স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা। ২২ অক্টোবর : খবরের জেরে যখন গোটা রাজ্য জুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে তখন পূর্ব আগরতলা মহিলা থানার পুলিশ নিজ দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হয়। বুথ সভাপতি শিবু সাহার হুমকিতে দীর্ঘ এক সপ্তাহ ধরে দুই নাবালিকা মেয়ে ঘর ছাড়া ছিল। অভিযোগ, বুথ সভাপতির মদত দিয়েছে বিবেকানন্দ আবাসনের কিছু মহিলা। দেখুন নাবালিকা মেয়ের পরিবারের অভিযোগের সাথে কতটা ফারাক বুথ সভাপতির অনুগামীদের। অভিযোগ, রাজধানীর স্বামী বিবেকানন্দ আবাসনের মধ্যে বসবাসরত এক রিকশা চালকের পরিবারের উপর দুর্গাপূজার চাঁদা চাপিয়ে দিয়েছিল স্থানীয় পূজা উদ্যোক্তারা। জোর জুলুম করে চাঁদা আদায় করতে না পারায় শাসকদলের ১ নং বুথ সভাপতি শিবু সাহা রিক্সা চালকের পরিবারের উপর আক্রমণ চালায়। ঘরে থাকা দুই নাবালিকা কন্যাকে শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ।
পরবর্তী সময় বিষয়টি নিয়ে গত তিন অক্টোবর পূর্ব আগরতলা মহিলা থানায় অভিযোগ জানানোর পরেও পুলিশ শাসক দলের কাঠ পুতুলের ভূমিকা পালন করে চলেছে। অভিযোগ সত্য কিনা মিথ্যা সেটা তদন্তে বের হয়ে আসবে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো পুলিশ অভিযুক্ত বিজেপি নেতাকে একবারের জন্য থানায় ডেকে আনেনি। এমনকি পরবর্তী সময় অভিযুক্ত বুথ সভাপতি দুই নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণের হুমকি পর্যন্ত দেয়। কিন্তু তারপরেও অসহায় পরিবার থানা থেকে অভিযোগ না তোলায় প্রাননাশের হুমকি দিয়ে চলেছে অভিযুক্ত বুথ সভাপতি। এমনকি এই হুমকিতে নাবালিকা এক মেয়ে ঘর ছাড়া হয়ে আছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে মেয়েটির পরীক্ষা শুরু হতে চলেছে। কিন্তু বুথ সভাপতি ভয়ে ঘরে ফিরতে পারছে না। মঙ্গলবার প্রদেশ মহিলা কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল পূর্ব মহিলা থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে জানতে চায় কেন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করছে না? তারপর খবর প্রকাশের পর মাঠে নামে পুলিশ। বুধবার নাবালিকা দুই মেয়েটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে আবাসনে। এমনকি বুধবার আবাসনে আসবে জানতে পেরে আগে থেকেই তালা খুলে রেখেছিল বুথ সভাপতি ভক্তরা। এমনটাই জানিয়েছেন নাবালিকা মেয়ের মা। এদিন আক্রান্ত পরিবার আবাসনে ফিরে আসার পর বিক্ষোভ দেখায় বুথ সভাপতি অনুগামীরা।এদিকে স্থানীয় মহিলাদের দাবি বুথ সভাপতি নাবালিকা মেয়েকে থাপ্পড় দিতে চেয়েছিল। কিন্তু গায়ে লাগেনি। মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে পরিবারের পক্ষ থেকে।
আরো বলেন, সেদিন গালিগালাজ না করার জন্য তারা বলতে গিয়েছিলেন, তখন দুই নাবালিকার বাবা ঘরে তালা দিয়ে পরিবার নিয়ে বের হয়ে যায়। আবাসনের এক মহিলা জানিয়েছেন আবাসনে থাকতে গেলে শান্তভাবে থাকতে হবে। নাহলে আবাসনে থাকতে দেবে না। আক্রান্ত পরিবারের গৃহকর্তার বক্তব্য, উনাকে যে অভিযুক্তরা মারধর করেছে সেটা ডাক্তারের কাছ থেকে মেডিকেল করলে ষ্পষ্ট হয়ে যাবে। তবে এ বিষয় নিয়ে পুলিশের তদন্ত কতটা এগিয়েছে সেটা এখনো জানা যায়নি। কিন্তু পুলিশ চাইলে পারে অভিযুক্ত বুথ সভাপতিকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য। কিন্তু গত তিন অক্টোবর অভিযোগ জমা পরার পর কেন এখন পর্যন্ত পুলিশ বুথ সভাপতিকে থানায় নিয়ে সঠিক তদন্ত করতে পিছুপা হচ্ছে সেটাই বলা মুশকিল হয়ে উঠেছে। তবে সুশাসন জামানায় মানুষ এতটা আশা করে থানায় গেলে বিচার মিলবে। কিন্তু পরিবর্তে পুলিশ ধাপা চাপা দিতে আদালতে উপরে চলে গেছে, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না এই ঘটনার পর।

