স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৩ জানুয়ারি : ঢেকি নাচে দাপুর দুপুর, নাচে নাচুক সই…. চলছে বাড়ি বাড়ি পিঠে পুলির প্রস্তুতি। এবং পুজো দেওয়ার আলপনা আঁকার ধুম। চিত্রটি ফুটে উঠেছে রাজধানীর লঙ্কামুড়া এলাকা থেকে। মকর সংক্রান্তি উৎসবের দিন সকালে স্নান সেরে সূর্য দেবতার উদ্দেশ্যে পিঠে পুলি নিবেদন করে সংসারের মঙ্গল কামনা করতে দেখা যায় অনেককে। মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে এখনো গ্রাম-বাংলায় উঠোনে আলপনা আঁকার প্রতিযোগিতা চলে।
শহরে এই সংস্কৃতি তেমন চোখে না পড়লেও গ্রাম-বাংলায় এখনো এই সংস্কৃতিকে আঁকড়ে রেখেছেন অনেকেই। সঙ্গে রয়েছে নানা পিঠে পুলির আয়োজন। মকর সংক্রান্তি উৎসব উপলক্ষে এই দিন আগরতলা শহর লাগোয়া লঙ্কামুড়া এলাকার বেশ কিছু বাড়িতে দেখা যায় রমণীরা আলপনা আঁকছেন। তারা জানান তাদের পূর্ব পুরুষরা মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে প্রতিবছর এই আলপনা আকত বাড়ির উঠানে। পূর্ব পুরুষদের সেই ঐতিহ্যকে অনুসরণ করে তারাও বাড়ির উঠানে আলপনা আঁকছেন। সংক্রান্তির চলে বাড়ি বাড়ি লুট। তবে জায়গা ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। আর সেই অনুযায়ী আল্পনা আঁকতে হচ্ছে ছোট পরিসরে।
এদিকে চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী মকর সংক্রান্তিতে খড় দিয়ে বুড়ির ঘর বানিয়ে পিকনিক করার রেওয়াজ যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। ডটকমের যুগে শহরে এই সংস্কৃতি এখন লুপ্তপ্রায়। গ্রামাঞ্চলে কিন্তু এখনও এই সংস্কৃতিকে ধরে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। তবে শহর লাগোয়া এলাকা গুলোতেও এখনো বুড়ির ঘর তৈরি করতে দেখা যায়। রাজধানীর লঙ্কামুড়া এলাকায় সংবাদ প্রতিনিধিদের ক্যামেরায় ফুটে উঠল বুড়ির ঘর বানানোর চিত্র। ঐতিহ্যকে ধরে রাখার চেষ্টা করছে গ্রামের কচি কাঁচারা। এই উদ্যোগে আবার সামিল হয়েছে গ্রামের যুবকেরাও। পিকনিক করতে যাতে বাইরে যেতে না হয় এবং পুরনো সংস্কৃতিকে যাতে ধরে রাখা যায় তার জন্য সামিল হয়েছেন বলে জানান। ১৫ দিন যাবত নির্মাণ করেছেন বুড়ির ঘর। এই ঘরেই হবে পিকনিক। চলবে খাওয়া দাওয়ার এলাহি আয়োজন। এরপর পরদিন সূর্য ওঠার আগে স্নান বুড়ির ঘর পুড়িয়ে উষ্ণতার আচ নেওয়ার পাশাপাশি ধর্মীয় রিতিকে মান্যতা দেওয়া। পূর্ব পুরুষদের তৈরি করা সংস্কৃতিকে আঁকড়ে রেখে এখনো বুড়ির ঘরের আমেজ গ্রাম-বাংলায় চোখে পড়লেও শহুরে সাংস্কৃতিক দাপটে তা ক্রমেই হারিয়ে যেতে বসেছে। কচিকাঁচা থেকে গ্রামের যুবকরা জানায় সংক্রান্তির আগেরদিন বুড়ির ঘরে পিকনিক করা হবে। সংক্রান্তির দিন সকালে তা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হবে। আজও বর্তমান গ্রাম পাহাড়ে। যা হয়তো শহর থেকে কোন বুড়োবুড়ি গ্রামে গিয়ে দেখলে তাদের মধ্যে সেই অতীতের ছোঁয়া যেন লেগে যায়। তাদের মধ্যে ফিরে আসে অতীতের স্মৃতি।