Saturday, January 18, 2025
বাড়িরাজ্য২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিপিআইএম কর্মীকে বাড়ি ছাড়ার হুমকি, পুলিশ বললো ঠাকুর ভরসা,...

২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিপিআইএম কর্মীকে বাড়ি ছাড়ার হুমকি, পুলিশ বললো ঠাকুর ভরসা, তাদের হাত পা বাধা!

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৯ ডিসেম্বর : এ কেমন পরিস্থিতি ? থানায় গিয়ে মিলছে না ভরসা। পুলিশ বলছে তাদের হাত পা বাধা ! ভরসা ভগবান! শেষ পর্যন্ত বিশালগড় থানা থেকে বাড়ি ফিরে এসে অফিস টিলার বাসিন্দা সাগর চক্রবর্তীর মা বাবা সংবাদ মাধ্যমের দ্বারস্থ হয়ে ছেলের প্রান ভিক্ষা চাইলেন। অথচ নির্বাচন এখনো ঘোষণা হয়নি। এর আগেই সন্ত্রাস গোটা বিশালগড় মহকুমা কালো ছায়া বিস্তার করেছে। এ কেমন রাজনীতি শাসক দলের ? প্রশ্ন বিশালগড় অফিস টিলা এলাকার সাধারণ মানুষের। উল্লেখ্য, গত ৪ ডিসেম্বর রাত আটটার নাগাদ বিশালগড় মধ্যলক্ষ্মী বিল ৩ নং গৌতম কলোনি স্থিত সুবীর দাসের বিয়ের অনুষ্ঠানে যায় অফিসটিলার সাগর চক্রবর্তী।

 বিয়ের অনুষ্ঠানে শাসক দলের দুষ্কৃতীকারিরা সাগরকে বিয়ের মন্ডপে ফেলে বেধড়ক মারধর করে। শাসক দুর্বৃত্তদের বক্তব্য সে সিপিআইএম করতে পারবে না। গত কয়েকদিন সাগর সিপিআইএমের বেশ কয়েকটি মিছিল মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেছে। তাই তারা তাকে আক্রমণ সংঘটিত করেছে। অপরদিকে সাগরের বন্ধু এবং তার আত্মীয়-স্বজনদের ঘরে আটকে রাখে শাসকদল আশ্রিত দুর্বৃত্তরা তাকে মারধর করেছে বলে সাগরের মার অভিযোগ। সাগরকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসতে পারেনি। একটা সময় সাগর সুযোগ বুঝে তাদের হাত থেকে বাঁচতে দৌড়ে জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। রাত দুটো নাগাদ সে অফিসটিলা বাড়িতে আসে। তার এই অবস্থা দেখে তার মা-বাবা হতচকিত হয়ে পড়ে। সোমবার সকালে তাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয় বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো শেষ পর্যন্ত সাগরের মাছ যখন বিশালগড় থানায় মামলা দায়ের করতে যায় তখন সেই মহিলাকে শুনতে হয়েছে পুলিশের অসহায়ত্বের কথা। সাগরের মা জানায় পুলিশের কাছে মামলা করতে গেলে পুলিশ জানায়, নির্বাচন এসেছে কত কিছু হবে, এতকিছুর মধ্যে কান দিয়ে পারবে না। মামলা করতে এসেছেন, এতে বাড়িঘর পুড়বে, তখন কে সামাল দেবে ? পুলিশের তো হাত-পা বাঁধা। ঠাকুর ভরসা! ঠাকুরকে ডাকার জন্য বলেন পুলিশ অফিসার, এমনটাই অভিযোগ সাগরের মার। এমনকি মন্ডল নেতাদের এফ আই আর -এর রিসিভ কপির মধ্যে কোন স্বাক্ষর দেয় নি পুলিশ।

বৃহস্পতিবার মামলা করে আসার পর শুক্রবার বাড়ির সামনে বাইক বাহিনী এসে সাগরের মাকে জিজ্ঞাসা করে মামলা করার পর কি হয়েছে। আবার ফোনেও হুমকিতে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার জন্য সাগরকে। নাহলে প্রানে মেরে ফেলবে এবং তার বাড়ি ঘর পুড়ে দেবে। সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এমনটাই অভিযোগ জানান সাগরের মা।

সাগরের মা যাদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন তারা হলেন শাসন তোলে ক্যাডার মিল্টন দাস, রঞ্জিত নমঃ, সুকান্ত দাস, শানু দাস, বলাই দত্ত, বিশ্বজিৎ দত্ত এবং ভাস্কর দাস। তারা সকলে বিশালগড় মন্ডলের নেতা। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় তাসের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে রেখেছে বিজেপি নেতারা। মানুষ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারে না। যদিও দীর্ঘ পৌনে পাঁচ বছর মানুষের ভরসা ছিল থানায় মামলা করলে অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হবে। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে যে মামলা করতে গেলে রাষ্ট্রপতি কালার্স প্রাপ্ত পুলিশ বলছে তাদের অসহায়ত্বের কথা। সুতরাং মন্ডল যা বলবে সেটাই করবে পুলিশ। এমনটাই আকার ইঙ্গিতে বোঝাতে চাইছে থানা বাবুরা। নির্বাচন আসার আগেই এ ধরনের নতুন রাজনীতি আমদানি করে চলেছে বিশালগড়ের বিজেপি নেতারা। পরিস্থিতি আগামী দিনে কোন দিকে নিয়ে যাবে সেটা বলা মুশকিল হয়ে পড়েছে বলে মনে করছে আপামন জনগণ। আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ এখন নিরাপত্তার দাবি জানাচ্ছে সরকারের কাছে। কিন্তু সরকার নামে ৪০ লক্ষ রাজ্যবাসীর হলেও, দলের জন্য কেন প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে সেটা নিয়েও জনমনে প্রশ্নের দানা বাধছে। কিন্তু যে পুলিশ বাবুদের জনগণের করের পয়সা দিয়ে বেতন পায়, তারাই এখন শাসক দলের যে দলদাস তা বারবারই প্রমাণ করে দিচ্ছে। কিন্তু তাদের বেতন কোন মন্ডল অফিস থেকে মেলে না। সেটা হয়তো ভুলে গেছে একাংশ পুলিশ অফিসার। সেই হুঁশ কীভাবে পুলিশের, জানতে চায় মানুষ।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য