স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১০ ফেব্রুয়ারি : রাজধানী শহরের বটতলা শিব মন্দির থেকে দশমীঘাট পর্যন্ত রাস্তাটি যানজট মুক্ত করতে বৃহস্পতিবার অভিযান চালায় পুর নিগমের টাস্কফোর্স। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বেআইনিভাবে গড়ে উঠা দোকানপাট। মেয়র পরিদর্শনের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই নেওয়া হয় পদক্ষেপ। কারণ রাস্তাটি শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। কিন্তু রাস্তাটি যুগ যুগ ধরে বেআইনিভাবে বেদখল করে রাখে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। এমনকি রাস্তাটির দুপাশে বেআইনিভাবে পার্কিং করায় যানজট সৃষ্টি হয়।
এতে ছোটখাটো যান দুর্ঘটনা ঘটছে। এবং অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটলে দমকলের ইঞ্জিন নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারছে না বলে অভিযোগ। তাই পুর প্রশাসন যানজট মুক্ত করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে। বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে রাস্তাটি যানজট মুক্ত করতে টাস্কফোর্স দিয়ে অভিযান চালিয়ে বেআইনিভাবে সরকারি জমিতে গড়ে উঠা দোকানপাট ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এবং রাস্তার পাশে যেসব দেয়নি পার্কিং ছিল সেগুলি যেন বন্ধ রাখা হয় তার জন্য অবগত করা হয় ব্যবসায়ীদের। সারিবদ্ধ অধিকাংশ দোকানপাট রাস্তার পাশে সাইনবোর্ড খুলে নেওয়া হয়। উল্লেখ্য, পূর্বে বহু বার পুর নিগমের পক্ষ থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অবগত করা হয়।
কিন্তু বেদখল মুক্ত না হওয়ায় মেয়র দীপক মজুমদার সম্প্রতি স্থানীয় চারটি ক্লাব সহ ব্যবসায়ীদের নিয়ে পুর নিগমে বৈঠক করে যানজট মুক্ত করতে সহযোগিতা চান। নেওয়া হয় কঠোর পদক্ষেপ। রাস্তার দু’পাশে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বসে কোন ধরনের ব্যবসা করতে পারবে না। হকারদের জন্য নেওয়া হয়েছে বিকল্প ব্যবস্থা। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রাস্তার দু’পাশে ক্রেতা-বিক্রেতা বাইক স্কুটি ও বিলাসবহুল গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হতো। এতে রাস্তাটি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যানজট থাকতো। তাই সার্বিক বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত হয় রাস্তাতে যেন যানজট মুক্ত রাখা যায় তার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার। এর জন্য পার্কিং জোন করে দেওয়া হয়েছে আগরতলা শহরের পুরাতন টিআরটিসি অধীন পরিত্যক্ত জমিতে। আর যারা আইন লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ট্রাফিক পুলিশের আধিকারিকদের সাথে মেয়র কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন বুধবার। শহরের প্রত্যেকটি রাস্তায় এভাবে যানজট মুক্ত রাখতে নিগম প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে মেয়র একাধিকবার অবগত করেছেন। এদিন অভিযানে অ্যাসিস্ট্যান্ট মিউনিসিপাল কমিশনার অনুপম চক্রবর্তী জানান বৃহস্পতিবার থেকে গাড়ি এবং বাইক পার্কিং করা যাবে না এই সড়কে। বটতলার নির্দিষ্ট স্থানে পার্কিং করতে হবে। বটতলা থেকে দশমিক হাট সড়ক দখল করে যে সমস্ত ব্যবসায়ী অনৈতিকভাবে ব্যবসা করছিলেন তাদের বেআইনি নির্মাণ এদিন ভেঙে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতেই সড়কটি অবরোধ মুক্ত করার লক্ষ্যে উদ্যোগী হয়েছে পুর নিয়ম। কিছুদিন আগেই এ এম সির টিম বটতলা পরিদর্শন করে ব্যবসায়ীদের দোকানের সামনের অনৈতিক নির্মাণ ভেঙে দিতে বলা হয়েছিল সাধারণ মানুষ এবং ক্রেতাদের স্বাচ্ছন্দে চলাচল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে। পুর নিগমের প্রতিনিধিদল সফর করে নির্দেশ দিয়েছেন এখন থেকে যা পার্কিং হবে তা করতে হবে বটতলা টিআরটিসিতে। আরো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে সমস্ত দোকানিরা অবৈধ নির্মাণ করে জায়গা দখল করে রেখেছেন তা ভেঙে দেওয়ার। গত সাত থেকে দশদিন যাবত এলাকায় মাইকিং ও নোটিশ করে বিষয়টি ব্যবসায়ীদের অবগত করানো হয়েছে। কিছু ব্যবসায়ী সরিয়ে নিলেও একটা অংশ সরায়নি। এদিন নির্দেশ মোতাবেক সেই সমস্ত অবৈধ নির্মাণ ভেঙে দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করে মানুষের চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে বলে জানান তিনি।