স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১০ ফেব্রুয়ারি : নেশা এবং বেকার ইস্যু নিয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নিল বাম যুব সংগঠন। দেশের সরকার এবং রাজ্য সরকার যুবকদের উপর ভয়াবহ ভাবে আক্রমণ নামিয়ে এনেছে। দেশে ৯ লক্ষের অধিক বেকার যুবক-যুবতী বর্তমান সরকারের আমলে আত্মহত্যা করেছে। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের অধীনে সরকারি দপ্তর গুলিতে প্রায় ৬০ লক্ষ শূন্যপদ রয়েছে। শূন্যপদ পূরণের সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই। নিয়োগ প্রক্রিয়া দরজায় তালা দিয়ে দিয়ে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার।
তাই আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ডি ওয়াই এফ আই এবং টি ওয়াই এফ রাস্তায় নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজ্যের বেকার চিত্র এবং নেশার চিত্র জনগণের কাছে তুলে ধরা হবে। বৃহস্পতিবার ছাত্র-যুব ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা জানান ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক নবারুণ দেব। তিনি বলেন, সারাদেশে বেকারত্বের হার বর্তমানে ৭.১ শতাংশ। শীর্ষস্থানে রয়েছে হরিয়ানা, ত্রিপুরা। ত্রিপুরায় বেকারত্বের হার ১৭.১ শতাংশ। বছরে ৫০ হাজার চাকরির নাম করে ভিশন ডকুমেন্ট রাজ্য সরকার প্রতারণা দলিল হিসেবে তৈরি করেছে। দীর্ঘ চার বছরে টি এস আর ছাড়া আর কোন বড় নিয়োগ প্রক্রিয়া হয়নি। কিন্তু এতে বড়োসড়ো আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। শাসক দল বিজেপির ফেসবুক পেজে ধন্যবাদ জানাচ্ছে চাকুরি পেয়ে যুবক-যুবতীরা। কেউ কেউ লেখছেন বিধায়ক রতন চক্রবর্তী আশ্বাস দিয়েছিলেন চাকরি পাবে। চিন্তা না করার জন্য। এর মানে বিধায়ক নিয়োগ তালিকা প্রকাশ হওয়ার আগে দুর্নীতি করেছেন। এমনটাই অভিযোগ তোলেন এদিন নাবারুণ।
আবার কেউ কেউ শাসক দলের নেতাদের দ্বারা চাকরি পেয়ে ফেসবুক পেজে দলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন। এমন আরও বহু অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। তাই বিষয়টি সঠিক তদন্তের দাবি তুলে বাম যুব সংগঠন। একইভাবে জে আর বি টি গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি পদে প্রায় ৫ হাজার নিয়োগের কথা থাকলেও পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে ছয় মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল এখনো ঘোষণা করা হয়নি। নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। তাই দাবি জানানো হচ্ছে দ্রুত যেন ফলাফল ঘোষণা করে নিয়োগ করা হয় বেকার যুবক যুবতীদের। পাশাপাশি রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীর যথেষ্ট অভাব। সরকার নিয়োগ করছে না। প্রধান রেফারেল হাসপাতাল পর্যন্ত গিয়ে রোগীদের দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। কিন্তু বছর বছর বহু যুবক যুবতী চিকিৎসক নার্সের প্রশিক্ষণ পেয়ে যাচ্ছে এসে বেকার হয়ে বসে থাকছে। হাসপাতালগুলিতে সংকট মেটাতে যেন অবিলম্বে বেকার প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের চিকিৎসক নার্স স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে নিয়োগ করা হয় তার জন্য দাবি জানান তিনি। এবং জিআরএস পদের জন্য অবিলম্বে ফলাফল ঘোষণা করে পঞ্চায়েত গুলিতে নিয়োগ করা হয় তার জন্য দাবি জানান তিনি। সরকার শুরুর দিন থেকে এভাবে প্রতারণা করে আসছে। এবং নেশার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার নাম করে নেশা মুক্ত ত্রিপুরার পরিবর্তে নেশা যুক্ত ত্রিপুরা গড়ছে। ফলে স্কুলের মতো অলিগলিতে নেশা মুক্তি কেন্দ্র খুলছে। বেকার যুবক যুবতীদের নেশায় ডুবিয়ে দিতে সরকারি মদতে মদের দোকান এবং বার খোলা হচ্ছে। এতে আগামী দিনে ত্রিপুরা এইডস -এর মতো উদ্বেগজনক রোগ দেশের মধ্যে শীর্ষস্থানে থাকবে। তাই নেশার বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করতে লড়াই ময়দানে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডি ওয়াই এফ আই। এদিন আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সভাপতি পলাশ ভৌমিক সহ অন্যান্যরা।