স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩১ ডিসেম্বর : জোর যার মুলুক তার! কথাটি যেন অক্ষরে অক্ষরে পালন করে চলেছে ত্রিপল ইঞ্জিনের সরকার। গত ২৮ নভেম্বর পুর নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে দায়িত্ব নিল বিজেপি। কিন্তু ক্ষমতার জোরে ১৫ দিনের মধ্যেই পুর নিগম এলাকায় গরিব মানুষদের পেটে লাথি মারতে শুরু করেছে। সারা রাজ্যে হকারদের উচ্ছেদ করে চলেছে নিগম কতৃপক্ষ।
সারা রাজ্যের মতো শুক্রবার আগরতলা পুর নিগমের পক্ষ থেকে জেকসন গেট এলাকায় ত্রিপুরা সরকারি কর্মচারি ফেডারেশন অফিস ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো এদিন শাসক দলের কর্মচারিদের সংগঠনের অফিস ঘর ভাঙ্গার পাশাপাশি স্থানীয় রাস্তার পাশে বসে থাকা গরিব হকারদের উচ্ছেদ করে দেওয়া হয়। হকাররা যাতে কোনো ধরনের বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে না পারে তাই এলাকায় মোতায়েন করা হয় পুলিশ, টিএসআর সহ আধা সামরিক বাহিনী। এদিন সাত সকালে এসে অভিযানের নামে এ এম সি টাস্কফোর্স।
প্রথমে ভাঙ্গা হয় কর্মচারীদের ফেডারেশনে অফিসটি। পরে স্থানীয় এলাকার কিছু হকার ব্যবসায়ী সহ নার্সারি উচ্ছেদ করা হয়। যা দেখে কর্মচারি ফেডারেশন অফিসের নেতারা এবং হকাররা হতভম্ব হয়ে পড়ে। এ বিষয়ে সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের নেতা সমর রায় জানান, ২০১৭ সালে এপ্রিল মাসে পোস্ট অফিস চৌমুহনী থেকে সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন অফিসটি জ্যাকসন গেট এলাকায় স্থাপন করা হয়। কিন্তু এতদিন কোনরকম বাধা-বিপত্তি দেওয়া হয়নি। গত ২৮ ডিসেম্বর নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়ে যায় নিগম কর্তৃপক্ষ। এবং জোত জমি ছাড়ার জন্য বলা হয় নোটিশে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো একদিন বাদেই এসে নিগম কর্তৃপক্ষ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিল অফিসটি। এটা সরকারি কর্মচারিদের অফিস ছিল। কর্মচারিদের সমস্যা হলে এই অফিসটি থেকে সমাধানের জন্য পরিচালনা করা হতো। কর্মচারীদের জন্য দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করে আসছিল এই অফিসের নেতৃত্বরা। এবং এ দালান বাড়িতে বসতেন শাসক দলের বিধায়ক আশিস সাহা। কিন্তু নিগম কর্তৃপক্ষের এই ধরনের আচরণ প্রত্যাশিত ছিল না বলে জানান সমর রায়। তিনি জানান বিষয়টি অত্যন্ত চিন্তার বাইরে। বিষয়টি নিয়ে মেয়র দীপক মজুমদারের সাথে দেখা করে আলোচনা করা হবে। তবে যদিও বিধায়ক আশিস সাহা রাজ্যে নেই। তাই এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যায়নি বিধায়কের সাথে।
তবে হতাশ হয়ে পড়েছে উচ্ছেদ হওয়া হকাররা। হকারের জানায় কোন স্থায়ী ব্যবসার জায়গা করে না দিয়ে আচমকা নিগমের পেটে লাথি মেরেছে। আশ্বাস দিয়েছে শুধু ব্যবস্থা করে দেবে। কবে, কোথায়, কখন কী ব্যবস্থা করে দেবে সে বিষয়ে কোনো উল্লেখ করে নি নিগমের বাবুরা। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন হকাররা। এমনকি স্থানীয় গুড লাক নার্সারির কর্ণধার স্বপন রায় জানান, নিগম প্রশাসন এদিন সকাল বেলায় এসে উনার ৩ থেকে ৪ লক্ষাধিক টাকার গাছের চারা তুলে নিয়ে যায়। ফলে উনার মাথায় হাত। তিনি বলেন এই নার্সারিতে দিয়ে উনার মতো আরো কয়েকটি সংসার প্রতিপালন হয়। এদিন উচ্ছেদের ফলে বহু কর্মচারি হতাশ হয়ে পড়েছেন। এদিন সকাল থেকেই ড্রজার দিয়ে চলে উচ্ছেদের প্রক্রিয়া। এদিন উচ্ছেদের নেতৃত্ব দেন আগরতলা পুর নিগমের দাম্ভিক কমিশনার শৈলেশ কুমার যাদব।