স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা। ৭ অক্টোবর :মানুষ অত্যন্ত অসহায় হয়ে হাসপাতালে আসে। তাই চিকিৎসকরা যাতে রোগীদের সাথে এবং রোগীর পরিবারের সাথে ভালো ব্যবহার করেন। বিভিন্ন সময় চিকিৎসকদের দ্বারা আয়োজিত অনুষ্ঠানে পরামর্শ দিয়ে থাকেন রাজ্যের চিকিৎসক মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী এই বার্তা কতটা গ্রহণ করছেন নব্য চিকিৎসকরা সেটা বারবারই ক্যামেরায় ধরা পড়ছে। এর জন্য চিকিৎসক মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্যের হাসপাতাল গুলির মধ্যে গিয়ে মানুষ চোখ দিয়ে জল ঝরাচ্ছে। এমনটাই প্রকাশ্যে আসলো মঙ্গলবার। কোলের শিশুকে নিয়ে রানির বাজার হাসপাতালে গিয়েছিলেন এক গৃহবধূ।
দীর্ঘ দেড় থেকে দু’ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর চিকিৎসক না আসায়, চিকিৎসকের সঙ্গে থাকা সহযোগী ডেকে জিজ্ঞাসা করেন কখন আসবেন চিকিৎসক? আর এই প্রশ্নে তেলে বেগুনের জ্বলে উঠলেন চিকিৎসকের সঙ্গে থাকা মাতব্বর সহযোগী। তিনি মহিলাকে প্রশ্ন করেন, তিনি কে জানেন কিনা? কিছুক্ষণ পর মহিলা চিকিৎসক হাসপাতালে এসে দরজা বন্ধ করে আগে পুলিশকে ফোন করে বলেন পুলিশ যাতে এখনই এসে কিছু রোগীদের ধরে নিয়ে যায়! পাশাপাশি মহিলা চিকিৎসক রোগী দেখবেন না। বিষয়টি ক্যামেরাবন্দি হয়েছে সেটা ভালো করে টের পেয়ে গেছেন মহিলার চিকিৎসক। এরই মধ্যে ছুটে আসে পুলিশ। পুলিশ এসে মহিলা চিকিৎসককে জানান তিনি যাতে রোগী দেখেন। কিন্তু মহিলা চিকিৎসকের বক্তব্য আগে মোবাইল থেকে ভিডিও মুছতে হবে।
না হলে তিনি রোগী দেখবেন না। অপরদিকে অপর এক ব্যক্তি জানান তিনিও তার বৃদ্ধ মাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। দীর্ঘ পৌনে এক ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। বিষয়টি নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানিয়ে দেন জিবি হাসপাতালে যাওয়ার জন্য। এমন দুর্ব্যবহারে যেন মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো রোগীদের। তারপর ধীরে ধীরে রোগীরা চোখের জল ফেলে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে বললেন রোগী মরে গেলেও রাণীর বাজার হাসপাতালে আর আসবে না। আবার কেউ কেউ বলেন, তাদের রোগীর যদি কোন কিছু হয় তাহলে এর দায়ভার কি নেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ? এমন দৃশ্য দেখে এ কেমন স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রশ্ন উঠেছে প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে। যেখানে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে সরকার উন্নয়নের বুলি চড়িয়ে যাচ্ছে সেখানে সাধারণ পরিষেবা পর্যন্ত পায় না রোগীরা। স্বাস্থ্য দপ্তরের মন্ত্রী খোদ মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর চেষ্টা থাকলেও মাথা ভারী স্বাস্থ্য আধিকারিকদের জন্য রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে এমন দুর্দশা। পরিষেবা নামমাত্রও নেই।

