স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১১ ফেব্রুয়ারি : গত পাঁচ বছরে এডিসিকে গলা টিপে হত্যা করার চেষ্টা করেছে বিজেপি ও আইপিএফটি জোট সরকার। কিন্তু ক্ষমতায় আসার আগে প্রতিশ্রুতি ছিল তিপ্রাল্যান্ড করার। কিন্তু পাঁচটি বছর এডিসি-র অপমান করে বুঝিয়ে দিয়েছে তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করে ক্ষমতায় এসেছে। এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও ভিলেজ কমিটির নির্বাচন হতে দেওয়া হয় নি।
বরং আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবারো জনজাতিদের নতুন করে স্বপ্ন দেখানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। আসলে ভারতীয় জনতা পার্টি জনজাতিদের বিন্দুমাত্র সন্মান দেয় না। তারা ভাবে এ রাজ্যের জনজাতিরা মূর্খ, মানুষের পর্যায়ে নয়। তাই জনজাতিদের নিয়ে পাঁচ বছর ছিনিমিনি খেলেছে। আসন্ন নির্বাচনে এই বিজেপিকে উচিত শিক্ষা দিতে হবে। শনিবার ৩৬ শান্তিরবাজার সিপিআই মনোনীত প্রার্থী সত্যজিৎ রিয়াং -এর সমর্থনে নির্বাচনী সভায় বিজেপিকে আক্রমণ করে এই কথাই বললেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী। তিনি এদিন বক্তব্যে তিপ্রা মথাকে আক্রমণ করতে ভুল করেন নি। তিনি প্রশ্ন তুলেন আসন্ন নির্বাচনে যদি ভারতীয় জনতা পার্টির হয়ে তিপ্রা মথা ভোট কাটে তাহলে তাদের মানুষ জনগণের শত্রু বলা হবে নাকি মিত্র বলা হবে? কারণ তিপ্রা মথাকে বলা হয়েছিল ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক জোটে শামিল হয়ে বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগ হতে না দেওয়ার জন্য। যাতে বিজেপির ঝুলি শূন্য হয়। তাদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে বলেন বিজেপিকে হটাতে আলাদা মঞ্চ কেন করেছে তারা। এখনো সময় আছে এক মঞ্চে আসার জন্য বলে জানান জিতেন্দ্র চৌধুরী। তিনি মানুষকে কংগ্রেস এবং বামফ্রন্টের সম্মিলিত প্রয়াসের সমর্থনে ভোট দেওয়ার আহবান জানিয়ে আরো বলেন, বিজেপি শুধু সিপিআইএম আর কংগ্রেসের শত্রু নয়। তারা জনগণের শত্রু। ২০১৮ সালের আগে সরকার প্রতিষ্ঠা করতে বিজেপি বলেছিল ডাবল ইঞ্জিনের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে ত্রিপুরায় উন্নয়ন ডাবল হবে। গ্রামের রেগার কাজ দ্বিগুণ হবে, মজুরি দ্বিগুণ হবে, ভাতা ৩ গুণ হবে, পাঁচ বছরের ৭ লক্ষ বেকার রোজগার পাবে, কর্মচারীদের বেতন দ্বিগুণ হবে, প্রত্যেক মহকুমায় হাসপাতাল, কলেজ হবে। রাজ্যের মানুষ তাদের এই প্রলোভনের ফাঁদে পা দিয়ে ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনের আগে অক্লান্ত পরিশ্রম করে এ সরকারকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। কিন্তু কোন কিছুই হয়নি।
তিনি আরো বলেন, গত পাঁচটি বছরে যেসব যুবকদের মদ, মাংস খাইয়ে মানুষের বাড়ি ঘর, বিরোধী দলের অফিস ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করিয়ে চরিত্র নষ্ট করেছে, তাদের জন্যও কিছু করেনি এই জোট সরকার। বরং সেই যুবকদের নামের আগে গুন্ডা বদমাশ জড়িয়ে দিয়ে পাঁচটি মূল্যবান বছর কেড়ে নিয়েছে বিজেপি। রাজ্যের কৃষক, শ্রমিক অংশের মানুষের জীবন থেকে পাঁচটি বছর কেড়ে নিয়েছে। কোন মূল্যবান প্রকল্প তাদের জন্য নতুন করে গ্রহণ করা হয়নি। আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে ইশতেহার গবেষণা করেছে তার মধ্যে কর্মচারী, বেকার, কৃষক ও শ্রমিকদের জন্য একটি প্রতিশ্রুতিও নেই। জিতেন চৌধুরী এদিন আরো বলেন গত পাঁচ বছর ত্রিপুরা রাজ্যে থানা পুলিশ ইঞ্জিনিয়ার সহ সরকারি আধিকারিকদের হাতের পুতুল হিসেবে ব্যবহার করেছে বিজেপি। এবং আইন পরিচালনা করার অধিকার না থাকলেও ছাপ্পা ভোটে অনির্বাচিত বিজেপির জনপ্রতিনিধিরা ত্রিপুরা আইন পরিচালনা করার চেষ্টা করে সংবিধান বহির্ভূত কাজ করেছে। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরা রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে পর আগামী দুই মার্চ থেকে ত্রিপুরা রাজ্যে আর তাদের এই শাসন চলবে না। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। তাই ভারতীয় জনতা পার্টি আতঙ্কিত বলে সমালোচনা করলেন জিতেন্দ্র চৌধুরী। আয়োজিত সভায় এদিন মনোনীত প্রার্থী সহ স্থানীয় সিপিআইএম নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।