স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২০ জানুয়ারি : গত ১৮ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটা সময় নির্বাচন ঘোষণার ১৫ মিনিটের মধ্যে জিরানিয়ায় কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল তা নিয়ে নড়েচড়ে বসলো জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো জিরানিয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারি হিমাদ্রি দাসকে। অপরদিকে দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে জিরানিয়া থানা ওসি নাড়ু গোপাল দেব এবং রানীবাজার থানার ওসি আশীষ সরকারকে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় নির্বাচন কমিশন কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই ঘটনার সম্পর্কে বিস্তারিত অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার দুপুর তিনটার সময় রাজ্যের মুখ্য সচিব জে কে সিনহা এবং পুলিশের মহা নির্দেশক অমিতাভ রঞ্জনের কাছ থেকে রিপোর্ট গ্রহণ করেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে সেদিন কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনের কোন অনুমতি না নিয়ে মিছিল সংঘটিত করেছে। ঘটনায় আহত প্রদেশ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক ড. অজয় কুমারের অসুস্থতা গুরুতর নয়। অল্প বিস্তারে আহত হয়েছেন তিনি। কিন্তু সে রিপোর্ট পেয়েও নির্বাচন কমিশন রাজ্যের মুখ্য সচিব এবং পুলিশের মহা নির্দেশককে কড়া হুঁশিয়ারি দেন। নির্বাচন কমিশন নির্দেশিকা বলেছেন গত ১৮ জানুয়ারি জিরানিয়া এলাকায় যে রাজনৈতিক উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল তার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে। জাতীয় নির্বাচন কমিশন বিবৃতি দিয়ে প্রকাশ করে বলেছেন, জিরানিয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারি হিমাদ্রি দাসকে সাময়িক বরখাস্ত করার জন্য।
জিরানিয়া থানা ওসি নাড়ু গোপাল দেব এবং রানীবাজার থানার ওসি আশীষ সরকারকে দায়িত্ব থেকে সরানো জন্য। শুধু তাই নয় রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে কেন রাজ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে আধা সামরিক বাহিনী থাকার পরও সেদিন ঘটনার সময় ব্যবহার করা হয়নি। এই ধরনের গাফিলতির জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে তিনজনের একটি পর্যবেক্ষক টিম গঠন করা হয়। এই পর্যবেক্ষকের টিমটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ত্রিপুরা রাজ্যে সঠিকভাবে আধা সামরিক বাহিনী করা হচ্ছে কিনা সে বিষয়টি নজর রাখার জন্য। এবং নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেসব ঘটনা ত্রিপুরা রাজ্যে সংঘটিত হচ্ছে সেগুলি পুরো রিপোর্ট নির্বাচন কমিশনের কাছে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য। বিবৃতিতে নির্বাচন কমিশন আরো স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন কোন পার্টি যাতে মিছিল মিটিং সহ বিভিন্ন কর্মসূচি করতে বাধা প্রাপ্ত না হয়। কোন পার্টি নেতৃত্ব যদি কোন ধরনের নিরাপত্তার প্রয়োজন হয় বা কোন কর্মসূচি করতে নিরাপত্তার দাবি জানায় তাহলে যাতে সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা হয় তার জন্য কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছে মুখ্য সচিব এবং পুলিশের মহানির্দেশককে। এবং এই দুই অফিসার সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে কিনা দেখার জন্য দায়িত্বে রয়েছেন রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক কিরণ গিত্যে। পাশাপাশি আবারো নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য পুলিশের মহা নির্দেশক এবং মুখ্য সচিব যাতে নিরপেক্ষ ভূমিকা গ্রহণ করেন। আরো বলা হয়েছে যদি নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন অফিসার যেকোন রাজনৈতিক দলের পক্ষপাতিত্ব করার চেষ্টা করেন তাহলে যাতে সঙ্গে সঙ্গে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। অপরদিকে সুবিধা অ্যাপ মাধ্যমে যাতে নির্বাচনী কর্মসূচি জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আধিকারিককে অবগত করা হয়েছে। যে রাজনৈতিক দল কর্মসূচির জন্য প্রথম অনুমতি চাইবে সে রাজনৈতিক দলকে যাতে অনুমতি দেওয়া হয় বলে নির্দেশিকা স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এদিন।