স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২২ ডিসেম্বর : দেশে একদলীয় স্বৈরশাসন কায়েমের লক্ষ্যে বিরোধীদলের সাংসদদের সংসদীয় ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার চক্রান্ত চালিয়েছে বিজেপি। এরই বিরুদ্ধে শুক্রবার এক প্রতিবাদ মিছিল সংগঠিত করল সিপিআইএম। বামপন্থী শাখা সংগঠনগুলো ও এদিন এই প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হয়।
মিছিলে হাঁটলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। ছিলেন সিপিআইএমের সাধারণ সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী, প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে, পবিত্র কর, রতন ভৌমিক, রাজ্য বামফ্রন্টের আহ্বায়ক নারায়ণ কর, সারা ভারত গণতান্ত্রিক নারী সমিতির সভানেত্রী রমা দাস, সহ অন্যান্য নেতৃত্ব এবং কর্মকর্তারা।
মিছিল শেষে সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী জানান গোটা দেশের সাথে রাজ্যের মানুষও পুরো বিষয় সম্পর্কে অবগত। তিনি বলেন আজ থেকে ২২ বছর আগে সংসদে অধিবেশন চলাকালীন সময়ে সন্ত্রাসবাদীদের হামলা হয়েছিল। তিনি আরো বলেন বর্তমান সময়ে ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি টাকা খরচ করে নির্মিত সংসদের নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে শুরু করে অন্যান্য মন্ত্রীরা ও গর্ব করে বলেন এটা বিশ্বের মধ্যে সুন্দর, সুউচ্চ এবং সুযোগ সুবিধার দিক থেকে অন্যতম ইমারত নয়, এটা সুরক্ষার দিক থেকেও অন্যতম ইমারত । আর দীর্ঘ ২২ বছর পর নতুন সংসদ ভবন তৈরি হওয়ার পর সংসদের শীতকালীন অধিবেশন চলার সময়ে একই দিনে দুই যুবক একজন বিজেপি সংসদের সুপারিশ মূলে সংসদ ভবনে প্রবেশ করে লাফ দিয়ে লোকসভার কক্ষের মধ্যে হলুদ রং ছড়িয়েছে।
এই ঘটনাটি সংসদ ভবনে দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সমস্ত সাংসদদের নিরাপত্তার জন্য যে একটি বিশেষ ত্রুটি তা প্রমাণ করে দিয়েছে। এই ত্রুটি নিয়ে যাতে প্রধানমন্ত্রী, কিংবা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিংবা অন্য কোন মন্ত্রী সংসদের উভয় কক্ষে যাতে একটা বিবৃতি দেন এ নিয়ে বিরোধী সাংসদরা দাবি উত্থাপন করেছিলেন। সেই ঠুনকো অপরাধে, রীতিমতো অজুহাত দেখিয়ে ১৪৬ জন সাংসদকে গোটা অধিবেশনের জন্য বহিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা নজিরবিহীন ভারতীয় সংসদের জন্য, ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য। এটা একটা কলঙ্কজনক অধ্যায়। এই কাজটা করেছে একমাত্র একটা কারণেই। যা হচ্ছে এই সরকারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ভারতীয় জনতা পার্টি বিভিন্ন কায়দা – কৌশল – কালো টাকা ইত্যাদি ব্যবহার করে কিছু কিছু রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের জিতলেও জনগণের মূল প্রশ্ন গত দশ বছরে আরো বেশি চওড়া হয়েছে। বেকারত্ব, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি , কৃষকের আত্মহত্যা, ধনী গরিবের মধ্যে বৈষম্য এসব জন্ম দিয়েছে মানুষের মধ্যে নানা প্রশ্নের। বিরোধীরা এই প্রশ্নগুলো উত্থাপন করতে পারে সংসদে, এই কারণেই ১৪৬ জন বিরোধী সাংসদকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে । এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দেশজুড়ে বিরোধীদের ২৮ টি সংগঠন একসাথে প্রতিবাদ সংগঠিত করেছে। আর এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে রাজ্যের বামপন্থী সংগঠনগুলো। শুক্রবার প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হয়েছে সিপিআইএমের প্রতিটি শাখা সংগঠন। সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী আরো জানান লোকসভা নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বেশি পরিমাণে স্বৈরাচারী শাসন শুরু করেছে শাসক দল। শাসকদলের এই একনায়কতন্ত্রের অবসান ঘটানোর জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে আগামী দিনে একসাথে মাঠে নামতে হবে। এদিনকার মিছিলে সিপিআইএমের দলীয় নেতৃত্ব এবং কর্মী সমর্থকদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।