Saturday, January 25, 2025
বাড়িরাজ্যমৃত্যুদন্ড ঘোষণা আদালতের

মৃত্যুদন্ড ঘোষণা আদালতের

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৩ নভেম্বর : ২০২১ সালে ২৬ নভেম্বর গভীর রাতে খোয়াই থানা এলাকার লালটিলা গ্রামের শেওড়াতলীতে প্রদীপ দেব রায় নৃশংসভাবে খোয়াই থানার সেকেন্ড অফিসার সত্যজিৎ মল্লিক সহ মোট পাঁচজনকে হত্যা করেছিল। এই ঘটনার পর খোয়াই থানা মামলা নিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করে।

২৮ জনের সাক্ষী পর্ব শেষে বুধবার সন্ধ্যায় খোয়াই জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক শংকরী দাস এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। এই মামলায় অভিযুক্ত প্রদীপ দেব রায়কে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং দুজনকে হত্যার চেষ্টার অপরাধে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচজনকে হত্যা করার জন্য বিচারক অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন বলে জানান সরকারি আইনজীবী বিকাশ দেব।  

উল্লেখ্য, সেদিন খোয়াই থানাধীন উত্তর রামচন্দ্র ঘাট পঞ্চায়েতের লালটিলা শেওরাতলি গ্রামে দুই শিশু, তার ভাই, এক পুলিশ ইন্সপেক্টর, এক অটো যাত্রী সহ মোট পাঁচজন খুন হয়েছিল। সেদিন রাতের বেলায় পুলিশ প্রদীপকে গ্রেফতার করে। পরবর্তী সময় প্রদীপের ছোট ভাই রাজু দেব রায়ের অভিযোগ মূলে পুলিশ মামলা হাতে নিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করে। পরবর্তী সময়ে পুলিশ অভিযুক্ত প্রদীপকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে জানতে পারে সেদিন রাতের বেলা সে তার নিজ দুই কন্যা সন্তান মন্দিরা দেবরায় এবং অদিতি দেব রায় কে কাঠের লাকড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করেছে। বিষয়টির প্রত্যক্ষ করে তার স্ত্রী মনিপাল দেব রায় ঘরের মধ্যে চিৎকার শুরু করলে লোহর শাবল দিয়ে আঘাত করে।

মিনা পাল চিৎকার করে ঘরের পেছনে দরজা খুলে জঙ্গলে গিয়ে আত্মরক্ষা করে। কিন্তু তারপরও এই নরপিচাশ থামেনি। অভিযুক্তের ছোট ভাইয়ের বউ চিৎকার শুনে পাশের ঘর থেকে ছুটে এসে বড় ভাই অমলেশ দেবরায়ের ঘরে প্রবেশ করতে চাইলে শাবল দিয়ে বড় ভাইয়ের মাথায় আঘাত করে। অমলেশ এই আক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে চাইলেও তাকেও ছাড়েনি। তার বড় ভাইকেও মাটিতে ফেলে হত্যা করেছিল। শেষ পর্যন্ত পানে বাঁচতে প্রদীপের মা ও অমলেশ দেববায়ের ছোট মেয়ে প্রান রক্ষার্থে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তী সময় স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ পুলিশ পৌঁছালে প্রদীপ ৪ টি এস এর জওয়ান ও দুই পুলিশ কর্মী উপর হামলে পড়ার চেষ্টা করে। কিন্তু প্রদীপের আক্রোশ থেকে প্রাণ বাঁচাতে পারল না এই পুলিশ অফিসার সত্যজিৎ মল্লিক। প্রদীপ শাবল নিয়ে পুলিশ অফিসার সত্যজিৎ মল্লিকের মাথায় আঘাত করে। তারপর অতিরিক্ত নিরাপত্তা কর্মীর জন্য ঘটনাস্থল থেকে দৌড়ে পালায় পুলিশ এবং টি এস আর জওয়ানরা। কিন্তু সেই সময়ের মধ্যে লালটিলা রাস্তার উপর অটো রিক্সা যাওয়ার সময় সে হামলে পড়ে কৃষ্ণ দাস নামে এক যাত্রীকে হত্যা করে। এবং কৃষ্ণ দাসের ছেলে কর্নবীর দাসও এদিন আহত হয়েছিল প্রদীপের হামলায়। অভিযুক্ত প্রদীপ দেবরায়ের এ ধরনের হত্যার লীলা খোয়াই লালটিলা এলাকার মানুষের কাছে আজও রুমহ্ষক। এদিন আদালতের রায়ে খুশি স্থানীয়রা।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য