Saturday, January 18, 2025
বাড়িরাজ্যআমার গ্রাফিক্স -বসুন্ধরা জুয়েলার্স -বাংলা ত্রিপুরা মৈত্রী মঞ্চের নজিরবিহীন মেধারত্ন উৎসব

আমার গ্রাফিক্স -বসুন্ধরা জুয়েলার্স -বাংলা ত্রিপুরা মৈত্রী মঞ্চের নজিরবিহীন মেধারত্ন উৎসব

আগরতলা ২ জুলাই : একসঙ্গে ১০০ জন ছাত্রছাত্রীকে মেধাবৃত্তি ও সংবর্ধনা জ্ঞাপন করে নজির সৃষ্টি করল আগরতলার বেসরকারি উদ্যোগ। যা দেখে আবেগ আপ্লুত হয়ে উঠলেন রাজ্যের প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিধানসভার উপাধ্যক্ষ পর্যন্ত । প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী বলেই উঠলেন, এই সময়ে জমির মালিক সবচেয়ে বড় ধনী নন। ধনী নন রাজা-মহারাজা। ধনী হলেন তিনি, যিনি জ্ঞানের মালিক।

আর আজকের দিনের যেসব ছাত্র ছাত্রী মেধাবী, জ্ঞানের অধিকারী তারাই তো আগামী দিনের রাজ্য এবং দেশের চালিকাশক্তি । এদের এগিয়ে চলার পথে যারা উৎসাহ যোগান যারা ,পাশে থাকেন, তারাই তো আসলে প্রকৃত সমাজ দরদী। রবিবার সন্ধ্যায় আগরতলায় মুক্তধারা প্রেক্ষাগৃহে আমার গ্রাফিক্স ,বসুন্ধরা জুয়েলার্স ও বাংলা ত্রিপুরা মৈত্রী মঞ্চের উদ্যোগে এক নজিরবিহীন মেধারত্ন উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ কথা বলেন রাজ্যের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেব বর্মন। ধর্মনগর থেকে সাবরুম, কাঞ্চনপুর থেকে কাঞ্চনমালা, রাজ্যের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের দুস্থ এবং মেধাবী মোট ১০০ জন ছাত্রছাত্রীকে এদিন সংবর্ধনা জ্ঞাপন ও বৃত্তিপ্রধান করেছেন উদ্যোক্তারা। এই মেধারত্ন উৎসবের মূল সুর বেঁধে দিয়েছে টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপ। রবিবার সন্ধ্যায় এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেছেন রাজ্য বিধানসভার উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা,  টেকনো কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং এর অধ্যক্ষ দিবাকর দেব এবং আমার গ্রাফিক্সের কর্ণধার আশুতোষ দে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন , সরস্বতীর বাহন হল রাজহাঁস ।এই হাসই একমাত্র দুধ আর জল আলাদা করে নিতে পারে ।

আর এটাই হলো জ্ঞান যা সু এবং কু দুটোর বিচার করতে পারে । শুধুমাত্র ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, এডভোকেট হলেই হবে না ।গুণগত মানে সেরা হতে হবে ।এটাই লক্ষ্য হওয়া উচিত। এদিনকার এই মেধারত্ন উৎসবের আয়োজন দেখে অভিভূত প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, কোন বেসরকারি উদ্যোগে এত বড় আয়োজন দেখে তিনি নিজেই উৎসাহিত ।ছাত্রছাত্রীরা এতে আর্থিকভাবে কতটুকু উপকৃত হলো , এর চেয়েও বড় কথা, এ জাতীয় অনুষ্ঠান যত বেশি হবে ততই ছাত্রছাত্রীরা আরও বেশি উৎসাহিত হবে। জ্ঞানার্জনে তত বেশি আগ্রহী হবে । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্ধৃতি দিয়ে জিষ্ণু   বাবু বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন স্মার্ট সিটি অনেক হয়েছে এবার দরকার স্মার্ট গ্রাম। আর তিনি নিজে মনে করেন ,এখন দরকার স্মার্ট এডুকেশন এবং স্মার্ট স্টুডেন্ট। ত্রিপুরায় টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পালের উদ্যোগের ভুয়োশী প্রশংসা করেন।  বিধানসভার উপাধ্যক্ষ রাম প্রসাদ পাল বলেন,এজাতীয় মেধাবৃত্তি অনুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীরা উৎসাহিত হবে ।

