স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৪ ফেব্রুয়ারি : ত্রিপুরায় বিজেপি’কে পরাস্ত করার জন্য কংগ্রেসের সাথে বামফ্রন্ট আসন সমঝোতা করে লড়াই করছে। কিন্তু জয়ী হয়ে দুই দল থেকে কারা মন্ত্রিসভার সদস্য হবেন সে বিষয়ে কোনো আলোচনা বামফ্রন্ট বা কংগ্রেসের পক্ষ থেকে করা হয়নি। বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস উভয়ের মূল লক্ষ্য হলো জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করা।
মঙ্গলবার আগরতলা প্রেসক্লাবে মিট দ্য প্রেসে সাংবাদিকদের প্রশ্ন উত্তরে এই কথাগুলি বলেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী। আরো প্রশ্নোত্তরে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন কমিশনের জিরো পুল ভায়োলেন্সের আশ্বাস অনুযায়ী মানুষ আশ্বস্ত হয়েছে। কারণ গত পাঁচটি বছর যারা ভোটাধিকার হারিয়েছেন, তাদের মধ্যে আশার আলো জেগেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের আশ্বাসে। বিশেষ করে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জিরানিয়ায় রাজনৈতিক সন্ত্রাসের যে ঘটনাটি সংগঠিত হয়েছে সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশন যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তাতে জনগণের মধ্যে আরও বেশি ভরসা জেগেছে। তবে গত কয়েকদিনে যে বিক্ষিপ্ত ঘটনাগুলি সংঘটিত হয়েছে তাতে নির্বাচন কমিশনের জিরো পুল ভায়োলেন্সের প্রতিশ্রুতি কিছুটা সামঞ্জস্যহীন। কারণ সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনায় বুঝা গেছে নির্বাচন কমিশনে মধ্যে এখনো ধ্যান-ধারণা রয়েছে তাদের কর্তাকে খুশি করে চলতে হবে।
তাই ধ্যান ধারণা ছেড়ে নির্বাচন কমিশন পূর্ণশক্তি প্রয়োগ করার মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করুক। আরো বলেন রাজ্যের জনগণ স্থির করে নিয়েছে যে কোন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। জিতেন্দ্র চৌধুরী সরকার প্রতিষ্ঠা নিয়ে বলেন বিজেপির সাথে জোট হওয়া আইপিএফটি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। সুতরাং বিজেপি লড়াই ময়দানে একা হয়ে যাবে। তাই গত এক সপ্তাহ ধরে রাজ্যের মানুষ বুঝতে পারছে ত্রিপুরায় জোট সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। নাম উল্লেখ না করে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের কথাই বোঝাতে চাইলেন শ্রী চৌধুরী। তবে বামফ্রন্টের যে সরকার পরিচালনায় ২৫ বছরে কিছুটা ভুল ত্রুটি ছিল সেটাতো তিনি এক প্রকারভাবে এদিন স্বীকার করে নিলেন। তিনি বলেন সরকারে থাকা অবস্থায় এগুলি নজরে আসে না। সরকার থেকে সরে আসলে সে বিষয়গুলি নজরে আসে। আগামী দিনে যাতে এই ভুল ত্রুটিগুলি সংশোধন করা যায় সেদিকে গুরুত্ব দেবে বামফ্রন্ট। নাহলে আবার ভুল হবে বলে ভুল সংশোধনের কথা বললেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জিতেন্দ্র চৌধুরী। এদিন বিজেপিকে পরাস্ত করার প্রসঙ্গে জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন আগামী দুই মার্চের পর বিজেপির আর অস্তিত্ব থাকবে না। ত্রিপুরায় পুনরায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। সুতরাং কোন দলীয় সরকার নয়। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে বলে তিনি জানান সাংবাদিকদের প্রশ্ন উত্তরে বলেন। সাংবাদিকদের আরো এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন বিধানসভার ৬০ টি আসনের মধ্যে বিজেপির অনুকূলে কোন একটি আসনও নেই যে বিজেপি জয়ী হতে পারবে বলে আশাবাদী। তাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অন্যান্য রাজ্যের নির্বাচন ফেলে রেখে ত্রিপুরায় ঘাটি করে গত কয়েকদিন ধরে বসে আছেন। এবং কয়েকজনকে ডেকে বৈঠক করেছেন। কিন্তু তারপরও কোন লাভ হবে না। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে পরাস্ত করে গোটা দেশকে একটা বার্তা দেবে বলে আশা ব্যক্ত করলেন জিতেন্দ্র চৌধুরী।