আগরতলা, ১৯ ফেব্রুয়ারি (হি. স.) : সম্ভবত ত্রিপুরায় কংগ্রেসকে উজ্জীবিত করতে মরিয়া হয়েছে দলীয় হাইকমান্ড। দেশজুড়ে ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু কংগ্রেসের হাল ধরার জন্য ত্রিপুরাকে সেনাপতির দায়িত্বে নামানোর প্রস্তুতি চলছে। তাই, ত্রিপুরায় প্রদেশ কংগ্রেসের সমন্বয় কমিটি গঠিত হয়েছে, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। ওই কমিটিতে বিজেপি ছেড়ে সদ্য কংগ্রেসে যোগ দেওয়া সুদীপ রায় বর্মণ এবং আশীষ কুমার সাহা স্থান পেয়েছেন। ৭ জনের ওই কমিটির শীর্ষে রয়েছেন দলের ত্রিপুরা প্রভারী ডা: অজয় কুমার এবং আহবায়ক নিযুক্ত হয়েছেন প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল রায়।
আজ এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক কে সি ভেনুগোপাল এক প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছেন, কংগ্রেস সভানেত্রী ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস কমিটিতে সমন্বয় কমিটি গঠনের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন। ওই কমিটিতে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন দলের প্রদেশ প্রভারী ডা: অজয় কুমার। এছাড়া আহবায়ক হয়েছেন প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল রায়। সদস্য হিসেবে থাকবেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রাক্তন বিধায়ক বীরজিত সিনহা, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীর রঞ্জন বর্মণ, প্রাক্তন বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ, প্রাক্তন বিধায়ক আশীষ কুমার সাহা এবং জারিতা লেইতফালাং।
ত্রিপুরায় বিজেপির বিরুদ্ধে প্রধান রাজনৈতিক দল হওয়ার দৌড়ে রয়েছে কংগ্রেস। সুদীপ রায় বর্মণ এবং আশীষ কুমার সাহাকে দলে ফিরিয়ে এনে সেই প্রতিযোগিতায় নামার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচন থেকে শুরু করে প্রতিটি নির্বাচনে কংগ্রেসের ভোটের হার ত্রিপুরায় কমেছে। দলের এমন অবস্থা হয়েছিল, যেন ঢাল তলোয়ার বিহীন নিধিরাম সর্দার। একসময় মনে হয়েছিল, ত্রিপুরায় কংগ্রেস সাইন বোর্ড সর্বস্বে পরিণত হতে চলেছে।
কিন্তু সুদীপ ও আশীষের দলে প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে নতুন করে লড়াইয়ে ফিরতে চাইছে কংগ্রেস। এমনটা মনে করার কারণ হচ্ছে, ত্রিপুরায় পুড় খাওয়া রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীর রঞ্জন বর্মণকে আবারও রাজনীতির লড়াইয়ে নামানো হচ্ছে। কার্যত রাজনীতি সন্যাস নেওয়া ওই প্রবীণ নেতাকে প্রদেশ কংগ্রেসের সমন্বয় কমিটিতে স্থান দিয়ে হাইকমান্ড এক ঢিলে একাধিক পাখি মারার কৌশল নিয়েছে বলে করছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।
সমীর ও সুদীপ, বাবা-ছেলের যুগলবন্দীকে ব্যবহার করে কংগ্রেসের মরা গাঙে পাল তোলার চেষ্টা হচ্ছে। তবে, বিজেপির বিরুদ্ধে এই কৌশল আদৌ ফলপ্রসূ হবে, সংশয়ে রয়েছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে সমৃদ্ধ ত্রিপুরাবাসী তাঁদের উপর কতটা ভরসা করবেন, তা পরীক্ষিত হয়েছে।