Thursday, March 28, 2024
বাড়িরাজ্যসন্ত্রাসের ঘটনা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী নজরে নেওয়া হবে, তুলে ধরা হবে পার্লামেন্টে,...

সন্ত্রাসের ঘটনা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী নজরে নেওয়া হবে, তুলে ধরা হবে পার্লামেন্টে, জানান বাম কংগ্রেসের সংসদীয় দল

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১১ মার্চ : সন্ত্রাসের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসে সন্ত্রাসের শিকার হলেন বাম ও কংগ্রেসের সংসদীয় দল। শুক্রবার দুপুরে বিমানে রাজ্যসভা এবং লোকসভার সাংসদগণ বিনয় বিশ্বমরা, টি আর নটরাজন, রঞ্জিতা রঞ্জন, আব্দুল খালেক, বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, ড. অজয় কুমার, জারিতা লাইফ্রাং রাজ্যে আসেন। তারা ত্রিপুরায় এসে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির খতিয়ে দেখতে তিনটি ভাগে বিভিন্ন এলাকায় যান। কিন্তু এদিন রাতের বেলা বিশালগড় নেহাল চন্দ্রনগর এলাকায় আগুনের ভস্মিভূত ১৯ দোকানের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলতে গিয়ে শাসকদলের আশ্রিত দুর্বৃত্তদের শিকার হয়।

ভাঙচুর করে সংসদীয় দলের তিনটি গাড়ি। কোনক্রমে ঘটনাস্থল থেকে আগরতলা ছুটে এসে তারা সন্ত্রাস কবলিত এলাকাগুলি পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে শনিবার রাজ্যপাল সত্যদেও নারায়ন আর্য্যের দ্বারস্থ হয়। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা এইদিন রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের নিকট ডেপুটেশন প্রদান করেন। ডেপুটেশনের পর প্রতিনিধি দলটি রাজ্য অতিথি শালায় ফিরে এসে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সাংবাদিক সম্মেলনে সংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী নাগরিকদের মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। তাই পাঁচ বছর অন্তর অন্তর বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ত্রিপুরায় সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর দেখা গেছে বিজেপি সংখ্যালঘিষ্ঠ ভোট পেয়ে জয়ী হয়ে আতঙ্কে সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে। আর সন্ত্রাসের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ত্রিপুরা রাজ্যে সাতজনের একটি সংসদীয় প্রতিনিধি দল এসেছে। কিন্তু এ সংসদীয় প্রতিনিধি দলটি বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসের ঘটনা পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো মানুষের সম্পত্তি নষ্ট এবং মানুষ আক্রান্ত হওয়ার পরেও পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এক হাজারের অধিক ঘটনা সংঘটিত হলেও পুলিশ আক্রান্ত পরিবারদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেনি। তাই এই বিষয়গুলি আগামী পার্লামেন্ট অধিবেশনে তুলে ধরা হবে।

এবং রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানানো হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত এক হাজার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে যথেষ্ট আর্থিক সহযোগিতা করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার জন্য। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহযোগিতা করতে অবিলম্বে একটি দল তৈরি করার দাবি জানানো হয়। তিনি আরো বলেন রাজ্যে এভাবে সন্ত্রাস করে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে এসে ড্রামা করার কোন প্রয়োজন ছিল না। আগে রাজ্যে সংবিধান কার্যকর এবং আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে বলে সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি। তিনি অগ্রিম বলেন পার্লামেন্টে এই সমস্যাগুলি তুলে ধরলেও বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে কথাগুলো শুনতে চাইবে না। কিন্তু তারপরও এই বিষয়গুলি যেমন পার্লামেন্টে তুলে ধরা হবে তেমনি মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে। এতে যদি সাংসদদের পেছনে ইডি এবং সিবিআই লাগানো হয় তাহলে এর ভয় করেন না। কারণ মোদীর দলে মত দুর্নীতিগ্রস্ত নয় বলে জানান তিনি। ঘটনাগুলো সম্পর্কে রাজ্যপালকে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।

এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে রাজ্যপালের কাছে দাবি জানানো হয়েছে। এদিকে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে সাংসদ রঞ্জিতা রঞ্জন জানান, সংসদের দল সন্ত্রাসের ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে শুক্রবার রাজ্যে এসেছিলেন। কিন্তু বিশালগড় গিয়ে তাদের শাসক দলের সন্ত্রাসীদের দ্বারা মারাত্মকভাবে আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে। শাসক দলের প্ররোচনের কারণে তাদের সন্ত্রাসের ঘটনা পরিদর্শন বন্ধ করে দিতে হয়েছে। কিন্তু রাজ্যে এক হাজারের অধিক যে সন্ত্রাসের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে তা নিয়ে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো ক্ষতিগ্রস্ত ঘটনার কোন পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ। মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আইন বলতে কিছু নেই। প্রকাশ্যে পুলিশের সামনে চলছে গুন্ডাগিরি। পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত নিন্দনীয় বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন যে পরিস্থিতি তারা প্রত্যক্ষ করে গেছেন সেগুলি দিল্লি গিয়ে রাষ্ট্রপতি নজরে নেবেন এবং যেহেতু এ ধরনের ঘটনা প্রকাশ্যে আনতে দেয় না তাই প্রধানমন্ত্রী নজরে নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন এ ধরনের জঙ্গলের নিয়ম ত্রিপুরা রাজ্যে আর বরদাস্ত করা হবে না। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন রাজ্য পুলিশের মহা নির্দেশকের কাছ থেকে জানা গেছে আড়াই শতাধিক দুর্বৃত্ত এই সন্ত্রাসের ঘটনার জন্য গ্রেপ্তার হয়েছে। কিন্তু আজ রাজ্যপালের কাছে গিয়ে জানা গেছে আট শতাধিক দুর্বৃত্ত গ্রেপ্তার হয়েছে। এ বিষয় নিয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি কটাক্ষ করেন। এদিকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহা জানান সন্ত্রাসের কারণে কয়েক হাজার মানুষ বাড়ি ছাড়া। তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে দাবি জানান তিনি সরকারের কাছে। এবং রাজ্যপালের কাছে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংসদীয় প্রতিনিধি দলটি এদিন দাবি জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য