স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৮ নভেম্বর : মঙ্গলবার মহাকরণের কনফারেন্স হলে সর্বদলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। স্পেশাল সামারি রিভিশন -২০২৩- কে সামনে রেখে এর আয়োজন করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। বৈঠকে পৌরহিত্য করেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক কিরণ গিত্যে। ভোটার তালিকার সামারি রিভিশনের কাজ শুরু হবে ৯ নভেম্বর থেকে। তাই রাজ্যের সমস্ত স্বীকৃতি প্রাপ্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করা হয়। বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে একটি পওয়ার প্রেজেন্টেশন রাখা হয়।
রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের বক্তব্য শোনেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক, জেলা শাসক, মহকুমাশাসক, বি এল ও। ১০০ শতাংশ স্বচিত্র পরিচয় পত্র এবং প্রায় ১০০ শতাংশ আধার কার্ড সংযুক্তিকরণ করার বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হবে বলে জানান মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক কিরণ গিত্যে। স্বচ্ছ ভাবে গোটা পক্রিয়া সম্পন্ন করা নিয়ে আশ্বস্ত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। যাদের নাম এই ভোটার তালিকায় নেই তাদের বুধবার থেকে অন লাইন বা অফ লাইনে নথিভুক্ত করার আহ্বান জানান তিনি। যাদের বয়স ১ জানুয়ারী ২০২৩ সালে ১৮ বছর পূর্ণ হবে তাদের নামও নথিভুক্ত করা হবে। এবার থেকে যাদের বয়স ১৭ বছর পূর্ণ হয়েছে তারাও আবেদন করতে পারবে। ১৮ বছর পূর্ণ হলে নিজে থেকেই নাম ভোটার তালিকায় নাম উঠে যাবে বলেও জানান তিনি। সমস্ত কলেজ গুলিতে স্পেশাল ক্যাম্প করা হবে। ১০০ শতাংশ নতুন ভোটারের নাম তালিকায় নথিভুক্ত করতে এই বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক কিরণ গিত্যে।
তিনি আরও জানান ব্রু -দের নাম তোলার কাজ চলছে। এখনো পর্যন্ত ৫০ শতাংশের নাম নথিভুক্ত হয়েছে ভোটার তালিকায়। আগামী মাসে তা ১০০ শতাংশ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। যারা পুনর্বাসন কেন্দ্রে আসছেন তাদের নাম নথিভুক্ত করার হচ্ছে বলে জানান তিনি। নির্বাচন আসন্ন। তাই দ্রুত তাদের নাম নথিভুক্ত করার পক্রিয়া চালাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এই ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক কিরণ গিত্যে।
এদিনের সর্ব দলীয় বৈঠকে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস ছাড়াও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বিজেপি-র পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয় ভোটার তালিকায় বহু নাম দুইবার করে ছিল। এই ধরনের ৩৭ হাজার নাম চিহ্নিত করে ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানানো হয়েছে এই ধরনের নামের তালিকা বের করে তদন্ত করে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য। স্বচ্ছ ভোটার তালিকা তৈরির মাধ্যমে নির্বাচন করার দাবি জানানো হয়েছে বিজেপি-র পক্ষ থেকে।
এদিকে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রাক্তন বিধায়ক আশীষ কুমার সাহা এবং তপন দত্ত দাবি করেন শাসকদলের পক্ষ থেকে ভুয়া ভোটার অর্থাৎ যাদের আঠারো বছর পূর্ণ হয়নি তাদের নাম তোলার ক্ষেত্রে যে প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে। এটা যাতে কোন অবস্থাতেই না হয়। আরো বলা হয়েছে আসন্ন বিধানসভায় নির্বাচন যাতে স্বচ্ছ হয়, তার জন্য যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে আধা সামরিক বাহিনীর ব্যবস্থা করা হয়।
এদিকে সিপিআইএমের পক্ষ থেকে সিপিআইএম পশ্চিম জেলা কমিটির সম্পাদক রতন দাস নির্বাচন কমিশনের মুখ্য আধিকারিকের কাছে দাবি করেন যারা নাম তোলার কাজে জড়িত তারাও আক্রান্ত হচ্ছে। এ রাজ্যে গণতন্ত্রের কোন পরিবেশ নেই। তাই নতুন ভোটারদের নাম তালিকায় লিপিবদ্ধ করতে যাতে নির্বাচন কমিশন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে সে বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের মুখ্য আধিকারিকের কাছে অভিযোগ তুলে বলেছেন গত সাড়ে চার বছরে যতগুলো নির্বাচন রাজ্যে হয়েছে কোনটাই সুষ্ঠুভাবে হয় না। নির্বাচন কমিশনের পরবর্তী সভায় এ বিষয়ে তুলে ধরা হবে বলে জানানো হয়েছে।