আর এরা যত বেশি উৎসাহিত হবে ততই জ্ঞানার্জনে তারা সমৃদ্ধ হবে।  ছাত্রছাত্রীরা সমৃদ্ধ হলে উপকৃত হবে দেশ এবং রাজ্য । তবে এদিন অনুষ্ঠানের শুরুতেই আবেগময় ভাষণে উপস্থিত ছাত্র অভিভাবকদের মন কেড়ে নেন অন্যতম আয়োজক আমার গ্রাফিক্সের কর্ণধার আশুতোষ দে। ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অনুরোধ করে তিনি বলেন, প্রতিযোগিতার দৌড়ে ছাত্রছাত্রীরা নিশ্চয়ই বড় হবে। অনেক কিছু অর্জন করবে। সুনামের সঙ্গে দেশ এবং বিদেশে চাকরি করবে। কিন্তু খুবই কষ্ট হয়, যখন তাদের মা-বাবারা এখানে একা পড়ে থাকেন। তাদের কাছে হয়তো বা পুত্রের কিংবা কন্যার পাঠানো অর্থ থাকে। কিন্তু পাশে থাকে না সন্তানের মমতা ।কখনো কখনো এমনও হয়, মা-বাবা শেষ একটু সন্তানের মুখটাও আর দেখতে পারেন না।  তারা যখন বিদেশ বিভুই থেকে এ বিমান  ও বিমান করে দেশে ফেরেন, তখন অনেক দেরী হয়ে যায়। হয়তো অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াটাও তাদের দেখা হয়ে ওঠে না। ছাত্র-ছাত্রীদেরকে প্রতিষ্ঠিত হবার সঙ্গে সঙ্গে বাবা-মায়ের প্রতি কর্তব্যবোধ এবং তাদের শেষ সময়কালীন সময়ে একটু কাছে রাখার আরজিটাও এদিন রাখেন আশুতোষ বাবু। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ রাখেন বাংলা ত্রিপুরা মৈত্রী মঞ্চের আহ্বায়ক সরোজ চক্রবর্তী। টেকনো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন টেকনো ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ ডক্টর দিবাকর দেব।  মেধাবৃত্তি অনুষ্ঠানে কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেন আমার গ্রাফিক্সের অন্যতম প্রধান পরিচালক নবনীতা ঘোষ এবং বসুন্ধরা জুয়েলার্সের অন্যতম প্রধান পরিচালক অলকা ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন টেকনো আজকাল গ্রুপের ডেপুটি এডিটর তপশ্রী গুপ্ত ।তবে আমার গ্রাফিক্স ও বসুন্ধরা জুয়েলার্সের উদ্যোগে আয়োজিত এই মেধাবৃত্তি অনুষ্ঠানকে ঘিরে দিন ছাত্র-শিক্ষক অভিভাবকদের মধ্যে তুমুল উৎসাহ পরিলক্ষিত হয় ।বিশেষ করে মফস্বলের ছাত্র ছাত্রীদেরকে আগরতলায় এনে এভাবে সংবর্ধনা জ্ঞাপন এবং মেধাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান রাজ্যের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত। এত বিশাল সংখ্যায় ছাত্রছাত্রীদের মেধাবৃত্তি ও সংবর্ধনা জ্ঞাপন খুব সম্ভবত রাজ্যের ইতিহাসে এর আগে কখনো হয়নি। শেষে সাংস্কৃতিক আয়োজনে অংশ নেন রাজ্যের বিশিষ্ট শিল্পীরা।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য