স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৮ জুলাই : গন্ডাছড়া মহকুমা অন্তর্গত প্রত্যন্ত এলাকাগুলোর মধ্যে ম্যালেরিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। কাতারে কাতারে রোগী আসতে শুরু করেছে গন্ডাছড়া মহকুমা হাসপাতালে। বিশেষ করে গন্ডাছড়া মহকুমা ভগীরথ পাড়া এবং গণপতি এলাকা সহ বিভিন্ন এলাকায় ম্যালেরিয়া বিস্তার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রোগীদের কাছ থেকে জানা যায় এখন পর্যন্ত ২০ থেকে ২৫ জন ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে আছে।
এর মধ্যে সাতজন গন্ডাছড়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যারা চিকিৎসাধীন রয়েছে তাদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু এবং কিশোর কিশোরী। তাদের অভিযোগ আক্রান্ত হওয়া এলাকাগুলোর মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মশা নিধনের জন্য এন্টি লাভা স্প্রে দেওয়া হয়নি। যার কারণে মশার উপদ্রব অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এ বিষয়ে হাসপাতালের চিকিৎসক বিপুল দেববর্মা জানান এখন পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭ জন ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগী। তারা হলেন তিন বছরের মায়াবতী ত্রিপুরা, ১৫ বছরের নিবেদিতা রিয়াং, চার বছরের বিউটিফুল দেববর্মা, পাঁচ বছরের ধনেশ কুমার ত্রিপুরা, সাত বছরের রসমেন রিয়াং, ছয় বছরের নয়নতী চাকমা। তাদের সকলের শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল। তারা সকলে গণ্ডাছড়া মহকুমার সদাইনন্দ পাড়া, উল্টা ছড়া কলোনি, চন্দ্র কুমার পাড়া, রাজধন পাড়া, বিশ্বরাম পাড়া ও তুই চাকমা থেকে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গণ্ডাছড়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
শনিবার গিরাচন্দ্র পাড়ার বিউটি ত্রিপুরা নামে চার বছরের এক শিশু সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত এক শিশুর বাবা জানান গণ্ডাছড়া মহকুমার প্রত্যন্ত এলাকা গুলিতে বহু মানুষ ইতিমধ্যে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। তিনি স্বাস্থ্য দপ্তরের নিকট আহ্বান জানান সহসাই প্রত্যন্ত এলাকা গুলিতে স্বাস্থ্য কর্মীদের পাঠানো হোক। অন্যথায় ২০১৪ সালের পুনরাবৃত্তি ঘটবে। গন্ডাছাড়া মহকুমা হাসপাতালের পক্ষ থেকে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত এলাকার গুলির মধ্যে স্বাস্থ্য শিবির এবং বিশেষ স্ক্যানিং এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি হাসপাতালের ওপিডি বিভাগে যারা আছে তাদের ম্যালেরিয়া টেস্ট করানো হচ্ছে। দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন চিকিৎসক বিপুল দেববর্মা। তবে প্রতিবছর এই সময়ে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা অত্যন্ত এলাকা গুলিতে বাড়ে। এর পেছনে মূলত কারণ হলো সঠিক সময়ে এলাকার বাড়িঘর ও ড্রেনে এন্টি লাভা স্প্রে দেওয়া হয় না। যার কারনে বৃষ্টির জল জমাট বেঁধে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ে। সঠিক সময় মত ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক ব্যবহার করা হলে জল ঘোলা হয় না। গণ্ডাছড়া মহকুমার প্রত্যন্ত এলাকার গিরিবাসিদের ধারনা স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে সঠিক সময়ে ডিডিটি স্প্রে না করার ফলে বর্তমানে ম্যালেরিয়ায় প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ২০১৪ সালে স্বাস্থ্য দপ্তরের এক প্রকার গাফিলতির ফলে প্রত্যন্ত এলাকা গুলিতে ম্যালেরিয়া মহামারির আকার ধারন করেছিল। এই বিষয়টি মাথায় রেখে স্বাস্থ্য দপ্তর কি ব্যবস্থা গ্রহণ করে সেটাই এখন দেখার।