স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২২ মার্চ : সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তার জন্য শ্রমজীবী অংশের মানুষের উপর আক্রমণ নামিয়ে এনেছে শাসক দল বিজেপি আশ্রিত দুর্বৃত্তরা। সরকারের এই জেহাদ ঘোষণার তীব্র নিন্দা জানায় সি আই টি ইউ রাজ্য কমিটি। বুধবার সি আই টি ইউ রাজ্য কার্যালয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা বলেন রাজ্য সভাপতি মানিক দে। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন দ্রুত আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
শ্রমজীবীরা যাতে নিজেদের কাজে যোগ দিতে পারে তার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ব্যবস্থা নিতে হবে। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত সি আই টি ইউ সাধারণ সম্পাদক শংকর প্রসাদ দত্ত সন্ত্রাসের ঘটনার পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, বিজেপি ২ মার্চ ভোটের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর দুপুর থেকে শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের উপর সন্ত্রাস নামিয়ে এনেছে। রাজ্যে সিআইটিইউ -র ২৪ টি কমিটির সম্পাদক ও সভাপতি বাড়ি ঘরে থাকতে পারছে না। পরিবহনের সাথে যুক্ত ৭০৫ টি অটো রিক্সা রাস্তায় নেমে গাড়ি চালাতে পারছে না। ই- রিক্সা ১৬২টি চলাচল করত রাস্তায় নামতে দেওয়া হচ্ছে না।
গত ২০ দিন ধরে ৩১৬ টি গাড়ি রাস্তায় চলাচল করতে যাওয়া হচ্ছে না। ১৮ টি ছোট-বড় গাড়ি অগ্নিসংযোগ করে জ্বালিয়ে দিয়েছে। ৫০৪ টি শ্রমিকের বাড়িতে ভাঙচুর করেছে। লুটপাট করেছে ৪৩২ টি বাড়িতে। ৫৬ জন শ্রমিকদের বাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। রাস্তার পাশে ৩০২ টি হকারের দোকান ভাঙচুর এবং লুটপাট করেছে। আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে ৫৫ টি দোকানে। এবং এখন পর্যন্ত পাঁচ শতাধিকের অধিক দোকান খুলতে দেওয়া হচ্ছে না। শাসক বলে দুর্বৃত্তরা দোকানগুলি তালা দিয়ে রেখেছে। দুই শতাধিক দোকান লুটপাট করেছে। রাবার বাগান ১২২ টি আগুনে ভস্মীভূত করে দিয়েছে। সরকারি বাগানে কাজে যেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে ২১৫ জনকে। এবং এছাড়া দেড় হাজারের অধিক শ্রমিককে জবরদস্তি সাদা কাগজে ছাঁটাই করার জন্য স্বাক্ষর করে বাড়ি পাঠাচ্ছে। এর মধ্যে পাম্প অপারেটর, রেগা শ্রমিক, টুয়েপ শ্রমিক এবং নির্মাণ শ্রমিক রয়েছে। তথ্য অনুযায়ী ২২১ জন শ্রমিক এখন পর্যন্ত দৈহিকভাবে আক্রান্ত হয়েছে। এক হাজারের অধিক শ্রমিক ঘর ছাড়া।
এর মধ্যে রয়েছে আগরতলা স্বামী বিবেকানন্দ আবাসনের ১৬ জন শ্রমিক। তারা আবাসনে গত দুই মার্চের পর থেকে প্রবেশ করতে পারছে না। এ ধরনের বর্বরতার মধ্য দিয়ে রাজ্যে শ্রমজীবী মানুষের রুজি রোজগার বন্ধ করে দিচ্ছে তারা বলে জানান তিনি। বিজেপির হুঁশ ফেরাতে এ সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। সরকার দ্রুত যদি ভূমিকা গ্রহণ না করে তাহলে আগামী দিনে শ্রমিকরা তাদের নিজের অধিকারের জন্য অগ্রসর হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।