স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৬ ফেব্রুয়ারি : কোভিড বিধি ভাঙ্গা হিড়িক বাদ গেল না সরস্বতী পূজায়। শনিবার সকাল থেকে স্কুল, কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শহরের রেস্টুরেন্ট, হোটেল এবং বিনোদন পার্কে উপড়ে পড়া ভিড় ছিল। যেভাবে বর্ষবরণে মেতে উঠে খেসারত দিতে হয়েছিল রাজ্যের সাধারণ মানুষকে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে সংক্রমণ রাজ্যের মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল। মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের। নৈশ কারফিউ সহ একাধিক বিধিনিষেধে গত এক সপ্তাহে সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
কিন্তু ফের বেলাগাম হতে চলেছে রাজ্যের একাংশ অসচেতন মানুষ। শনিবার সরস্বতী পূজায় শহরের চিত্র ছিল অনেকটাই সাধারণ। দিনটি বাঙালিদের জন্য ভ্যালেন্টাইন্স ডে বলা হয়। রোমিও জুলিয়েটদের ভিড় ছিল শহরের উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ, হেরিটেজ পার্ক, নেহেরু পার্ক, শহরের নামিদামী বিলাসবহুল হোটেলে। অধিকাংশ ছেলে মেয়ের মুখে ছিল না মাস্ক। পাশাপাশি ছিল না কোনরকম সামাজিক দূরত্ব। স্বাস্থ্য দপ্তরে পক্ষ থেকে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল সংক্রমণ নিম্নমুখী হলেও নির্দেশিকা নিয়ে কোনোরকম গাফিলতি যেন না করা হয়। অর্থাৎ কম বয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যে কোভিড নিয়ে কোনোরকম সতর্কতা চোখে পড়েনি বিশেষজ্ঞ মহলের। এদিন সকাল থেকেই স্কুল-কলেজে ভিড় ছিল বেশ লক্ষণীয়। এদিন ভিড়ের নিরীক্ষে টক্কর দিয়েছে বিভিন্ন শপিং মলও। এমনকি খাবারের স্টলেও ভিড়ে ঠেলাঠেলি ও টেবিল দখলের হুড়োহুড়ি দেখা যায় ছেলেমেয়েদের মধ্যে। কলেজগুলির সামনে ছেলে মেয়েরা জড়ো হয়ে মাস্ক খুলে সেলফি তোলা সহ হাসি ঠাট্টা করতেও দেখা গেছে এদিন। সামনে রয়েছে ভালোবাসার সঙ্গীকে নিয়ে কাটানোর আরো অনেক বিশেষ দিন। সেই দিনগুলি হল রোস ডে, চকলেট ডে, হাগ ডে, টেডি ডে, সর্বশেষ ১৪ ফেব্রুয়ারী ভ্যালেন্টাইন্স ডে। দিনগুলি বেশ জাঁকজমকভাবেই পালন করে রাজ্যের উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা।
শহরে শপিংমল, সিনেমা হল, বিনোদন পার্ক এবং গিফটের দোকানে বেশ ভিড় জমে। এতে সংক্রমণ তেজী হওয়ার আশংকা আরো বেশি হবে। সরস্বতী পুজোর মত যদি প্রশাসন নিজেদের দায়িত্ব ভুলে যায় তাহলে পরিস্থিতি আবারও ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে রাজ্যে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞ মহলের। রবিবার স্বাস্থ্য দপ্তরের বুলেটিনে প্রকাশ করা হয় রাজ্যে গত ২৪ ঘন্টার করোনার চিত্র। রাজ্যে ১০০৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়। তবে মৃত্যু হয়নি কারোর। পশ্চিম জেলায় সংক্রমিত হয়েছে ২ জন, সিপাহীজলা জেলাতে সংক্রমিত হয়েছে ৫ জন, গোমতী জেলায় সংক্রমিত হয়েছে ২ জন, দক্ষিণ জেলা সংক্রমিত হয়েছে ৩ জন, ঊনকোটি জেলায় সংক্রমিত হয়েছে ১ জন। ধলাই জেলা, উত্তর ত্রিপুরা জেলা এবং খোয়াই জেলায় কেউ সংক্রমিত হয় নি। রাজ্যে বর্তমানে সংক্রমণের হার ১.২৯ শতাংশ। সুস্থতার হার ৯৮.২১ শতাংশ। বর্তমানে রোগীর সংখ্যা ৮৮৭ জন। রাজ্যে নতুন করে সুস্থ হয়েছে ৩১০ জন। শনিবার সরস্বতী পূজার থাকায় এ দিন নমুনা পরীক্ষার হার ছিল অনেকটাই নিম্ন। তবে পরিস্থিতি নিয়ে কোনোরকম গাফিলতি করলে খেসারত দিতে হবে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞ মহলের।