Sunday, September 8, 2024
বাড়িরাজ্যপ্রধানের পরিবারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সহযোগিতা চাইলেন সবজি ব্যবসায়ী

প্রধানের পরিবারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সহযোগিতা চাইলেন সবজি ব্যবসায়ী

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১২ সেপ্টেম্বর : থানার দরজায় দরজায় ঘুরে, মাফিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারছে না এক নিরীহ পরিবার। অভিযোগ জমি জবরদখল করতে বটতলা বাজারের সবজি বিক্রেতা কৃষ্ণ পালের পরিবারের উপর নির্মম অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে প্রধানের পরিবার। অভিযুক্ত প্রধানের নাম মেনকা দাস। ঘটনায় বিবরণে জানা যায়, চারিপাড়া এলাকার জ্যোতি পালের বাড়িতে থাকে তার ভাইয়ের ছেলে কৃষ্ণ পাল। যুগ যুগ ধরে কৃষ্ণ পাল তার স্ত্রী এবং ছেলেকে নিয়ে থাকছেন।

কিন্তু পাশের বাড়ি এলাকার প্রধান মেনকা দাস কৃষ্ণ পালের ভিটেমাটি গিলে খেতে চাইছে। মেনকা দাসের পরিবার চাইছে বাড়িতে দখল করে নেওয়ার জন্য। এর জন্য গত কয়েক মাস ধরে জ্বালা যন্ত্রণা সহ্য করে থাকতে হচ্ছে কৃষ্ণ পালের পরিবারের। কিন্তু এরই মধ্যে নির্মম অত্যাচার শুরু করেছে মেনকা দাশের নেতৃত্বে প্রণব দাস, কৃষ্ণ দে, গৌতম দেব, চন্দন দে, রঞ্জিত দাস, সীমা ও প্রসেনজিৎ নামে অভিযুক্তরা। বাড়িতে এসে প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকি এবং মারধর করে যাচ্ছে। মিথ্যা মামলা সাজিয়ে আমতলী থানায় অভিযোগ করছে প্রধানের পরিবার।

এরই মধ্যে গত দুদিনে কৃষ্ণ পালের স্ত্রীকে বাড়িতে প্রবেশ করে মারধর করে ভিটে মাটি ছাড়ার জন্য হুমকি দিয়ে যায়। কিন্তু তাতে রাজি না হওয়ায় ঘরে প্রবেশ করে মারধর করে কৃষ্ণ পালের স্ত্রীকে। যথারীতি আমতলী থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ মামলা গ্রহণ করছে না। এরই মধ্যে সোমবার বাড়িতে প্রবেশ করে প্রদীপ দাস ও তার সঙ্গপাঙ্গরা কৃষ্ণ পালের পরিবারকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলে। কিন্তু বাড়ি থেকে বের না হওয়ায় তারা হুমকি দিয়ে যায় প্রাণনাশের। অবশেষে বাজার থেকে ফেরার সময় রাতের বেলা অভিযুক্তরা বাইক দিয়ে ধাক্কা দিয়ে কৃষ্ণ পালকে রাস্তায় ফেলে দেয়। তারপর অপহরণের চেষ্টা করে। অপহরণ করতে না পেরে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর শুরু করলে আশেপাশে লোকজনেরা টের পেয়ে এগিয়ে আসে। তখন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। এলাকাবাসী পুলিশকে ফোন করলে দীর্ঘ ৩০ মিনিট পর ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আহত কৃষ্ণ পালকে উদ্ধার করে হাসপাতাল পাঠায় পুলিশ। এবং এদিন রাতের বেলায় পুলিশকে পেয়ে এলাকাবাসী বিক্ষোভ শামিল হয়।

 কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো পুলিশ কাউকে আটক না করে ঘটনাস্থল থেকে থানায় চলে আসে। তারপর রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ আহত কৃষ্ণ পালের পরিবার থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে সেন্টি ছাড়া আর কাউকে পায়নি। সেন্টি স্পষ্ট জানিয়ে দেন মামলা নিতে পারবে না, কারণ থানায় কেউ নেই। শেষ অব্দি অসহায় পরিবারটি এলাকাবাসীর সহযোগিতায় মঙ্গলবার দুপুর বেলা থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করতে চাইলে এক মহিলা পুলিশ অফিসার মামলা গ্রহণ করে নি। জানিয়ে দেন সন্ধ্যা সময় থানায় আসার জন্য। কৃষ্ণ পালের পরিবার জানায় সন্ধ্যা সময় তারা থানায় নিরাপত্তার অভাবে আসতে পারবে না। কিন্তু সুশাসন জামানার এই মহিলা পুলিশ অফিসার ষ্পষ্ট জানিয়ে দেন মামলা এখন নিতে পারবে না। শেষ অব্দি পরিবারটি থানা থেকে বের হয়ে সংবাদ মাধ্যমে সামনে চোখের জল ফেলে মুখ্যমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করে সুবিচার চায়। এবং মাফিয়া পরিবারের পক্ষপাতিত্ব করে আমতলী থানার পুলিশের সব ধরনের অভিযোগ ক্যামেরার সামনে তুলে ধরেন গোটা পরিবার। পরিবারটি জানায় এতদিন হয়ে গেল থানায় এসে পুলিশের কোন সহযোগিতা পাচ্ছে না। তারা দিশেহারা হয়ে গেছে। সন্ধ্যা হলে বাড়ি ছেড়ে অন্যথায় আশ্রয় নিতে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো প্রধান নাকি আমতলী থানার ওসিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কবস করে রেখেছেন। প্রধান বললে পুলিশ থানা থেকে যায়, নাহলে বহুবার ফোন করলেও পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় না। এ ধরনের অসহযোগিতামূলক কাজকর্মে প্রশ্ন হচ্ছে কার পয়সা দিয়ে বারো মাসে ১৩ বার বেতন গুনে সেই মহিলা পুলিশ অফিসার সহ অন্যান্যরা। রাম জামানায় এডহক পদোন্নতি ভাগ্যক্রমে জুটে গেছে। আর এই পদোন্নতি পেয়ে জনগণের সেবা না করে, উঠে পড়ে লেগেছে রাজনীতিক নেতাদের সেবা করায়। এতে প্রশ্ন তাহলে থানা কার জন্য? এলাকাবাসীর কথা না শুনে যদি মাফিয়ার কথা শুনে তাহলে তারা কার দালাল? যদি কৃষ্ণ পালের পরিবারের উপর কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তাহলে এর দায়ভার কে নেবে, সেটাও এলাকাবাসীর মনে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য