স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৫ নভেম্বর : সারা দেশের মানুষ গত কয়েকদিনে জেনেছে ত্রিপুরাকে বদনাম করার জন্য একটা চক্র রাজনৈতিক ভাবে বর্তমান সরকারকে চক্রান্ত করে ফেলে বহিরাগত একটা দল ক্ষমতা দখল করতে চাইছে। ত্রিপুরার জাতি উপজাতির মেল বন্ধনকে নষ্ট করার জন্য বহিঃগতরা চক্রান্ত করছে। যা রাজ্যবাসীর জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। সোমবার মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী।
তিনি আরও বলেন দুইদিন পূর্বে মহারাষ্ট্রের অমরাবতীতে সংখ্যা লঘু অংশের মানুষ রাস্তায় নেমেছে। ত্রিপুরায় দাঙ্গা চলছে, সংখ্যা লঘুদের উপর অত্যাচার চলছে এই অভিযোগ তুলে তার প্রতিবাদে তারা রাস্তায় নেমেছে। রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলন করে স্পষ্ট জানিয়েছেন ত্রিপুরা রাজ্যে এমন ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। রাজ্যে শান্তি বিরাজ করছে। ১১ নভেম্বর বহিঃরাজ্যের দুইজন সাংবাদিক সমৃদ্ধি সাকুনিয়া ও স্বর্ণা ঝা রাজ্যে আসে। ঊনকোটি জেলায় তারা যায়। সেখানে গিয়ে সংখ্যা লঘু অংশের মানুষের মধ্যে তারা উস্কানি মূলক কথা বলে। যে ঘটনা রাজ্যে ঘটেনি সেই ঘটনা রাজ্যে ঘটেছে বলে সমৃদ্ধি সাকুনিয়া টুইট করে। সেখানে লাগিয়ে দেওয়া হয় বহিঃরাজ্যের একটি ছবি। স্বাভাবিক ভাবেই সমগ্র দেশের মানুষ ভাবছে ত্রিপুরা সরকার সংখ্যা লঘুদের উপর অত্যাচার করছে। যার প্রতিফলন মহারাষ্ট্রের সংখ্যা লঘু অংশের মানুষ রাস্তায় নেমেছে। সত্যের সাথে যার কোন যোগাযোগ নেই।
মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী এইদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে জানান ঊনকোটি জেলার ফটিকরায় থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। সেখানে গিয়ে স্বাভাবিক পরিবেশকে নষ্ট করার চক্রান্ত করছিল সমৃদ্ধি সাকুনিয়া ও স্বর্ণা ঝা। স্বাভাবিক ভাবেই ফটিকরায় থানায় মামলা দায়ের হয়। অনুরুপ ভাবে কাঁকড়াবন থানায়ও একটি মামলা দায়ের হয় তাদের বিরুদ্ধে। ফটিকরায় থানায় মামলা দায়ের হওয়ার পর পুলিশের পক্ষ থেকে তাদেরকে ডাকা হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। তারা সেখানে পুলিশকে কোন ধরনের সহযোগিতা করতে চায়নি। তারা পুলিশকে জানায় তারা বিমানে করে রাজ্য ত্যাগ করছে। কিন্তু তখন পুলিশ জনাতে পারে যে তারা উত্তর ত্রিপুরা জেলা হয়ে চুরাইবাড়ি দিয়ে রাজ্য ত্যাগ করছে। সেই মোতাবেক রাজ্য পুলিশ নিলামবাজার থানার পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে। নিলাম বাজার থানার পুলিশ তাদেরকে আটক করে রাজ্য পুলিশের হাতে হস্তান্তর করে। সোমবার তাদেরকে গোমতী জেলার জেলা ও দায়রা আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত শর্ত সাপেক্ষে তাদের জামিন মঞ্জুর করে। মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী এইদিন প্রশ্ন তোলেন সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া সমৃদ্ধি সাকুনিয়া ও স্বর্ণা ঝার উদ্দেশ্য কি ছিল। তারা কোন রাজনৈতিক দলের হয়ে রাজ্যে এসেছে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
তৃনমূল কংগ্রেস সুপ্রিম কোর্টের একটা রায়কে নিয়ে লাফালাফি করছে। তৃনমূল কংগ্রেস সুপ্রিমকোর্টে মিথ্যা হলফনামা দিয়েছে। সেই মিথ্যা হলফনামার উপর ভিত্তি করেই সুপ্রিমকোর্ট রাজ্যের পুর নির্বাচন নিয়ে নির্দেশ দিয়েছে। ৩০ অক্টোবর তৃনমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে স্পেশাল শুনানির আর্জি জানানো হয়। সেই মোতাবেক তাদের আর্জি অনুযায়ী স্পেশাল শুনানি হয়। শুনানি শেষে উচ্চ আদালতের নির্দেশ মোতাবেক শর্তসাপেক্ষে রাজধানীর রবীন্দ্রভবন প্রাঙ্গণে সভা করে তৃনমূল কংগ্রেস। সুপ্রিমকোর্টে তৃনমূল কংগ্রেস যে হলফনামা পেশ করেছে সেখানে তারা বলেছে ত্রিপুরা হাইকোর্টে ৩০ অক্টোবর শুনানির জন্য আর্জি জানিয়েছিল। কিন্তু ত্রিপুরা হাইকোর্ট শুনানি করেনি। সোমবার ত্রিপুরা হাইকোর্ট তৃণমূল কংগ্রেসকে বলেছে কেন তারা সুপ্রিমকোর্টে মিথ্যা হলফনামা দিয়েছে তা যেন অবিলম্বে সুপ্রিমকোর্টে হলফনামা দিয়ে জানায়। উচ্চ আদালতের নির্দেশে এইদিন প্রামিত সত্যের জয় হবেই। এখন দেখার তৃনমূল কংগ্রেস সুপ্রিমকোর্টকে কি হলফনামা দেয়। সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটা জানান মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। যারা সুপ্রিমকোর্টে মিথ্যা হলফনামা দেয় রাজনৈতিক লাভালাভের জন্য, তাদের কাছ থেকে জনগণ কি আশা করবে। এই নিয়েও এইদিন প্রশ্ন তোলেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। তিনি এইদিন বহিরাগত তৃনমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বদের তিব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন বহিরাগতরা রাজ্যের জাতি উপজাতিদের মধ্যে অস্থির বাতাবরণের সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চেষ্টা করছে।