স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৪ ডিসেম্বর : গত তিন বছরে ৯ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা দুর্নীতি করে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত হলেন এক পঞ্চায়েত সচিব। তিনি ভারত চন্দ্র নগর ব্লকের পশ্চিম কলাবাড়িয়া পঞ্চায়েতে ব্যাপক আর্থিক দুর্নীতি করেছে বলে অভিযোগ। দক্ষিণ জেলার জেলা শাসক পশ্চিম কলাবাড়িয়া পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সচিব অনাথ পালকে বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছেন। জানা যায়, এই পঞ্চায়েত থেকে দশ লক্ষাধিক টাকা হাপিজ করা হয়েছে। এই আর্থিক দুর্নীতির সাথে পঞ্চায়েত সচিব অনাথ পাল জড়িত রয়েছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, বিলোনীয়া মহকুমার ভারতচন্দ্র নগর ব্লকের অধীন পশ্চিম কলাবাড়িয়া পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় পানীয় জলের উৎস তৈরি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম এবং আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ভারতচন্দ্র নগর ব্লক কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছেন। পানীয় জলের উৎস তৈরিতে ব্যাপক দুর্নীতির খবর পেয়ে কয়েক মাস আগে ভারতচন্দ্র নগর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান পুতুল পাল বিশ্বাস, সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক কাবেরী নাথ, অতিরিক্ত সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সুদীপ কর পশ্চিম কলাবাড়িয়া পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন করে পঞ্চায়েত এলাকায় বেশ কয়েকটি পানীয় জলের উৎস তৈরির চিহ্ন দেখতে পাননি। পরিদর্শন শেষে পশ্চিম কলাবাড়িয়া পঞ্চায়েতে এসে অনাথ পালের কাছ থেকে পঞ্চায়েতের বিভিন্ন রেজিস্টার, খরচের হিসাব সরজমিনে পর্যবেক্ষণ করেন। খরচের বিভিন্ন ভাউচারে বেশ কিছু গড়মিল ধরা পড়ে।
পানীয় জলের উৎস তৈরিতে যেসব ভাউচারে খরচ দেখানো হয়েছে তার সাথে বাস্তবের কোন মিল নেই। প্রাথমিকভাবে এই ঘটনা সম্পর্কে সত্যতা যাচাই করতে ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত শেষে কমিটি ভারতচন্দ্র নগর সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক কাবেরী নাথের কাছে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করেন। তদন্তে ৯ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার ব্যাপক গড়মিল ধরা পড়ে। পানীয় জলের উৎস তৈরির জন্য টিউবওয়েল সহ যেসব খাতে খরচ দেখানো হয়েছে, বাস্তবে সংশ্লিষ্ট এলাকায় তার কোন চিহ্ন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক পঞ্চায়েত সচিব অনাথ পালকে শোকজ নোটিশ পাঠিয়ে কারণ জানতে চান। শোকজ নোটিশের উত্তরে সন্তুষ্ট হতে না পেরে দুর্নীতির ঘটনার বিষয়ে সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক দক্ষিণ জেলার জেলা শাসক এবং রাজ্য পঞ্চায়েত অধিকর্তার কাছে লিখিতভাবে অবহিত করেন। জনগণের জন্য পানীয় জলের উৎস তৈরির নামে সরকারি কোষাগারের লক্ষ লক্ষ টাকার দুর্নীতির ঘটনায় পঞ্চায়েত এলাকা বসবাসকারী জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।