদাবাজি থেকে মুক্ত হয়েছে রাজ্য। টি আর টি সি-র বিনাশ কারা করে গেছে তা কর্মচারীরা ভাল করেই জানেন। বিরোধী দলনেতা থেকে শুরু করে তাদের বিধায়ক ও নেতা দের পেশা ও ব্যবসা সম্পর্কে কেউ অবগত নন। অথচ তারা বড় বড় বারি গারি হাকিয়ে বসে আসেন। এই অর্থ কোথা থেকে আসছে। এর হিসাব নিকাশ হচ্ছে। কিন্তু চোরেদের হিসাব নিকেশ করতে গেলে রাজ্যের উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে পড়বে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। পেটে টান পড়ায় আবার রাজনৈতিক ব্যবসাতে নেমেছে বিরোধী দল। মিথ্য কথা বলে ফায়দা তুলতে চাইছে। কিন্তু এই সব এখন ত্রিপুরায় আর চলবে না বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। ত্রিপুরার মানুষ তাদের চিনে নিয়েছে। বর্তমান সরকার নিয়ত, নীতি এবং নিয়ম নিয়ে কাজ করে। এর বাইরে গিয়ে সরকার কাজ করেনা। স্বচ্ছ তাঁর সঙ্গে সরকার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি। বাহানাবাজী করে ত্রিপুরাতে রাজনৈতিক ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। ব্যবসা করে তারপর রাজনীতি করতে হবে। মানুষকে শোষণ করে ব্যবসা এটা হবে না বলে জানান তিনি। ত্রিপুরাকে বদনাম করার প্রচেষ্টা করছে। কিন্তু ভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। তাই তাদের দুরভিসন্ধি চলছে বলে জানান তিনি।
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী প্রনজিৎ সিংহ রায়। তিনি বক্তব্য রেখে বলেন গত চার বছরে রাজ্যে উন্নয়নের মিশন চলছে। প্রবর্তন সরকারের আমলে টিআরটিসি -র পরিষেবা মৃতপ্রায় অবস্থায় পরিণত হয়েছিল। বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর টি আর টি সি অর্থ ঠেলে সাজানো হয়েছে। বর্তমানে এটি আন্তরিকতার সাথে লাভে চলছে। টি আর টি সি-র পরিত্যক্ত জমিগুলি কাজে লাগানো হচ্ছে। সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে আয়ের পথ সুগম করা হচ্ছে। ৭৪ লক্ষ টাকা থেকে রোজগার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৬ লক্ষ টাকা। কর্মীদের বেতন দিতে হয় ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। সরকার কর্মীদের বেতন কেন্দ্রীয় হারে দিয়েছে। এডহক পদন্নতি দিয়েছে। যাতে কর্মীরা মন দিয়ে কাজ করতে পারে বলে জানান পরিবহন মন্ত্রী। উন্নয়নের স্বার্থে ছাত্র-যুবক থেকে শুরু করে কর্মচারী যুক্ত রয়েছে। রক্তের বিনিময়ে’ কার জীবন বাচবে তা জানা নেই। কিন্তু এর থেকে বড় কোন দান নেই। সকলের যাতে এই ধরনের রক্তদান শিবিরে এগিয়ে আসে তার জন্য আহ্বান জানান তিনি। অনুষ্ঠানে এদিন এছাড়াও মেয়র দীপক মজুমদার, খাদি বোর্ডের চেয়ারম্যান রাজীব ভট্টাচার্য , টি আই ডি সি-র চেয়ারম্যান টিঙ্কু রায় সহ অন্যান্যরা। পরে মেগা রক্তদান শিবির ঘুরে দেখেন অতিথিরা। এদিন আগরতলা থেকে সাব্রুম ও আগরতলা থেকে খোয়াই –র দুটি রুটে দুটি এসি বাস পরিষেবার সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।