Thursday, March 28, 2024
বাড়িরাজ্যসি পি আই এম এবং বি জে পি দলের সংঘর্ষ, আহত বহু

সি পি আই এম এবং বি জে পি দলের সংঘর্ষ, আহত বহু

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৩ নভেম্বর :  “আমারও আমাদের ছেলেদের আর চুরি পরিয়ে রাখবো না, আমারও প্রস্তুত! কিন্তু আমরা চাই না অশান্তি হোক। আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটুক।”২১ নভেম্বর জিবি হাসপাতালে দাঁড়িয়ে প্রাক্তন সংসদ ঝর্ণা দাস বৈদ্যের এ ধরনের মন্তব্য ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খোয়াই মাইলিজ দিল দলের কর্মীরা। বামেদের মিছিলে হামলা করতে এসে বিজেপির দুর্বৃত্তদের কালঘাম ছুটলো বুধবার। ঘটনাস্থলে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুরুতর আহত ১২ জন বিজেপি কর্মী।

 শেষ পর্যন্ত প্রানে বাঁচতে বাকি বিজেপি কর্মীরা এদিন গণহারে পুকুরে ঝাঁপ দিয়েছে। আবার কেউ কেউ দোকানে প্রবেশ করে আত্মরক্ষা করেছে। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, খোয়াই সিঙ্গিছড়ার বেলতলায় বাম মিছিলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে বিজেপি আশ্রিত দুর্বৃত্তরা। তারপর পাল্টা প্রতিরোধ করে তোলে সিপিআইএম কর্মীরা। আহতরা হলেন সাগর ঘোষ, অম্লান ঋষি দাস, অমিত দাস, লিটন সাহা, গোপাল পাল, সুশান্ত দেবনাথ, সন্তোষ দাস, সঞ্জয় নাথ শর্মা, কৃষ্ণ দেব রায়, অভিজিৎ ঘোষ, রাকেশ দাস, প্রদেশ তাঁতি। আহত গোপাল পাল, সন্তোষ দাস এবং সঞ্জয় নাথ শর্মার অবস্থা আশঙ্কা জনক হওয়ায় খোয়াই জেলা হাসপাতাল থেকে জিবিতে পাঠানো হয়। তারা সকলে বিজেপি কর্মী বলে দাবি। অপর দিকে সিপিএমের পক্ষ থেকে দাবি ৫ থেকে ৭ জন কর্মী সমর্থক এদিন তাদের আহত হয়েছে। পুরো ঘটনাটি পুলিশ টি এস আর সহ আধা সামরিক বাহিনীর কঠোর বলয়ের মধ্যে সংঘটিত হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোন সতর্কতা না থাকার কারণে এদিনের ঘটনাটি সংগঠিত হয়েছে বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের।

এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে সিপিএম দলের পক্ষে প্রাক্তন বিধায়ক পবিত্র কর অভিযোগ করেন, এদিন মিছিলটি শুরু হওয়ার সময় খবর আসে সিঙ্গিছড়া এলাকায় বিজেপির দুর্বৃত্তরা লাঠিসাটা নিয়ে জমায়েত হয়েছে। সাথে সাথে স্থানীয় বিধায়ক কথা বলেন পুলিশ আধিকারিকদের সাথে। পুলিশের পক্ষ থেকে মিছিলটি কিছুক্ষণ পর শুরু করার জন্য বলা হয়। তারপর কিছুক্ষণ পর সিপিআইএমের মিছিলটি যখন সেই এলাকাতে যায় তখন পুলিশের সামনেই দা, লাঠি নিয়ে বিজেপি দুর্বৃত্তরা আক্রমণ করতে আসে। শেষ পর্যন্ত সিপিআইএম কর্মীরা পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলে। কিন্তু তারপরও বিজেপির দুর্বৃত্তদের হামলায় ৫ থেকে ৬ জন কর্মী সমর্থক আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জিবি হাসপাতালে আনা হয়েছে বলে জানান পবিত্র কর। বিজেপির দুর্বৃত্তরা রামদা নিয়ে আক্রমণ করতে এসেছিল। কিন্তু সিপিআইএম কর্মীদের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। তাই পাল্টা প্রতিরোধ করে তুলে সাহসিকতার সাথে প্রতিহত করে এই মিছিল সংঘটিত করেছে। এর জন্য কর্মীদের ধন্যবাদ জানান তিনি। এদিনের ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে গেছে বিজেপির পায়ের নিচে মাটি নেই। পুরা দলটাই গুন্ডাদের উপর নির্ভর হয়ে গেছে। তাই এখন তারা পুলিশকে মানছে না। আর এটাই বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী সুশাসন বলে কটাক্ষ করলেন তিনি। এবং এভাবেই আগামী দিন দুঃশাসনে সরকার উৎখাত করতে মানুষ এগিয়ে আসবে বলে এক প্রকার ভাবে বিজেপিকে করা হুঁশিয়ারি দিলেন শ্রী কর। 

অন্যদিকে বিজেপি খোয়াই মন্ডলের সভাপতি সুব্রত মজুমদার অভিযোগ করেন “ঘর ঘর বিজেপি” এই কর্মসূচিকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে যুব মোর্চার কর্মীরা এদিন সিঙ্গিছড়া এলাকায় তাদের প্রচার সজ্জার কাজ করছিল। এমন সময় প্রাক্তন বিধায়ক পবিত্র কর, পদ্ম কুমার দেববর্মা এবং বিধায়ক নির্মল বিশ্বাসের নেতৃত্বে একটা মিছিল দুর্গানগর থেকে সিঙ্গি ছড়া হয়ে বেলতলির দিকে যাচ্ছিল। মিছিলে সিপিএম দুষ্কৃতিকারীরা রড, লাঠি, ইট পাটকেল নিয়ে বিজেপি কর্মীদের উপর চড়াও হয়। তাদের এই আক্রমণে মোট ১২ জন কর্মী রক্তাক্ত হয়। তিনজনকে পাঠানো হয় জিবিতে। ২০২৩ -এ খোয়াইবাসী এর জবাব দেবে সিপিআইএমকে। এর জন্য সিপিআইএমকে প্রস্তুত থাকতে আহ্বান জানান তিনি। 

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় সিপিএম দলের একটি মিছিল আসার আগেই ৪০-৫০ জন বিজেপি যুব মোর্চার কর্মীরা রাস্তার উত্তর পাশে পিকেটিং করতে বসে। বিজেপি কর্মীদের স্লোগানের পরেই হঠাৎ সিপিএম দলের মিছিল থেকে কুড়ি পঁচিশ জন যুবক পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সামনে দিয়ে গিয়ে হামলা চালায় বিজেপি কর্মীদের উপর। যখন দু দলের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায় তখনো মহকুমা পুলিশ আধিকারিক নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেননি। ফলে দুই দলের মধ্যে লঙ্কার কান্ড সৃষ্টি হয়।

কিন্তু পুলিশের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা অভিযোগ তুলেছে। পুলিশ যদি সঠিক সময়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করত তাহলে এই ঘটনা সংঘটিত হতো না। পুলিশের অভিজ্ঞতার অভাবে এবং চরম গাফিলতিতে এই দিনের ঘটনা সাক্ষী রইল খোয়াইবাসী।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য