স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা। ১ ডিসেম্বর : তিপরা মথা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের ব্যর্থতার ফসল হল ওয়ান নর্থ ইস্ট। এই ওয়ান নর্থ ইস্ট দ্বারা মানুষকে কাছে টানার জন্য আবারো নতুন কৌশল খুঁজতে শুরু করেছে প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মন সহ অন্যান্য উত্তর পূর্বাঞ্চলের নেতৃত্ব। এই গুরুতর রাজনৈতিক প্রতারণার অভিযোগ তুলেছেন প্রদেশ বিজেপি-র নেতৃত্ব তথা প্রাক্তন সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা। সোমবার প্রদেশ বিজেপি কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি বলেন, কোন আঞ্চলিক দল কখনো স্থায়ী হতে পারে না।
শুধু একটা দাবি ও ইস্যু নিয়ে আন্দোলন করে তারা। মানুষকে ভুল বুঝিয়ে এবং মিথ্যা স্বপ্ন দেখিয়ে জনজাতিদের নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করে। তাদের কৌশল যখন সাধারণ মানুষ বুঝে ফেলে তখন সেসব আঞ্চলিক দলের নেতৃত্ব আবার নতুন করে দল তৈরি করে। এটাই আঞ্চলিক দলগুলির ইতিহাস বলে। যা আবারো উঠে এসেছে গত ২৭ নভেম্বর স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে ওয়ান নর্থ ইস্ট দলের জনসভায় মধ্য দিয়ে। এদিনের জনসমাবেশে উত্তর পূর্বাঞ্চলের কিছু রাজনৈতিক নেতৃত্ব ছিলেন। তারা দাবি করেছেন এটা ওয়ান নর্থ ইস্টের জনসমাবেশ, কিন্তু লক্ষ্য করা গেছে মাঠে ছিল তিপরা মথার দলীয় পতাকা সহ বিভিন্ন প্রচার সজ্জা। প্রাক্তন সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা আরো বলেন, তিপরা মথার মূল দাবি ছিল গ্রেটার তিপরাল্যান্ড। এই দাবি এখন তাদের মুছে গেছে। তারা জনজাতিদের কাছে আনার জন্য এই দাবি তুলেছিলেন। এছাড়াও গত কয়েক বছরে জনজাতিদের জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করে মথা।
কিন্তু কোন প্রতিশ্রুতি পালন করতে না পেরে এখন বাহানা বের করেছে ওয়ান নর্থ ইস্ট নামে নতুন রাজনৈতিক প্লাটফর্ম। এই প্লাটফর্মের মাধ্যমে আবারও জনজাতিদের বোকা বানানোর চেষ্টা করছে। এমনকি গত ২৭ নভেম্বর সবার থেকে বিভিন্নভাবে জাতিগত সুড়সুড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন নেতৃত্ব। কিছু যুবক দিয়ে এমন কিছু ভাব ভঙ্গিমা করেছে যার জঙ্গলি মুভিকে পর্যন্ত হার মানায়। তিনি আরো বলেন, বিজেপি আসার পর সবচেয়ে বেশি লাভ হয়েছে ত্রিপুরার রাজ পরিবারের। রাজ পরিবার থেকে সাংসদ হয়েছেন কৃতী সিং দেববর্মন। যার কারনে প্রদ্যুৎ বাবু উচ্চ স্বরে কথা বলার সাহস পেয়েছেন। কথায় কথায় দিল্লির সঙ্গে কথা বলার সাহস দেখান তিনি। নাহলে এই সাহস তিনি পেতেন না। মনমোহন সিং প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন অবস্থায় প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মণ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থাকার পরেও এমন সাহস দেখাননি তিনি। প্রদ্যুৎ বাবু বলছেন ২০২৮ সালে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হবে কোন জনজাতি ব্যক্তি। কিন্তু জনজাতি ব্যক্তি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হলেই সব সমস্যার সমাধান হবে এমন কোন কথা নয়।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী দশরথ বাবুও ছিলেন। কিন্তু ত্রিপুরার জনজাতির এত বিকাশ বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলের হয়েছে। কিন্তু ভারতীয় জনতা পার্টি যোগ্য ব্যক্তিকে সঠিক সম্মান দিতে জানে। যেমন প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মাকে তেলেঙ্গানার রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন। এর জন্য কোন জনজাতিকে আন্দোলন করতে হয় নি। একই সাথে তিনি বলেন ত্রিপুরার এডিসিতে ৫০ টি আসন করার জন্য কেন্দ্রের কাছে দাবি জানানো আছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের বাকি রাজ্যগুলিকে বঞ্চিত করে একমাত্র ত্রিপুরার জন্যই সুযোগ চালু করা সম্ভব নয়। প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মনের আরো সমালোচনা করে প্রাক্তন সাংসদ বলেন, প্রদ্যুৎ বাবু বাবার সম্মানে চেয়ে বেশী দাদুর সম্মানের বাঁচতে পছন্দ করেন। উনার বাবা কীরিট বিক্রম তিনবার সংসদ ছিলেন এবং উনার মা বিভু দেবীও কংগ্রেসের সাথে যুক্ত ছিলেন। তারপরেও প্রদ্যুৎ বাবুর লজ্জা পায় কংগ্রেস নেতা হিসেবে। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এম.ডি.সি তথা প্রদেশ বিজেপির সহ-সভাপতি বিমল কান্তি চাকমা এবং প্রদেশ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিপিন দেববর্মা।

