স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৯ জানুয়ারি : আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত বলবৎ থাকবে নৈশ কারফিউ। প্রতিদিন রাত ৯ টা থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত নৈশ কারফিউ থাকবে। রবিবার সন্ধ্যায় মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা জানান মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। তিনি বলেন, আগরতলা পুর নিগমে সংক্রমণের হার ১৬.৯৫ শতাংশ। পশ্চিম জেলায় সংক্রমণের হার ১১.৫৬ শতাংশ। রাজ্যে সংক্রমণের হার ৫ শতাংশ।
রাজ্যে ইতিমধ্যে তৃতীয় ঢেউ -এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাস রাজ্যবাসীকে সচেতন থাকতে হবে। তৃতীয় ঢেউ -এ রাজ্যে প্রায় ৩২ হাজারের অধিক মানুষ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরমধ্যে ৫ শতাংশ সংকটাপন্ন রোগী হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৩,৮৮০ জন শিশু আক্রান্ত হতে পারে। ১৯৪ জন শিশু সংকটাপন্ন হতে পারে। রাজ্যের সব জেলাতে ৫০ টি করে বেডের ব্যবস্থা থাকবে। রাজ্যে মোট ২,৫৬২ টি বেডের ব্যবস্থা করা আছে। এর মধ্যে ৭০০ টি বেড সংকটাপন্ন রোগীদের জন্য রাখা আছে। প্রয়োজনে বেডের সংখ্যা বাড়ানো হবে।অক্সিজেন প্লান্ট রয়েছে ২২ টি। স্বাস্থ্য দপ্তরের সমস্ত পরিকাঠামো রয়েছে কোভিড মোকাবিলা করার জন্য। ৫০০ থেকে ৭০০ জন আউটসোর্সিং -এর মাধ্যমে চিকিৎসক, নার্স, ল্যাব টেকনিশিয়ান নিয়োগ করা হবে বলে জানান মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী।
বিয়ে বাড়িতে ১০০ জনের অধিক আমন্ত্রণ করা যাবে না। যাত্রীবাহী গাড়িতে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না। এ বিষয়ে দপ্তরের মন্ত্রী সেন্টিগ্রেডের সংগঠন গুলির সাথে কথা বলবেন। অতিরিক্ত যাত্রী বহন করলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হবে কঠোর পদক্ষেপ। তীর্থ মুখ মেলাতে যাতে কম সংখ্যক মানুষ নিয়ে করা হয়, এর জন্য আহ্বান জানান মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। আগরতলা পুর নিগম এলাকায় যেহেতু সংক্রমণের হার বেশি, তাই আগরতলা থেকে কোন ব্যবসায়ী তীর্থ মুখ মেলাতে না যাওয়ার কথা জানান তিনি। পাশাপাশি আরও বলেন পূর্বে দেখা গেছে বহিরাগতরা রাজ্যে এসে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। তাই রাজ্যের প্রবেশপথগুলিতে রবিবার থেকে শুরু হয়েছে নয়া নির্দেশিকা। রাজ্যের প্রতিটি প্রবেশপথে কোভিড নমুনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এমবিবি বিমান বন্দর, রেলওয়ে স্টেশন, চুড়াইবাড়িতে আগত যাত্রীদের কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট থাকা সত্বেও করানো হচ্ছে কোভিড টেস্ট। বাড়ন্ত সংক্রমণের কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওমিক্রন নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার কথা বলেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। কারণ ওমিক্রন এখনো রাজ্যে শনাক্ত হয়নি। তবে বাজার হাট থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটে সর্বত্র সকলকে কোভিড নির্দেশিকা মেনে চলার আহ্বান জানান মধ্যে সুশান্ত চৌধুরী। খেলার জায়গায় কোন জনসভায় হতে পারবে না। সিনেমা হল মাল্টিপ্লেক্স, স্পোর্টস কমপ্লেক্স এবং স্টেডিয়াম ও বিনোদন পার্কে ৫০ শতাংশের অধিক মানুষ থাকতে পারবে না। শেষকৃত্যে ২০ জনের বেশি উপস্থিত হতে পারবে না। তবে শপিংমল, বিউটি পার্লার, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সকাল ৬ টা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত খোলা থাকতে পারবে। তবে ওষুধের দোকান এর আওতার বাইরে থাকবে। এবং এই সময়ের মধ্যে কোন মেলা বা প্রদর্শনীর আয়োজন করা উচিত নয়। ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী ৭৭ হাজার ৫৭ জন ছেলেমেয়েদের এখন পর্যন্ত কোভিড টিকাকরণের প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। ২ লক্ষ ১৩ হাজার ছেলে মেয়েকে টিকাকরণের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রার নেওয়া হয়েছে। রাজ্যে কোভিড মোকাবিলা করার জন্য চিকিৎসক, নার্স থেকে শুরু করে ঔষধপত্র সমস্ত কিছু নেই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এদিন এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক দীপ দেববর্মা।