স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৪ জানুয়ারি : রাজ্যের জলসেচ ব্যবস্থা নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুললো সারা ভারত কৃষক সভা। বুধবার সারা ভারত কৃষক সভা রাজ্য কমিটি অফিসে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে সারা ভারত কৃষক সভার রাজ্য কমিটির সম্পাদক পবিত্র কর বলেন, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর চম্পক নগরে দুটি ছড়াতে বাঁধ দেওয়া কথা বলেছিলেন। যার ফলে জল সেচ ও খাওয়ার জলের আর কোন সমস্যা হবে না। এক্ষেত্রে ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে বলেছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
এর জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অর্থ অনুমোদন করে দিয়েছেন। এর জন্য গত ১৬ নভেম্বর আর টি আই এর মাধ্যমে জবাব চাওয়া হয়েছে। এতে জানা যায় ত্রিপুরা সরকারকে এই বাঁধ নির্মাণের জন্য এক টাকাও বরাদ্ধ করে নি কেন্দ্রীয় সরকার। এর জন্য ৬০০ কোটি টাকার অধিক চাওয়া হয়েছিল, কিন্তু একটা টাকাও দেয়নি সরকার। এই তথ্য রাজ্য সরকারের কাছ থেকে জানা গেছে। রুদ্র সাগরে একটি জল সেচের ৪৪৮ হেক্টর জমিতে প্রকল্প করার কথা ছিল। ২০২১ সালে ৭৩.২৪ কোটি টাকা ডিপিআর জমা পড়েছিল। গত ১৬ নভেম্বরের তথ্য অনুযায়ী দেখা যায় অনুমোদিত একটাকাও সেচ প্রকল্পের জন্য আসেনি বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন এই সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তার কোনটাই পালন করতে পারছে না। এছাড়াও চার হাজার একশো দশ হেক্টর জমির জন্য ডিপ টিউবেলের মাধ্যমে ৯৭ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু এই প্রকল্পেও কেন্দ্রীয় সরকার এক টাকাও দেয়নি। রাজ্য সরকারের এ ধরনের উদাসীনতার কারণে ৮০ শতাংশ জল সেচ ব্যবস্থা অকেজো হয়ে পড়ে আছে। কৃষকরা ফসল উৎপাদন করতে পারছে না। এবং যে পাম্প মেশিন গুলি জল সেচের জন্য রয়েছে সেগুলি পর্যন্ত মেরামত করা হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার স্পষ্ট জানিয়েছেন তাদের বাজেটে এক টাকাও নেই। এতে দেখা গেছে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার মত অর্থ রাশি দিয়ে জল সেচের ব্যবস্থা করার কথা ছিল সরকারের। কিন্তু এক টাকাও এর মধ্যে আসেনি জলসেচের জন্য। এদিকে গ্রামীণ জল প্রকল্পে ক্ষেত্রেও সরকার এক প্রকার ভাবে মানুষকে হতাশ করেছে। পবিত্র কর এ বিষয়ে বলেন হাজার হাজার টাকা ব্যয় করে সরকার বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছানোর বিজ্ঞাপন দিয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞাপনের জন্য এখন পর্যন্ত কত টাকা ব্যয় হয়েছে সে বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছিল কিন্তু সেটা দেওয়া হয়নি। কারণ এই সরকার ঘরে ঘরে জল পড়ছে দেওয়ার জন্য সংকল্পবদ্ধ ছিল। যদিও দেখা যায় মানুষ জল পায়নি। জলের জন্য প্রতিদিন মানুষ রাস্তা অবরোধ থেকে শুরু করে বিভিন্নভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি সংঘটিত করে চলেছে। রাজ্যবাসীকে এক প্রকার ভাবে ফাঁকি দিয়ে চলেছে এই সরকার বলে জানান শ্রী কর। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এই দিনের ছাড়া উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নেতৃত্ব মতিলাল সরকার ও রতন দাস।