স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৪ ডিসেম্বর : ধর্মনগরের ভারতীয় খাদ্য গুদামে কর্মরত শ্রমিকদের উপর শ্রমিক নির্যাতনের চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। ৫৩ জন শ্রমিক দিনরাত উপেক্ষা করে কাজ করে চলেছে। প্রত্যেকেই অস্থায়ী শ্রমিক। ২০০৬ সাল থেকে তারা খাদ্য গুদামে কর্মরত। ২০১৮ তে তারা নির্ধারিত সময়ের জন্য স্বাক্ষর করে এবং ২০২২ এ পুনরায় নিয়োজিত হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত ন্যায্য পাওনা না পাওয়ার দাবিতে সরব হয়ে উঠেছে কর্মরত অস্থায়ী শ্রমিকরা। জানা গেছে ২০১৮ তে শ্রমিকদের পরিচালনার কন্টাক্টটি পায় জনি ওবেরয়।
আর ধর্মনগরের ভারতীয় খাদ্য গুদামের শ্রমিকদের সর্দার এবং জনি ওবেরয়ের কাজ করে চলেছে রজত নন্দী ওরফে রুপু নন্দী। রজত নন্দির সাথে তিন নম্বর গ্যাংয়ের শ্রমিক সর্দার দীপক কুমার সিংয়ের হৃদ্যতা থাকায় এই দুজন মিলে অস্থায়ী ভারতীয় খাদ্য প্রদানের শ্রমিকদের দিনের পর দিন ঠগিয়ে চলেছে। পুরোনোদের উপেক্ষা করে রজত নন্দী নিজের ইচ্ছামত কয়েকজনকে নতুন করে কাজে নিয়োজিত করেছে বলে অভিযোগ। বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে নিজের কমিশনটা বুঝে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠে এসেছে। দৈনিক মজুরি ৬৬৩ টাকা করে থাকলেও তাদেরকে প্রথমে দেওয়া হতো প্রতি বস্তা তিন টাকা করে, কিছুদিন পর তা বাড়িয়ে করা হলো চার টাকা ৬০ পয়সা করে।
এখন বস্তা প্রতি চার টাকা ৮০ পয়সা করে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন কখনো কখনো ২০ থেকে ২২ হাজার বস্তা লোডিং আনলোডিং হচ্ছে।অ্যাটেনডেন্সের খাতা দেখলে দেখা যায় যে একই সাথে কাজ করা রজত নন্দীর মাসে যদি ১৮ দিন কাজের হাজিরা থাকে অন্যান্যদের সাত থেকে আট দিন কারোর কারোর খাতায় কোন হাজিরা নেই। অর্থাৎ শ্রমিকদের টাকার লুটরাজ চলছে এখানে দীর্ঘদিন ধরে। কিছুদিন আগে শ্রীধর সাহানিকে বাদ দিয়ে অশোক সহানিকে হঠাৎ করে কাজে ঢুকানোকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের মধ্যে বিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল। পরবর্তী সময় উত্তর জেলা বিএমএস এর সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব দাস এবং সভাপতি সুব্রত রুদ্র পালের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা নিয়েও নয় ছয়ের অভিযোগ উঠে এসেছে। শ্রমিক মিলন মালাকার জানান এতদিন যাবত প্রভিডেন্ট ফান্ডে তার জমাকৃত টাকা তুলতে গেলে দেখা যায় ইচ্ছাকৃতভাবে তার এবং বেশ কিছু শ্রমিকের জন্ম তারিখে ভুল লিখে তাদেরকে তাদের নিজের জমানো টাকা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। কেউ এই টাকার জন্য মেয়ে বিয়ে দিতে পারছে না, আবার কেউ অসুস্থ রোগীর চিকিৎসা করাতে পারছে না। শ্রমিকদের দাবি আদায়ে এবং প্রাপ্য টাকা না পাওয়ার দাবিতে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ তীব্র আকার ধারণ করেছে। তারা সময়ের সময়ে গণধর্নায় বসছে। যে কোন সময় লাগাতর ধর্মঘটের আহ্বান জানিয়ে খাদ্য গুদামের সাপ্লাই পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে পারে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে।