স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৮ মার্চ : মন্ত্রী সভা থেকে বাদ পড়েছেন মনোজ কান্তি দেব। হতাশ কমলপুর বাসী। ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনের মতই এবারও কমলপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজয়ী প্রার্থী মনোজ কান্তি দেবকে নিয়ে প্রত্যাশিতভাবে মন্ত্রিত্বের স্বপ্ন বুনে ছিল সাধারণ মানুষ। কিন্তু বুধবার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান কমলপুরবাসীকে পুরোপুরিভাবে নিরাশ করে। প্রত্যাশা ছিল এবারও মন্ত্রিত্ব পেয়ে যাবেন মনোজ কান্তি দেব। কিন্তু দেখা গেছে একের পর এক বিজেপি প্রার্থী শপথ নিলেও মনোজ কান্তি দেবের নাম ঘোষণা হয়নি। তারপরেই মাঠ থেকে বের হতে শুরু হয় দলীয় কর্মীরা। এদিকে যারা কমলপুর থেকে সংবাদ মাধ্যমের চ্যানেলে বসে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান দেখছিলেন তারাও এক প্রকার ভাবে হতাশ হয়ে পড়ে।
দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এই খবর। কমলপুরবাসীর বক্তব্য তারা প্রত্যাশিত ছিল ধোলাই জেলা থেকে মনোজ কান্তি দেব মন্ত্রিত্ব পেতে চলেছেন। কিন্তু দেখা গেছে ধলাই জেলা থেকে কেউ মন্ত্রিত্ব পায়নি। তাদের বক্তব্য গত পাঁচ বছরে মনোজ কান্তি দেব এলাকায় বহু কাজ করেছেন। এবার তিনি মন্ত্রীত্ব না পাওয়ায় তারা অত্যন্ত ব্যথিত বলে জানান। কমলপুরে এক দোকানি জানান, আজ হোলির দিন। তারা দোকানে আবির প্রচুর পরিমাণে কিনে রেখেছিল। মনোজ কান্তি দেব মন্ত্রী হলে এলাকায় তারা রঙ খেলবে। কিন্তু এদিনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান তাদের আশাহত করে দিয়েছে। আরো জানান ধোলাই জেলায় কোন মন্ত্রিত্ব না দিয়ে ঊনকোটি জেলায় মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়েছে। এটা তাদের অপ্রত্যাশী। তাই দাবি করা হচ্ছে যাতে মনোজ কান্তি দেবকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়। দেখার বিষয় দলের হাই কমান্ড ধলাই জেলাবাসীর দাবি পূরণ করে কিনা।
এদিকে প্রত্যাশা অনুযায়ী মন্ত্রিত্ব থেকে বঞ্চিত হল খোয়াই জেলা। খোয়াই জেলায় মোট ৬ টি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে। ৬ টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে কল্যাণপুর প্রমোদ নগর, তেলিয়ামুড়া ও কৃষ্ণপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছে বিজেপি প্রার্থী। অপরদিকে খোয়াই কেন্দ্রটি নিজেদের দখলে রাখতে সক্ষম হয়েছে সিপিআইএম। বাকি দুইটি কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছে তিপ্রা মথা। বিজেপি যে তিনটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছে তার মধ্যে কল্যাণপুর প্রমোদ নগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হওয়া পিনাকী দাস চৌধুরী এইবার মন্ত্রিত্বের দাবিদার ছিলেন। কারন জেলা সভাপতি হিসাবে তিনি দক্ষতার সাথে সংগঠন সাজিয়েছেন। তাছাড়া সাংগঠনিক দক্ষতা রয়েছে ওনার। তার উপর দুইবারের বিধায়ক। অপরদিকে তেলিয়ামুড়া কেন্দ্রের বিধায়িকা কল্যাণী রায়ও এবার মন্ত্রিত্বের দাবিদার ছিলেন। পিনাকী দাস চৌধুরীর পরেই মন্ত্রিত্বের দাবিদার ছিলেন কল্যাণী রায়। কিন্তু হতাশ হতে হয়েছে দুই জনকেই। খোয়াই জেলা থেকে মন্ত্রিত্ব পেয়ে যান কৃষ্ণপুর কেন্দ্রের বিধায়ক বিকাশ দেববর্মা। প্রথমবার বিধায়ক হয়েই বাজিমাত করেছেন তিনি। এইদিন তিনি মন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন। বিকাশ দেববর্মাকে মন্ত্রী করার ফলে এক প্রকার হতাশ খোয়াই জেলা বাসী। গোটা খোয়াই জেলায় ভদ্রলোক হিসাবে পরিচিত পিনাকী দাস চৌধুরী। তাছাড়া তিনি জেলা সভাপতি। তাই সকলের আশা ছিল হয়তো পিনাকী দাস চৌধুরী এইবার মন্ত্রী হবেন। কারন তিনি মন্ত্রী হলে গোটা খোয়াই জেলার উন্নয়নে তিনি কাজ করবেন। কিন্তু মন্ত্রিত্ব থেকে বঞ্চিত থাকতে হল পিনাকী দাস চৌধুরীকে। অপরদিকে কল্যাণী রায়ের মন্ত্রিত্ব নিয়েও আশাবাদী ছিলেন তেলিয়ামুড়াবাসি। কিন্তু তাও হল না। খোয়াই জেলার শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মহলের মতে মন্ত্রী সভায় নতুন করে কাউকে স্থান দেওয়া হলে বিধায়ক পিনাকী দাস চৌধুরীকে গুরুত্ব দেওয়া হোক। তাহলে খোয়াই জেলায় বিজেপি দলের জন্য ভালো হবে। দল আরও শক্তিশালী হবে খোয়াই জেলায়।