Saturday, May 31, 2025
বাড়িরাজ্যদীর্ঘ চার ঘন্টা পর বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে শেষ শ্রদ্ধা জানালো বামফ্রন্ট এবং...

দীর্ঘ চার ঘন্টা পর বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে শেষ শ্রদ্ধা জানালো বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৯ ফেব্রুয়ারি : চড়িলামে রাজনৈতিক খুন হওয়া শহীদ মিঞার মৃতদেহ জিবি হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় যে কলঙ্কিত অধ্যায় রচিত হয়েছিল তার পুনরাবৃত্তি ঘটলো রবিবার। এদিন ঘটনার বিবরণে জানা যায়, শনিবার গভীর রাতে রামচন্দ্রঘাট বিধানসভা কেন্দ্রের ৪৩ নং বুথ দ্বারিকাপুর এলাকায় সি পি আই এম কর্মী দিলীপ শুক্লদাসের নেতৃত্বে ৮-১০ জন গ্রাম প্রধানের বাড়িতে হামলা চালায়। পাল্টা প্রতিরোধে আহত হয় সি পি আই এম কর্মী দিলীপ শুক্ল দাস। পরে জিবি হাসপাতালে নিয়ে আসলে মৃত্যু হয় তার।

রবিবার মৃতদেহ দুপুর বেলা ময়না তদন্তের পর জিবি হাসপাতাল থেকে ছাড়া হলে পুলিশের সাথে সিপিআইএম দলের নেতৃত্বদের কথা হয় যে মৃতদেহ কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা মধ্য দিয়ে আগরতলা মেলার মাঠ স্থিত সিপিআইএম রাজ্য কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পর মৃতদেহ খোয়াই পার্টি অফিসে নিয়ে যাওয়া হবে। তারপর মৃতদেহ কল্যাণপুর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেই অনুযায়ী মৃতদেহ নিয়ে জিবি হাসপাতালের মর্গ থেকে রওনা হওয়ার পর কুঞ্জবন এলাকার হেরিটেজ পার্ক সংলগ্ন এলাকায় আসতে মৃতদেহ নিয়ে পুলিশ ডান দিকে বাক নিয়ে খোয়াই উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তখন সিপিআইএম কর্মী সমর্থকরা শববাহী গাড়ি আটকে রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু করে। সৃষ্টি হয় চরম উত্তেজনা। উপস্থিত ছিলেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী, বামফ্রন্টের আহ্বায়ক নারায়ন কর, প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে সহ বহু কর্মী সমর্থক। দীর্ঘক্ষণ সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী বাকযুদ্ধ হয় এস ডি পি ও পারমিতা পান্ডের সাথে। পুলিশ কোনক্রমেই অনুমতি দিতে না চাইলে পরিস্থিতি আরো বেশি উত্তেজিত হয়ে উঠে। সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন, দেশে কি কোনো আইন রয়েছে? জোর করে পুলিশ মৃতদেহ খোয়াই নিয়ে যেতে চাইছে। কিন্তু মৃত ব্যক্তির ছেলে বলার পরেও মৃতদেহ সিপিআইএম রাজ্য দপ্তরে নিয়ে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। পুলিশের কাছে মর্গে ১৫ মিনিটের জন্য সিপিআইএম রাজ্য কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। পুলিশ প্রথমে অনুমতি দিলেও পরবর্তী সময় মৃতদেহ নিয়ে অমানবিকতা দেখিয়ে নিয়ে যেতে দিচ্ছে না। চরম বর্বরতার পরিচয় পুলিশের।

 তিনি বলেন রাজ্য পুলিশের মহা নির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন দাবি করছেন ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে খুন হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই অমিতাভ রঞ্জনকে রাজ্য পুলিশের মহা নির্দেশক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার কারণে এ ধরনের বর্বরতা। যেখানে মানুষকে প্রাণে বাঁচাতে পারেনি সেখানে আবার মৃতদেহ শেষ শ্রদ্ধা জানাতে দিচ্ছে না। এক প্রকার ভাবে তালিবানি নিয়ম চলছে বলে জানান তিনি। আরো বলেন রাজ্যে বিজেপির বর্বরতার শাসন শেষ হতে চলেছে। তাই এবার মানবতা লংঘন করতে শুরু করেছে বিজেপি। এর চাইতে আর লজ্জার কিছু হতে পারে না। পরবর্তী সময়ে সেখানে ছুটে যান কংগ্রেস নেতা সুদীপ রায় বর্মন। পুলিশ আধিকারিকদের কাছে জানতে চাওয়া হয় কোন আইনের রয়েছে যে মৃতদেহ শ্রদ্ধা জানাতে দলীয় অফিসে নিয়ে যাওয়া যাবে না ? তার পরিপ্রেক্ষিতে কোন জবাব দিতে পারেনি পুলিশের অধিকারিক। তারপর দীর্ঘ চার ঘন্টা পর বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে মৃতদেহ শেষ শ্রদ্ধা জানাতে মৌন মিছিল করে সার্কিট হাউস সংলগ্ন গান্ধী মূর্তির পাদদেশে নিয়ে আসে। সেখানে পুষ্পাজ্ঞ অর্পণ করে শেষ শ্রদ্ধা জানান বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার সহ বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা। এদিন উপস্থিত বিরোধী দলনেতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বলেন দলীয় অফিসে নিয়ে কর্মীকে শ্রদ্ধা জানাতে না দেওয়া পুলিশের দুর্বলতা। এবং এর মধ্যে এক রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ কাজ করেছে। রাজনৈতিক নেতৃত্ব ডিজিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। এবং সেই রাজনৈতিক নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে ডিজি এই ভূমিকা নিয়েছে। এটা সমর্থনের যোগ্য নয়। এটা গণতন্ত্রের জন্য কাম্য নয় বলে জানান বিরোধী দলনেতা। পরে মৃতদেহ কল্যাণপুর বাসভবনের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য

error: <b>Alert: </b>Content selection is disabled!!