স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১০ মার্চ : রাজ্যের দ্বিতীয় রেফারেল হাসপাতালে চরম রক্ত সংকটে ভুগছে রোগীরা। অসহায় ভাবে দিন গুজরাতে হচ্ছে রোগীর পরিজনদের। দিশেহারা আইজিএম হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এবং রোগীর পরিজন। শত শত শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে এসে রক্তের জন্য খোঁজ করছে অসহায় মা-বাবা। এই চরম সংকট সৃষ্টি হওয়ার পেছনে মূল কারণ হলো গত তিন মাস ধরে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল এবং অফিস আদালতের কর্মীরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
হয়নি নির্ধারিত সময় অনুযায়ী রক্তদান শিবির করতে পারে নি। যদিও সারা বছর বিভিন্ন শুভ কাজ উপলক্ষে রক্তদান শিবির সংগঠিত হওয়ার পরেও রক্তের সংকট দেখা যায় ব্লাড ব্যাংক গুলির মধ্যে। কিন্তু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে লক্ষ্য করা যায় জানুয়ারি মাসে তিনটি ভলেন্টিয়ার রক্তদান শিবির এবং ফেব্রুয়ারি মাসে দুটি ভলেন্টিয়ারি রক্তদান শিবির হয়েছে। যা চাহিদা তুলনায় অনেক কম। যার ফলে রক্তের জোগান মুখ থুবড়ে পড়েছে। হাসপাতালে প্রতিদিন বহু থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর মা বাবা এবং দুর্ঘটনা গ্রস্ত রোগীর মা বাবা এসে রক্তের খোঁজ করছেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো মিলছে না রক্ত। যদি রোগীর পরিজন ডোনার নিয়ে আসে তাহলে পরীক্ষা করে রক্ত দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। গত দুদিন ধরে ব্লাড ব্যাংক পুরোপুরিভাবে শূন্য হয়ে পড়ায় শুক্রবার সকালে আইজিএম ব্লাড ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন অবিলম্বে যাতে সকলে রক্ত দিতে এগিয়ে আসে।
এখন পর্যন্ত ১২০ জনের অধিক থ্যালাসেমিয়া রোগীর মা বাবা রক্তের জন্য হাসপাতালে প্রতিদিন এসে ঘোরাফেরা করছে। ব্লাড ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে আইজিএম হাসপাতালের মধ্যেই রবিবার সকাল দশটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত এক রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছে। এই শিবিরে সকলে এগিয়ে এসে রক্তদান করার জন্য আবেদন জানায় কর্তৃপক্ষ। তাদের অভিমত যদি মানবতার দৃষ্টিতে রক্তদান করতে মানুষ এগিয়ে আসে তাহলে কচিকাঁচা শিশুদের হয়তো জীবন বাঁচবে। নিরুপায় তাদের মা বাবা রক্তের জন্য দিকে দিকে ঘুরছে। তাদের অভিমত যদি রক্তের সন্ধান মিলে তাহলে তাদের শিশুর জীবন বাঁচবে। কারণ রক্ত তো সবাই ঝড়াতে পারে, কিন্তু রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচানোর মহৎ কাজ সকলে করে দেখাতে পারে না। এ সংকট দূর করতে মানুষ জাতপাত, ভয় ভীতি এবং হিংসা বিদ্বেষ ভুলে যদি অবিলম্বে এগিয়ে আসে তাহলে বেঁচে যাবে বহু মানুষের জীবন। রোগীর জন্য না হলে, অন্তত সেই মায়ের জন্য রক্ত দান করুন যে তার সন্তান হারানোর বেদনা সহ্য করতে পারে না। তবে সচেতন মহলের অভিমত রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত নতুন সরকার একবার যদি রক্তদানকে দায়িত্ব হিসাবে বিবেচনা করা শুরু করে প্রতি সাপ্তাহে বিধানসভা ভিত্তিক রক্তদান শিবিরের উদ্যোগ গ্রহণ করে, তাহলে হাসপাতালে রোগীদের জন্য আর রক্তের অভাব হবে না। যাই হোক আইজিএম ব্লাড ব্যাংক কর্তৃপক্ষের আহ্বান অনুযায়ী আগামী রবিবার সকলে যাতে রক্তদান শিবিরে এগিয়ে আসে তার জন্য আহ্বান জানান কর্তৃপক্ষ।