Saturday, July 27, 2024
বাড়িরাজ্যককবরক লাইব্রেরি গড়ে তোলা হলেও পাঠক নেই, আক্ষেপ এডিসির মুখ্য নির্বাহী সদস্যের

ককবরক লাইব্রেরি গড়ে তোলা হলেও পাঠক নেই, আক্ষেপ এডিসির মুখ্য নির্বাহী সদস্যের

আগরতলা, ১৯ জানুয়ারি (হি.স.) : খুমুলুঙে ককবরক লাইব্রেরি গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু ককবরক পাঠক এখানে এসে বই পড়েন না। বুধবার ককবরক দিবস উপলক্ষ্যে নুউাই অডিটোরিয়ামে ককবরক ভাষা বিষয়ক এক আলোচনাচক্রে আক্ষেপ করে একথা বলেন টিটিএএডিসি-র মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য পূর্ণচন্দ্র জমাতিয়া। তাঁর কথায়, ককবরক ভাষাকে আরও উন্নত করতে যুব সমাজকে বেশি করে এগিয়ে আসার প্রয়োজন রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ককবরক দিবস উপলক্ষ্যে কোভিড-১৯ বিধি মেনে ককবরক দফতরের উদ্যোগে দুদিন ব্যাপী ককবরক সাহিত্য সভার আজ ছিল অন্তিম দিন। এ উপলক্ষ্যে নুউাই অডিটোরিয়ামে ককবরক ভাষা বিষয়ক এক আলোচনাচক্রের আয়োজন করা হয়েছিল। এই আলোচনাচক্রের উদ্বোধন করেন মুখ্যনির্বাহী সদস্য পূর্ণচন্দ্র জমাতিয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের নির্বাহী সদস্য কমল কলই। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য দফতরের নির্বাহী সদস্য রাজেশ ত্রিপুরা, মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক সিকে জমাতিয়া। অনুষ্ঠানে পৌরোহিত্য করেন শিক্ষা দফতরের নির্বাহী সদস্য চিত্তরঞ্জন দেববর্মা। স্বাগত ভাষণ রাখেন শিক্ষা দফতরের প্রধান আধিকারিক অমরদ্বীপ দেববর্মা। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ককবরক দফতরের প্রধান আধিকারিক বিনয় দেববর্মা।

আজকের অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন ফোক মিউজিক কলেজের ছাত্রছাত্রীবৃন্দ। ককবরক ভাষার সাহিত্য, সঙ্গীত, নাটক রচনায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০২১ রাধামোহন ঠাকুর স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে অমূল্যরতন জমাতিয়া এবং অলিন্দ্র ত্রিপুরা স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে জয়ন্তী কলইকে। অমূল্যরতন জমাতিয়ার হাতে পুরস্কার তুলে দেন মুখ্যনির্বাহী সদস্য পূর্ণচন্দ্ৰ জমাতিয়া। জয়ন্তী কলইয়ের হাতে পুরস্কার তুলে দেন শিক্ষা দফতরের নির্বাহী সদস্য চিত্তরঞ্জন দেববর্মা। পুরস্কার হিসেবে মানপত্র এবং ১০ হাজার টাকার চেক এডিসি প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদেরকে দেওয়া হয়েছে।

এডিসির মুখ্য নির্বাহী সদস্য পূর্ণচন্দ্র জমাতিয়া বলেন, আর্থিক সংকটের কারণে ককবরক ভাষা অ্যাকাডেমি এবং ককবরক দফতরের উন্নয়নে কাজ করা যাচ্ছে না। ককবরক লাইব্রেরি গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু ককবরক পাঠক এখানে এসে বই পড়েন না। তাঁর কথায়, ককবরক ভাষাকে উন্নত করতে যুবসমাজকে আরও বেশি করে এগিয়ে আসার প্রয়োজন। নবপ্রজন্মকে লেখালেখিতে এগিয়ে আসতে হবে। তাঁর আক্ষেপ, ককবরক ব্লগ, ইউটিউব, সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন এখনও ব্যাপকতা লাভ করতে পারেনি। সরকারি কাজে ককবরক ভাষায় কাজকর্ম আরও বাড়াতে হবে, বলেন তিনি। দীর্ঘ ৪৪ বছর পরও ককবরক ভাষা উন্নয়ন দিশাহীন ভাবে অগ্রসর হচ্ছে বলে তিনি তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেন।

শিক্ষা দফতরের নির্বাহী সদস্য চিত্তরঞ্জন দেববর্মা বলেন, ককবরক ভাষাকে রাজ্যের দ্বিতীয় ভাষা বলা হয়। সরকারি স্বীকৃতি লাভ করেছে। তার জন্য দ্বিতীয় ভাষার মর্যাদা কেন পাবে, প্রশ্ন তুলেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, দেশের অন্যান্য রাজ্যে বিভিন্ন জনজাতিদের মাতৃভাষা সরকারি স্বীকৃতি লাভ করেছে। কিন্তু সেখানে জনজাতিদের ভাষা দ্বিতীয় ভাষার মর্যাদা পাচ্ছে না বলে তিনি দাবি করেন। সরকারি কাজে ককবরক ভাষাকে আরও বেশি করে প্রয়োগ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। এডিসি প্রশাসনে ককবরক ভাষায় আবেদনকারীদের অধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয় বলেও তিনি জানিয়েছেন।

স্বাস্থ্য দফতরের নির্বাহী সদস্য কমল কলই ভাষা লিপি বিতর্ক মিটিয়ে নেওয়ার জন্য উপস্থিত সকলের কাছে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ককবরক সরকারি স্বীকৃতি পেয়েছে, পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কিন্তু ভাষা লিপি নিয়ে আজও দ্বন্দ্ব চলছে। তাতে ভাষার উন্নয়ন অসম্ভব, দৃঢ়তার সাথে বলেন তিনি। মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক সিকে জমাতিয়া বলেন, এডিসিতে চাকরি প্রার্থীদের অবশ্যই ককবরক ভাষা জানতে হবে। ককবরক ভাষা সরকারি কর্মচারীদের শেখানোর জন্য স্বল্প সময়ের কোর্স চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। সাথে তিনি যোগ করেন, ককবরক মাতৃভাষার সাথে সাথে হিন্দি, বাংলা, ইংরেজি ভাষা আমাদের চাকরি সহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়। তার জন্য এই ভাষা শেখারও প্রয়োজন রয়েছে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য