স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৪ জানুয়ারি : আইন-শৃঙ্খলার দিক থেকেও ভালো জায়গায় রয়েছে ত্রিপুরা রাজ্য। কিন্তু বিরোধীরা বিভিন্ন সময় আইন-শৃঙ্খলার অবনতি করে তার দায় বর্তমান সরকারের উপর চাপাতে চাইছে। তারা সব সময় এমনটা করে থাকে। তাদের ইতিহাস সকলের জানা। জাতি জনজাতি সকলকে নিয়ে কাজ করতে চায় বর্তমান সরকার। সেই দিশাতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। শান্তি সম্প্রীতি না থাকলে কোন অবস্থায় উন্নয়ন সম্ভব নয়। বুধবার রাজধানীর রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের এক নং হলে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সরকারের রিপোর্ট কার্ড তুলে ধরে এমনটা বলেন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা।
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যা বলেন তাই করে দেখান। রাজ্য সরকারও সেই দিশাতে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী ত্রিপুরা রাজ্যকে হিরা মডেল দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। হীরা মডেল বলতে গেলে প্রথমেই আসে হাইওয়ের কথা। রাজ্যে বর্তমানে ছয়টি জাতীয় সড়কের কাজ চলছে। নতুন করে আরও সাতটি জাতীয় সড়কের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। চারটি রোফ ওয়ের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। চুড়াইবাড়ি থেকে আগরতলা পর্যন্ত জাতীয় সড়ক ফোরলেন করা হচ্ছে। এইসকল কাজের জন্য ১০ হাজার ২২২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে তৃতীয় গেটওয়ে হতে যাচ্ছে ত্রিপুরা রাজ্যে। ত্রিপুরা থেকে বর্তমানে এগারটি এক্সপ্রেস ট্রেন বহিরাজ্যে যাচ্ছে। আগে ত্রিপুরা রাজ্যে মিটারগেজ রেল পরিষেবা ছিল। বর্তমানে ব্রডগেজ রেল পরিষেবা চালু হয়েছে। গুহাটি ও আগরতলা মধ্যে ইন্টারসিটি রেল পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা। তিনি আরও বলেন এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ার দিশাতে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে ত্রিপুরা রাজ্যের। জিবি হাসপাতালে নয়টি সুপার স্পেশালিটি বিভাগ চালু করা হয়েছে। চিকিৎসকদের পদোন্নতির ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলা হাসপাতাল গুলিকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মহকুমা হাসপাতাল ও জেলা হাসপাতাল গুলিতে পরিষেবা উন্নত করা গেলে জিবি হাসপাতালে রোগীর চাপ কিছুটা হ্রাস পাবে। সড়ক নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে হাইওয়ে পেট্রোলিং-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। গভীর রাতে রাজ্যের মানুষ বর্তমানে রাস্তায় বের হতে পারে। মানুষের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হয়েছে। এটা মানুষ অনুভব করছে। মহিলা পুলিশ দ্বারা পরিচালিত সাতটি থানা চালু করা হয়েছে।
সহসাই আমবাসাতে একটি মহিলা থানা চালু করা হবে। সাধারণ ডিগ্রী কলেজ গুলিতে ছাত্রীদের বিনামূল্যা পড়ালেখা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকারি চাকুরির ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। সরকার ও সাধারণ মানুষের মধ্যে যেন সমন্বয় সাধন করা যায়, তার জন্য আমার সরকার নামে একটি পোর্টাল চালু করা হয়েছে। সম্প্রতি রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের ১২ শতাংশ ডিএ দেওয়া হয়েছে। তার আগে ধাপে ধাপে ৩ শতাংশ ও ৫ শতাংশ ডিএ দেওয়া হয়েছে। তার জন্য কাউকে আন্দোলন করতে হয়নি। বর্তমান সরকার যা বলে তাই করে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা। অপরদিকে অনুষ্ঠানের বক্তব্য রাখতে গিয়ে উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা বলেন ত্রিপুরা রাজ্যকে নতুন দিশাতে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে বর্তমান রাজ্য সরকার। প্রতিটি ক্ষেত্রে একটা মাইলস্টোন তৈরি করেছে বর্তমান সরকার। এটা সাধারণ বিষয় নয়। এটা প্রশংসার দাবি রাখে। তিনি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান তুলে ধরে দাবি করেন বর্তমান সরকার যেভাবে উন্নয়নমূলক কাজ করছে, এই ধরনের কাজ ইতিপূর্বে অন্য কোন সরকার করেনি। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী, উপমুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল, মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব, রাজ্যের মুখ্য সচিব জে.কে সিনহা সহ অন্যান্য আধিকারিক।