স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৪ আগস্ট : শুক্রবার বিকালে মহাকরণে ডেঙ্গু মোকাবেলায় মুখ্যমন্ত্রীর পৌরহিত্যে অনুষ্ঠিত হয় উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক। এই বৈঠকে রাজ্যের মুখ্য সচিব, স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব, অধিকর্তা সহ অন্যান্য আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলন করে বৈঠকের বিষয়ে জানান স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব দেবাসিষ বসু।
তিনি জানান ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ নজরে আসে ১৩ জুলাই থেকে। সিপাহীজলা জেলার ধনপুর এলাকায় প্রথম ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর হদিশ পাওয়া যায়। ১৮ জুলাই থেকে স্বাস্থ্য দপ্তর ডেঙ্গু প্রতিরোধে কাজ শুরু করে। ধনপুর এলাকায় অতিরিক্ত ডাক্তার, নার্স নিযুক্ত করা হয়েছে। একজন শিশু বিশেষজ্ঞ ও একজন স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সেখানে নিযুক্ত করা হয়েছে গর্ভবতী মহিলা ও শিশুদের কথা মাথায় রেখে। ১ আগস্ট পর্যন্ত সেখানে ১৫৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। ২ ও ৩ আগস্ট আরও ৪১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। জিবি হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩৫ জনের চিকিৎসা চলছে। একজন রোগী আইসিইউ-তে রয়েছে। তবে ডেঙ্গু মকাবেলার জন্য স্বাস্থ্য দপ্তর প্রস্তুত। সকল ধরনের ঔষধ মজুত রয়েছে। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন থেকে শুক্রবার ২ লক্ষ টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিটের জন্য।
সাংবাদিক সম্মেলনে জিবি হাসপাতালের মাইক্রো বায়োলজি বিভাগের এইচ ও ডি ডাক্তার তপন মজুমদার জানান ডেঙ্গুর টাইপ-১, টাইপ-২, টাইপ-৩, ও টাইপ-৪ চারটি প্রজাতি রয়েছে। তার মধ্যে টাইপ-২ ও টাইপ-৪ এর ভয়াবহতা বেশি। রাজ্যে যারাই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে তারমধ্যে বেশির ভাগ টাইপ-১ প্রজাতির ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত। টাইপ-১ এর ভয়াবহতা কিছুটা কম। টাইপ-১ ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হলে ৭ দিন জ্বর থাকে। তারপর ধিরে ধিরে সবকিছু ঠিক হয়ে যায়। এই ভাইরাস কোভিডের ন্যায় দ্রুত চারিত্রিক বৈশিষ্ট পাল্টায় না। তবে কোন ব্যক্তি একবার টাইপ-১ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে দ্বিতীয়বার একই প্রজাতির ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। দ্বিতীয় বার অন্য প্রজাতির ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তখন ভয়াবহতা কিছুটা বেড়ে যায়। তার জন্য সকলকে সতর্ক থাকতে হবে বলে জানান তিনি। অপরদিকে জিবি হাসপাতালের এম.এস জানান ২৮ জুলাই থেকে ডেঙ্গু মোকাবেলার জন্য স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রস্তুতি শুরু হয়। দপ্তরের সকল বিভাগের আধিকারিকদের নিয়ে আলোচনা করে একটি গাইডলাইন তৈরি করা হয়। জিবি হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য পৃথক ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত দুইজন গর্ভবতী মহিলা জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাদের পর্যবেক্ষণে রেখেছেন স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞরা।