গণ্ডাছড়া (ত্রিপুরা), ২১ নভেম্বর (হি.স.) : অম্পিনগর থানাধীন তিনঘড়িয়ার বাসিন্দা যুগলকিশোর জমাতিয়ার স্ত্রী এবং নবম শ্রেণির ছাত্রী খুনের কিনারা করতে বেশ সতর্কভাবে তদন্তে নেমেছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা৷ তদন্তে পুলিশ এই মামলায় মূল অভিযুক্ত বিজয়সিং জমাতিয়াকে গ্রেফতার করেছে৷ আসামি গ্রেফতারের খবর পেয়ে তিনঘড়িয়ার জনগণ বীরগঞ্জ থানা ঘেরাও করেছেন৷
তাঁদের দাবি আসামিকে তাদের হেফাজতে দিতে হবে৷ এ নিয়ে থানা চত্বরে তুমুল হইচই শুরু করে দেন এলাকাবাসী৷ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে৷ এক সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে৷ একটি অসমর্থিত সূত্রের দাবি, পুলিশ শূন্যে গুলিও ছুঁড়েছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য৷ জেলার পদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন৷
প্রসঙ্গত, অম্পিনগর থানাধীন তিনঘরিয়ার দিনমজুর যুগলকিশোর জমাতিয়ার স্ত্রী রূপেশ্বরী জমাতিয়া এবং একমাত্র কন্যা যশোদারানি ত্রিপুরা খুনকাণ্ডের কিছু তথ্য মিলেছে৷ জানা গিয়েছে, অম্পিনগর থানাধীন তিনঘরিয়ার বাসিন্দা যুগলকিশোর জমাতিয়ার স্ত্রী সহ এক ছেলে ও এক মেয়ে যশোদারানিকে নিয়ে সুখের সংসার৷ বাবা যুগলকিশোর ছেলের পাশাপাশি মেয়ে যশোদারানিকে তুলনামূলক বেশি স্নেহ করতেন৷ যুগলকিশোর এবং স্ত্রী রূপেশ্বরীর সুখের সংসারে কাল হয়ে প্রবেশ করে বিজয়সিং জমাতিয়া নামে এক ব্যক্তি৷
বিজয়সিং জমাতিয়ার বাড়ি অমরপুর মহকুমার অন্তর্গত বুরবুড়িয়ায়৷ ওই বিজয়সিং জমাতিয়ার রইস্যাবাড়ি এলাকার ভুইয়াঁছড়ার পাশে বিরাট রবার বাগান রয়েছে বলে বিশেষ সূত্রে খবর৷ আরও জানা গেছে, ওই জোড়া খুনের মাস্টার মাইন্ড বিজয়সিং জমাতিয়া অমরপুর কৃষি মহকুমা দফতরে কর্মরত ছিল৷ কর্মসূত্রে বিজয়সিং অমরপুর মহকুমার চণ্ডীপাড়ায় এক বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করতেন৷জানা গিয়েছে, প্রায় একবছর আগে মোবাইল ফোনে প্রেম পর্ব শুরু হয় বিজয়সিং এবং রূপেশ্বরীর মধ্যে৷ রূপেশ্বরী জমাতিয়া দুটি দামি মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন৷ দুজনের পরকীয়ার কথা জানতে পারেন স্বামী যুগোলকিশোরও৷তা নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রায় সময়েই ঝগড়াঝাটি সহ ছোটখাটো হাতাহাতিও হত বলে খবর৷ ২২ অক্টোবর অষ্টমীর বিকালে কারোর সঙ্গে ফোনে কথা বলে স্বামীকে কোনও কিছু না বলে মেয়ে যশোদাকে নিয়ে নিজ বাড়ি থেকে বের হন রূপেশ্বরী জমাতিয়া৷ ওইদিন মা মেয়ে এবং বিজয়সিং জমাতিয়া অমরপুরের বিভিন্ন পুজো প্যান্ডেল দেখে রাতে চণ্ডীবাড়িস্থিত ভাড়াটিয়া বিজয়সিং-এর ভাড়া বাড়িতে পরপর দুদিন রাত্রি যাপন করে রূপেশ্বরী ও তার মেয়ে৷
জানা গিয়েছে, ২৪ অক্টোবর মা ও মেয়েকে নিয়ে একটি বাইকে করে গণ্ডাছড়া মহকুমার অন্তর্গত রইস্যাবাড়ি বাজারে পৌঁছে৷ সেখান থেকে মা ও মেয়েকে নিয়ে বিজয়সিং সহ পাঁচজন যুবক ভুইয়াঁছড়ার একটি রবার বাগানে যায়৷ সেখানে মদ মাংসের আসর বসে৷ সূত্রের দাবি, সেখানে হয়–তো–বা মা মেয়েকে পাঁচজনে মিলে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ শেষে প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে মা রূপেশ্বরী জমাতিয়া এবং মেয়ে যশোদাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ডুম্বুর জলাধারে চিরদিনের জন্য ভাসিয়ে দিয়েছিল৷