Monday, February 17, 2025
বাড়িরাজ্যসিপিআই(এম) ছেড়ে বিজেপিতে ৭ পরিবারের ২৮ জন ভোটার

সিপিআই(এম) ছেড়ে বিজেপিতে ৭ পরিবারের ২৮ জন ভোটার

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২০ ফেব্রুয়ারি : ফের দলত্যাগ! আবারও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে সেই মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্র। প্রতিদিন পালা করে একের পর এক সিপিআই(এম) দলে ভাঙন ধরিয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছেন মজলিশপুর কেন্দ্রের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। গত শুক্রবার উত্তর মজলিশপুর পঞ্চায়েতে দলত্যাগ সভার পর আজ আবারও নিজের মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের হরিজয় চৌধুরী পঞ্চায়েতে দলবদল করালেন তিনি।

হরিজয় চৌধুরী পঞ্চায়েতের  দীর্ঘবছরের সিপিআই(এম) দলের সমর্থক ৭টি পরিবারের ২৮ জন ভোটার সিপিআই(এম) দলের সাথে দীর্ঘবছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে আজ বিধায়ক সুশান্ত চৌধুরীর হাত থেকে বিজেপি দলের পতাকা নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করে। আজকে দলত্যাগের সভায় ভাষণ রাখতে গিয়ে আজ সিপিআই(এম) দল ও তাদের ছদ্মবেশী মিত্রদের চাঁছাছোলা ভাষায় আক্রমণ করলেন বিধায়ক সুশান্ত চৌধুরী। তীব্র আক্রমণাত্মক ভাষণে তিনি বলেন, রাজনীতিতে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলেরই একটা আদর্শ থাকে। কিন্তু সিপিআই(এম) ও তাদের ছদ্মবেশী মিত্রদের নীতি আদর্শ বলে কিচ্ছু নেই। দেশের ও রাজ্যের মানুষের  সর্বনাশ করা ছাড়া কোনও কাজ নেই এদের।কমিউনিস্টরা চিরদিন দেশের পরম্পরা ও সংস্কৃতিকে অপমান করেছে। পঁচিশ বছর গুন্ডামি করে গেছে ত্রিপুরায়। এখানে তো মানুষ এখন শান্তিতে আছে। কম্যুনিস্ট ও তাদের ছদ্মবেশী মিত্ররা এখানে উন্নয়ন সহ্য করতে পারছে না। ত্রিপুরার  বুকে আবারও অশান্তি সৃষ্টি করার চক্রান্ত শুরু করেছে ।কিন্তু ত্রিপুরার মানুষ সিপিআই(এম) ও তাদের ছদ্মবেশী বন্ধুদের  উপযুক্ত জবাব দেবে। এই অশুভ শক্তিদের রুখতে সবাইকে একজোট হতে হবে। একদম বুথস্তর পর্যন্ত ভারতীয় জনতা পার্টির শিকড় পৌঁছাতে হবে।

বিগত পঁচিশ বছরে তাদের শাসনে সিপিএম কীভাবে নির্মম ভাবে অত্যাচার করেছিল তা এখনো মানুষ ভুলে যায়নি। ১৯৯৩,১৯৯৮,২০০৩,২০০৮,২০১৩ প্রতিটি বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর গোটা রাজ্য জুড়ে সিপিএম কিভাবে সন্ত্রাস চালিয়ে ছিলো তা ভুলে গেলে চলবেনা।

তিনি সিপিএমের বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে বলেন, মজলিশপুরে  সিপিএমের আমলে অনেকেই বিরোধী দল করার কারণে খুন হয়েছে, অনেকের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। গত বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে আমি যখন বিজেপি দলের প্রার্থী হয়েছিলাম তখন আমাকে প্রাণে মারার চেষ্টা করা হয়েছে। বহু কষ্টের মধ্য দিয়ে ত্রিপুরায় কম্যুনিস্ট শাসনের অবসান ঘটিয়ে জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ত্রিপুরার সার্বিক  উন্নয়নের জন্য  আমাদের দেশের নরেন্দ্র মোদীজির মার্গদর্শনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব কাজ করে চলেছেন। নিষ্ঠা ও সততার সাথে দলীয় কর্মীদের কাজ করতে হবে। কোনো গাফিলতি ও অলসতা মেনে নেওয়া হবে না । সামনের বছরেই বিধানসভা  নির্বাচন। তাই মানুষের পাশে গিয়ে মানুষের উন্নয়নে কাজ করতে হবে। আজকের সভা থেকে প্রতিটি বুথে প্রতিটি ওয়ার্ডে দলীয় নেতৃত্ব ও কর্মীদের তিনি বাড়ি বাড়ি যাওয়ার নির্দেশ দেন। কোথাও কোনো সমস্যা রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখার জন্য আবেদন জানান ।সেই সঙ্গে তিনি বলেন, যদি নগর পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েত ও ভিলেজ কমিটির জনপ্রতিনিধিরা মানুষের জন্য এভাবেই ভালোভাবে কাজ করার ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন তাহলে আগামী বিধানসভা  নির্বাচনে এই ১০-মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিআই(এম) সহ অন্যান্য বিরোধী দলীয় প্রার্থীদের নির্বাচনে জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। শুধু মজলিশপুর নয় সারা রাজ্যে একটি আসনও পাবে না সিপিআই(এম) । তাই তিনি নগর পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েত ও ভিলেজ কমিটির সদস্যদের নিজেদের এলাকার উন্নয়নকে আরও জোরদার করার জন্য আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে দলের প্রতিটি কর্মীকে তিনি হাতে হাত মিলিয়ে একসঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দেন। তাহলে সিপিআই(এম) এর মতো অশুভ শক্তিকে ত্রিপুরা তথা গোটা দেশ থেকে বিদায় করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।বিধানসভা নির্বাচন যতো এগিয়ে আসবে  সিপিআই(এম) সহ তাদের অশুভ জোট ও ছদ্মবেশি বামবন্ধুরা  বিভিন্ন জায়গায় উস্কানিমূলক মন্তব্য করে সন্ত্রাস সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে। ক্ষমতায় ফেরার জন্য এরা আবারও মান্দাই চৌমুহনীর মতো ঘটনাও ঘটাতে পারে। তাই এখন থেকেই সবাইকে চোখ কান খোলা রাখতে হবে। সিপিআই(এম) ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।

এদিন যোগদান সভায় দলত্যাগীরা বলেন, তারা স্থানীয় বিধায়কের জনগণের জন্য উন্নয়নমূলক কাজ ও সেবামূলক মানসিকতা দেখে বিজেপি দলে যোগদান করেছেন। “সবকা সাথ সবকা বিকাশ”  মাধ্যমে  বর্তমানে রাজ্যের মানুষের সমস্যা দূর করতে পারবে একমাত্র ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার। তাদের বক্তব্য, বর্তমান বিধায়ক দলমত নির্বিশেষে এলাকার  মানুষের উন্নয়ন করে চলেছেন। মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের  গ্রামগঞ্জের সকল মানুষ বর্তমান সরকারের উন্নয়নের সুফল পাচ্ছেন।  বর্তমান সরকারের উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে শামিল হতেই তারা সিপিআই(এম) ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছেন।

 আজকের যোগদান সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মজলিশপুর মন্ডলের মন্ডল সভাপতি সহ অন্যান্য স্থানীয়   কার্যকর্তারা।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য