স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৭ সেপ্টেম্বর : প্রচুর সংখ্যক অনিয়মিত শ্রমিক আগরতলা পুর নিগমের দীর্ঘদিন ধরে নিযুক্ত রয়েছে। এই সকল শ্রমিকদের মধ্যে অনেকে রাস্তা ও নর্দমা পরিষ্কারের সাথে যুক্ত। আবার অনেকে ড্রাইভার ও অফিসের দৈনন্দিন কাজের সাথে যুক্ত রয়েছে। কেউ কেউ আবার ম্যালেরিয়ার স্প্রে এবং ওয়ার্ডের আবর্জনা ও নর্দমা পরিষ্কারের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এই ধরনের অনিয়মিত ২,১৬৩ জন শ্রমিক আগরতলা পুর নিগম বিভিন্ন কাজের সাথে যুক্ত রয়েছে। এই সকল শ্রমিকরা পূর্বতন সরকারের সময় থেকে মজুরি বৃদ্ধির জন্য দাবি জানিয়ে আসছিল। বর্তমান সরকার আগরতলা মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের ক্ষমতায় আসার পর অনিয়মিত শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবির প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়। তাদের এই দাবিগুলি পর্যালোচনা করার পর বর্তমান সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ২,১৬৩ জন শ্রমিকের মজুরি দিন প্রতি মাথাপিছু ৫২ টাকা করেছে। মঙ্গলবার সিটি সেন্টারস্থিত আগরতলা পুর নিগমের কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই সংবাদ জানান আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার।
তিনি আরও জানান বাড়ি বাড়ি গিয়ে ময়লা পরিষ্কারের জন্য মোট ৪১৭ জন অনিয়মিত মহিলা শ্রমিক নিযুক্ত রয়েছে। এই সকল শ্রমিকদের উৎসাহ ভাতা বা ইন্সেন্টিভ প্রতিমাসে ৫০০ টাকা করে বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়েছে। চুক্তিবদ্ধ কর্মচারীদের কথা মাথায় রেখে সর্বমোট ২৯ জন চুক্তিবদ্ধ কর্মচারীকে প্রতি মাসে ৩,০০০ টাকা করে বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তগুলি কার্যকর করার ক্ষেত্রে আগরতলা মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের মোট বছরে ৪ কোটি ২৯ লক্ষ ৯৩ হাজার ৩০৭ টাকা ব্যয় হবে। এই খরচ আগরতলা মিউনিসিপ্যালিটির নিজস্ব আয় থেকে বহন করা হবে বলেও জানান তিনি। আসন্ন শারদীয়া দুর্গা উৎসবের প্রাক-প্রস্তুতি হিসাবে কাউন্সিল ও এমআইসি মিটিং করে নিয়েছে। আসন্ন দুর্গোৎসবে যেন আগরতলা শহর আরো বেশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও আলোকময় থাকে এবং পুজোয় যেন মানুষের কোন প্রকার অসুবিধা না হয়, দুর্গো উৎসব যেন সার্বিকভাবে নির্বিঘ্নে কাটে তার জন্য পুর নিগমের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।এই প্রথমবারের মতো আগরতলা পুর নিগম সিদ্ধান্ত নিয়েছে পৌরনিগম এলাকার সকল ক্লাব, সংস্থা, পূজা কমিটি ও পূজা উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রাইজমানি সহ সুদৃশ্য ট্রফি দিয়ে পুরস্কৃত করা হবে। সেরার সেরা প্রতিমা, সেরার সেরা মন্ডপ, সেরার সেরা থিম, সেরার সেরা আলোকসজ্জা ও সম্পূর্ণ মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত পূজার জন্য পুরস্কৃত করা হবে। এই পাঁচটি পুরস্কার সমগ্র আগরতলা শহরের জন্য দেওয়া হবে। সঙ্গে থাকবে ৫০ হাজার টাকা করে প্রাইজমানি ও ট্রফি।
আবার জোন ভিত্তিক দেওয়া হবে আরও চারটি করে পুরস্কার। জোন ভিত্তিক সেরা প্রতিমা, সেরা মন্ডপ, সেরা থিম, সেরা আলোকসজ্জার জন্য পুরস্কার প্রদান করা হবে। সঙ্গে থাকবে ২৫ হাজার টাকা করে প্রাইজমানি ও ট্রফি। সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রেখে বিচারকদের রায় অনুসারে পুরস্কার দেওয়া হবে। কোন ক্ষেত্রে একই ক্যাটাগরিতে বিচারকদের রায়ে অনুসারে যদি দুইটি ক্লাব পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হয়, সেক্ষেত্রে প্রাইজমানি সমানভাবে ভাগ করে দেওয়া হবে। পুর নিগমের চারটি জোনে ইতিমধ্যে পূজার অনুমতি ফর্ম এবং এই পুরস্কারের প্রদানের জন্য আবেদনপত্র বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানান পুর নিগমের মেয়র দিপক মজুমদার।
সাংবাদিক সম্মেলনে নিগমের মেয়র আরও জানান প্রতিমা নিরঞ্জন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষে আগরতলা পুর নিগমের পক্ষ থেকে দশমি ঘাটের ব্যাপক সংস্কার করা হয়েছে। এছাড়াও বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত গুলির মধ্যে রয়েছে এইবার দশমী ঘাটে বাদ্যযন্ত্র, ডিজে সিস্টেম নিয়ে দশমী ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জনের স্থানে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে আগরতলা পুর নিগমের পক্ষ থেকে বাদ্যযন্ত্র এবং মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। দশমী ঘাটের জন্য অস্থায়ী শৌচালয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিমা নিরঞ্জনের তিন শিফটে পর্যাপ্ত শ্রমিকের ব্যবস্থা রাখা হবে। আগরতলা পুর নিগমের পক্ষ থেকে মঙ্গলিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য দশমী ঘাটে পর্যাপ্ত ঢাকির ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য দুটি ক্রেনের ব্যবস্থা রাখা হবে। প্রতি ক্লাবকে এক বস্তা করে ব্লিচিং পাউডার ও তিনটি করে ডাস্টবিন সরবরাহ করা হবে। পঞ্চমী থেকে দশমী পর্যন্ত প্রতিটি ক্লাবে দুইজন করে শ্রমিক দেওয়া হবে।