স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১ ডিসেম্বর : ২০২০ সালের ২৬ আগস্ট ১০ দফা দাবিকে সামনে রেখে আগরতলার প্যারাডাইস চৌমুহনিতে আন্দোলন সংগঠিত করে সিপিআইএম। পুলিশ ও প্রশাসনের আগাম কোন অনুমতি ছাড়াই সভা করে সিপিআইএম। পরে তাদের গ্রেপ্তার করা হলে বাধার মুখে পড়তে হয় পুলিশকে। এই ঘটনায় বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার, বিধায়ক বাদল চৌধুরী, সিপিআইএম নেতা মানিক দে, পবিত্র কর , গৌতম দাস, শঙ্কর প্রসাদ দত্ত, মধুসূদন দাস, কৃষ্ণা রক্ষিত ও রানা দাসের নামে পশ্চিম থানার সাব-ইন্সপেক্টর সঞ্জীব লস্কর সমঠো মামলা নেয়।
এই মামলার তদন্ত করে পুলিশ চার্জ শিট পেশ করে। আদালত বুধবার তাদের হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ জারি করে। ৯ জনের মধ্যে গৌতম দাস প্রয়াত হয়েছেন। বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার সহ বাকী ৮ জন এদিন আদালতে হাজির হয়। পি আর বন্ডে জামিনের জন্য আবেদন জানায়। আদালত দু পক্ষের শুনানির পর প্রত্যেক ব্যক্তিকে ৩০ হাজার টাকার বন্ডে এবং একজন করে জামিনদারের মাধ্যমে জামিন মঞ্জুর করে। ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত কোভিড পরিস্থিতির কারনে জমায়েত, সভা, মিছিল করার উপর বিধি নিষেধ ছিল। কিন্তু সেই সময় নিয়ম লঙ্খন করে প্যারাডাইস চৌমুহনিতে সভা করে সিপিআইএম। পুলিশ তাদের জায়গা খালি করার জন্য বললেও সিপিএম কর্মী ও নেতারা জায়গা ছাড়েনি। পুলিশকে বাঁধা দান ও হেনস্থা করার ঘটনায় এই মামলা দায়ের করা হয় বলে জানান সরকার পক্ষের আইনজীবী বিদ্যুৎ সুত্রধর।
এদিকে আইনজীবী হরিবল দেবনাথ জানান, সিপিআইএম সেদিন মানুষের দাবি-দাওয়া নিয়ে রাস্তায় নেমেছিল। কিন্তু পরবর্তী সময় পুলিশ দল দাসে পরিণত হয়ে সরকারের নির্দেশে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। যাতে নেতৃত্বদের হেনস্থা করা যায়।
তবে এদিন জামিনের পর বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান বিগত বছর ২৬ আগস্ট জনগণের স্বার্থে ১৬ দফা দাবিতে জাতীয় প্রতিবাদ দিবস এবং দাবি দিবসের কর্মসূচি উপলক্ষে প্যারাডাইস চৌমুহনিতে কয়েক হাজার মানুষ জমায়েত হয়েছিল। পুলিশ গ্রেপ্তার করতে চেয়েছিল নেতৃত্বদের। তখন ক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ। সেদিন দাবিগুলি ছিল কোভিড পরিস্থিতিতে মানুষের কাজ খাদ্যের ব্যবস্থা করা এবং হাসপাতালগুলিতে সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তোলা। কারণ তখন রাজ্যে লকডাউন হয়েছিল, বিভিন্ন সংস্থা থেকে কর্মচ্যুত হয়ে যায় বহু শ্রমিক। গরিব মানুষের কাজ ও খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছিল। হাসপাতালগুলোতে কোভিড রোগীদের সঠিক ব্যবস্থা ছিল না। সরকারের চূড়ান্ত ব্যর্থতা ও পারফরম্যান্স শূন্য ছিল। মানুষ যাতে কৈফিয়ত চাইতে না পারে এবং সোচ্চার হতে না পারে তার জন্য মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি স্তব্ধ করতে এ ধরনের মামলা গ্রহণ করা হয়। এটা স্বৈরাচারী জনবিরোধী, জনবিচ্ছিন্নতা হয়ে কল্পিত অভিযোগ করে কোর্টে নিয়ে আসা ছাড়া আর কিছু নয়। কিন্তু ব্যর্থতায় এভাবে বেশিদিন ঢেকে রাখা যায় না। এভাবে তো মানুষকে ঘরে আটকে রাখতে পারবে না তারা। মানুষকে বেঁচে থাকতে কাজ এবং খাদ্যের দরকার। তাই তারা মানুষকে আটকে রাখতে চাইছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। ২৫ জানুয়ারি পরবর্তী সময় দেওয়া হয়।