স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৮ ফেব্রুয়ারি : ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর থেকে রাজ্য জুড়ে শুরু হয়ে গেছে নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাস। রাজ্য জুড়ে নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাসের জেরে আতঙ্কিত সাধারন মানুষ। প্রশাসনের উপর ভরসা হারিয়ে ফেলছে সাধারন মানুষ। রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতীরা হামলা চালাচ্ছে সাধারন মানুষের বাড়ি ঘরে। নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে মানুষের সম্পত্তি, রোজগারের উৎস। ভোট গ্রহণের পর থেকে বিশালগড় বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। হামলা চালানো হয়েছে বিধানসভা এলাকার বিভিন্ন বাড়ি ঘরে। ভাংচুর করা হয়েছে যাত্রীবাহী অটো সহ বাড়ি ঘর। শনিবার সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শনে যান বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার।
সাথে ছিলেন বামফ্রন্টের আহ্বায়ক নারায়ন কর, প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে সহ অন্যান্যরা। বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার কথা বলেন সংশ্লিষ্ট এলাকার সাধারন মানুষের সাথে। এলাকার যুবকদের তিনি পরামর্শ দেন রাতের বেলায় এলাকায় নৈশ প্রহরা দেওয়ার জন্য। পরে এক সাক্ষাৎকারে বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার জানান, এবার নির্বাচনে মানুষকে পয়সা দিয়ে প্রলুদ্ধ করার চেষ্টা করেছে বিজেপি। কিন্তু মানুষ প্রলুব্ধ না হওয়ায় এখন তারা বুঝতে পারছে তাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে। তাই হতাশা গ্রস্থ হয়ে এখন সন্ত্রাস শুরু করেছে বিজেপি। ২০১৮ সালের পূর্বেও নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু কখনো এই ধরনের ঘটনা ঘটে নি। দুই একটি স্থানে বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটলেও তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার কঠোর হাতে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে। নির্বাচনে জয় পরাজয় রয়েছে। এই জয় পরাজয়কে সকলকে মেনে নিতে হবে। কিন্তু এখন বিজেপি যেগুলি করছে সেটা গণতন্ত্রের উপর শ্রদ্ধা নিদর্শন নয়।
বর্তমানে যে সকল ঘটনা ঘটছে তার বিরুদ্ধে কথা না বলে মুখ্যমন্ত্রী উল্টো কথা বলে চলেছেন। একটা এলাকার সকলে এক দলের লোক নাও হতে পারে। কিন্তু সকলকে মিলেমিশে চলতে হবে, থাকতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর এই বিষয়ে প্ররোচনামূলক কথা না বলা জরুরি বলে জানান তিনি। বিশালগড়ের পর রানীরবাজার দেবীনগর চাকরিচ্যুত ১০,৩২৩ শিক্ষক সত্যজিৎ দের বাড়িতে যান বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার, বামফ্রন্টের আহ্বায়ক নারায়ন কর, এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক মানিক দে সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। কথা বলেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সাথে। ভোটের দিন রাতের বেলা সত্যজিৎ দে -র বাড়িতে হামলা সংগঠিত হয়েছিল। এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত তারা হল মানিক দেবনাথ, সৈকত সাহা, বিশ্বজিৎ এবং পাপ্পু সাহা সহ মোট ১২ জন। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অসহায় শিক্ষকের সাথে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আহ্বান জানান বিরোধী দলনেতা। নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাসের জেরে রাজ্য জুড়ে সাধারন মানুষের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। প্রশাসনের উপর ভরসা হারাচ্ছে সাধারন মানুষ। অবিলম্বে প্রশাসন নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাস বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে রাজ্যে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে অভিমত অভিজ্ঞ মহলের।